আমিনুল জুয়েল:[২] বয়োবৃদ্ধ আব্দুস সাত্তার ফকির (৭৪)। এক ছেলে ও চার মেয়ের জনক তিনি। পেশায় দিন মজুর। বয়সের ভারে নুয়ে পরেছেন। বয়স হওয়ায় প্রায় দেড় বছর আগে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারের সহযোগীতায় বয়স্ক ভাতার কার্ড করেন। এরপর ৪ (বার) দফা বয়স্ক ভাতার টাকাও পেয়েছেন তিনি।
[৩] কিন্তু গত ৭ মাস থেকে তিনি আর কোন ভাতা পাননি। হঠাৎ ভাতার টাকা পাওয়া বন্ধ হয় তাঁর। পরে জানতে পারেন, তাঁকে ভোটার তালিকায় মৃত দেখানো হয়েছে। ফলে বয়স্ক ভাতা বন্ধ হয় তাঁর। সেইসাথে মহামারী করোনা সংক্রমণের টিকাও গ্রহণ করতে পারেননি তিনি। এতে মানষিক ও আর্থিকভাবে ভেঙ্গে পরেছেন বয়োবৃদ্ধ আব্দুস সাত্তার।
[৪] ভুক্তভোগী আব্দুস সাত্তার বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের মৃত লিলচাঁন ফকিরের ছেলে।জানা গেছে, প্রায় দেড় বছর আগে স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেন বৃদ্ধ সাত্তারকে। এরপর তিনি চার দফায় ভাতার টাকাও পেয়েছেন। কিন্তু গত ৭ মাস ধরে তিনি আর কোন টাকা পান নি।
[৫] ভেবেছিলেন, সরকার হয়তো ভাতা দেওয়া বন্ধ করেছে। পরে তিনি বিষয়টি যাচাই করতে তিনি বিভিন্ন অফিসে ধর্ণা দেন। প্রথমে ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এবং পরে সমাজ সেবা দপ্তরে খোঁজ নেন তিনি। কিন্তু কোথাও প্রশ্নের জবাব খুঁজে পাননি।
[৬] সবশেষে উপজেলা নির্বাচন অফিসে যান বৃদ্ধ সাত্তার। সেখানে তাঁকে জানানো হয়, ভোটার হালনাগাদ তালিকায় ‘মৃত’ দেখানো হয়েছে তাঁকে। তবে, বেঁচে থেকেও কীভাবে ‘মৃত’ হলেন; এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য বা ব্যাখ্যা দেয়নি উপজেলা নির্বাচন কমিশন।
[৭] আক্ষেপ করে ওই বৃদ্ধ বলেন, ভোটার হালনাগাদ তালিকায় মৃত দেখানোর ফলে ভাতা নেয়া থেকে বঞ্চিত হলাম। অন্যদিকে, এই সমস্যার জন্য নিতে পারিনি করোনার টিকা। ফলে মানষিক ও আর্থিকভাবে অনেকটাই ভেঙ্গে পড়েছি।
[৮] ছাতিয়ানগ্রাম ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, জীবিত আব্দুস সাত্তারকে মৃত দেখানোর বিষয়টি আমার জানা নেই। বয়স্ক ভাতা আবার চালু করতে তাঁকে সহযোগীতা করা হবে।
[৯] এব্যাপারে উপজেলা নির্বাচন অফিসার আব্দুর রশিদ বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমরা আব্দুস সাত্তার ফকিরকে লিখিতভাবে একটি আবেদন দিতে বলেছি। আবেদনের প্রেক্ষিতে পর কমিশন ব্যবস্থা নেবে। তবে, আব্দুস সাত্তারের নাম ভোটার তালিকায় সংযুক্ত করতে কিছুটা সময় লাগবে।সম্পাদনা:অনন্যা আফরিন