শিরোনাম
◈ ওড়না কেড়ে নিয়ে পুরুষ কর্মকর্তাদের উল্লাস, নারী বন্দিদের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা ◈ রেকর্ড উৎপাদনের সুফল কোথায়? চালের বাজারের চালকের আসনে কারা? ◈ পবিত্র আশুরা আজ ◈ তরুণ ক্রিকেটার তানভীরের ফাইফারে সিরিজ সমতায় বাংলাদেশ ◈ 'শিক্ষা ও স্বাস্থ্য দখল করেছে জামায়াত': গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ◈ ১৪ হাজার কোটি রুপি কেলেঙ্কারি, যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার ভারতের নেহাল মোদি (ভিডিও) ◈ মোবাইল চুরির অভিযোগকে কেন্দ্র করে গ্রাম্য সালিস থেকে রক্তাক্ত ট্র্যাজেডি ◈ জাতীয় নির্বাচনে বাধা দেওয়ার শক্তি কারো নেই: কেরানীগঞ্জে বিএনপি সমাবেশে সালাহ উদ্দিন আহমদের হুঁশিয়ারি ◈ তুর্কমেনিস্তানকে কাঁ‌পি‌য়ে দি‌লো বাংলা‌দেশ, এশিয়ান কাপে যাচ্ছে ঋতুপর্ণারা ◈ চী‌নে জু‌নিয়র হ‌কি‌তে একদিনে বাংলাদেশ পুরুষ ও নারী দ‌লের জয়

প্রকাশিত : ০৪ মে, ২০২১, ০৪:০৮ সকাল
আপডেট : ০৪ মে, ২০২১, ০৫:৫৩ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পানির নিচে যুদ্ধ করে বাঁচালেন বিশজনের প্রাণ: পেলেন ৬০ হাজার চিঠি

ডেস্ক রিপোর্ট : সাভারস কারাপেথিয়ান একজন আর্মেনিয়ান অলিম্পিক সাতারু চ্যাম্পিয়ান। ১৯৭৬ সালে ভাইয়ের সাথে বিশ কিলোমিটার দৌড় সবে মাত্র শেষ করেছেন। এমন সময় দেখেন লম্বা একটা ট্রলি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গভীর জলাধারে পতিত হয়েছে।

সাভারস সাথে সাথে পানিতে ঝাপ দিয়ে প্রায় আশি ফুট নীচে তলিয়ে যাওয়া বাসটির কাছে যান এবং গভীর পানির নীচে জিরো ভিজিবিলিটি থাকা সত্ত্বেও ক্রমাগত পায়ের আঘাতে বাসের পেছনের জানালা ভাঙতে সক্ষম হন। সেই ভাঙ্গা জানালা দিয়ে একজনকে বের করে নিয়ে এসে তীরে পৌঁছান। আবার সাঁতরে গিয়ে আরেকজনকে বের করে নিয়ে আসেন। এভাবে টানা সাড়ে পাঁচ ঘন্টা প্রচেষ্টায় প্রায় বিশ জন মানুষের জীবন বাঁচাতে সক্ষম হন।

অতিরিক্ত ঠান্ডায় আর একটানা পানির নীচে থাকার কারণে নিউমোনিয়া, ফুসফুসের প্রদাহ, লাণ্জ ডেমেজ সহ শরীরে নানা জটিলতা তৈরি হয়। হাসপাতালে কাটাতে হয় একটানা ৪৫ দিন। সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরলেও তার অলিম্পিক জীবনের ইতি ঘটে। সাভারসের এতে কোনো আফসোস নেই। তিনি বলেন- অলিম্পিক গোল্ডের চেয়ে বিশজন মানুষের জীবনের মূল্য অনেক বেশি।
একজন সাতারু অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করলো কি করলো না এটা কোনো বড় খবর না। কত সাতারু, কত ক্রিড়াবিদরাতো শুধু খেলার মাঠ থেকে না জীবন থেকেই হারিয়ে যায়। কে কার খবর রাখে। ফলে, সাভারসও ইতিহাস থেকে একেবারে নীরবেই হারিয়ে যান। এরপর কেটে গেছে প্রায় ছয় বছর ।

সাভারস যে বিশজন মানুষের জীবন বাঁচিয়েছিলেন তাদেরই একজন রাশিয়ার বিখ্যাত প্রাভদা পত্রিকায় কাজে যোগ দিয়ে তার জীবন ফিরে পাওয়ার ঘটনাটি পত্রিকা অফিসে গল্পচ্ছলে শেয়ার করলে- পত্রিকার সম্পাদক এটা নিয়ে একটা ফিচার তৈরি করতে বলেন। ১৯৮২ সালের অক্টোবর মাসের ১২ তারিখ সেই ফিচারটি প্রকাশিত হয়। যার শিরোণাম ছিলো- The Underwater Battle of the Champion"
সাভারসের নাম এবার রাশিয়া থেকে আর্মেনিয়ার ঘরে ঘরে পৌঁছে যায়। ছোট, বড়, যুবক, বৃদ্ধ নানা জনের কাছ থেকে প্রায় ৬০ হাজার চিঠি তাঁর কাছে আসে।

সাভারস বলেন একেকটা চিঠি যেন অলিম্পিকের একেকটা গোল্ড মেডেলের চেয়েও মূল্যবান। কিন্তু আমি গোল্ড মেডেলও চাইনি, মানুষের এমন ভালোবাসা পাবো তাও ভাবিনি। আমার সামনে কি ঘটবে বা না ঘটবে তাও চিন্তা করিনি। শুধু চেয়েছি যেভাবেই হোক ডুবে যাওয়া মানুষগুলোর জীবন যেন বাঁচে।

১৯৮৬ সালে তার বাড়ির পাশেই এক বিল্ডিং এ আগুনে ধরে। এবারও সেই রেসকিউয়ার সাভারস। কেউ দমকল বাহিনীর অপেক্ষা করছে। কেউ ভিড় করে দূর থেকে দেখছে। অসুস্থ সাভারস দ্রুত আগুনে পোড়া বিল্ডিং এ প্রবেশ করেন এবং শরীরে সমস্ত শক্তি নিঃশেষ করে মাটিতে মুর্ছা না যাওয়া পর্যন্ত ওয়ান ম্যান আর্মি হিসাবে তার উদ্ধার কাজ চালাতে থাকেন। আগুনে পোড়া শরীর নিয়ে তাকে আবারো হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়।

তাঁর জীবন কাহিনী নিয়ে ২০১২ সালে তাঁর তৈরি হয় ম্যুভি "সুইমার" । এক সত্যিকারের হিরো সাভারস কারাপেথিয়ান ৬৭ বছরে বয়সেও এখনো মানবতার সেবায় নিয়োজিত আছেন এবং গত সপ্তাহে জীবনে অর্জিত সমস্ত সম্পদ মানবতার সেবায় দান করে দিয়েছেন।

ভাবছি যেখানে কোনো কোনো মানুষ স্বার্থ ছাড়া আর কিছুই বুঝেনা। জীবনে যা পায় তা কব্জা করে নিতে চায়। সেখানে সাভারস কারাপেথিয়ানদের মতো মহান মানুষেরা আছে যারা জীবন এবং ধন দুটোই মানুষের জন্য বিলিয়ে দিয়ে যায় ।
এই মহান মানুষটি সম্পর্কে আমি আজই জানলাম আর ভাবলাম- এমন একজন মহৎ মানুষ সম্পর্কে জানা দরকার। তাই শেয়ার করলাম।
মানবতাবাদী হিরো সাভারস কারাপেথিয়ান আপনার জন্য হৃদয়ের গভীর থেকে শ্রদ্ধা।

"পানির নীচে একজন চ্যাম্পিয়নের অন্যরকমের যুদ্ধ "

সাভারস কারাপেথিয়ান একজন আর্মেনিয়ান অলিম্পিক সাতারু চ্যাম্পিয়ান। ১৯৭৬...

Posted by Arif Mahmud on Saturday, May 1, 2021

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়