মো.আদনান হোসেন : [২] করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ থাকলেও ধামরাইয়ের একটি বিদ্যালয়ে সামাজিক দূরত্ব না মেনে মাস্ক না পরে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে বসিয়ে কোচিং বাণিজ্য চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
[৩] সোমবার (২৬ এপ্রিল) সকাল ৮টার দিকে উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ কাটাবই এলাকার কাটাবই বি- এস ক্যাডেট স্কুল এ ঘটনা দেখা গেছে।
[৪] সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ধামরাই উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ কাটাবই ওই এলাকার কাটাবই বি- এস ক্যাডেট স্কুলের ক্লাস রুমে শিক্ষার্থীদের সামাজিক দূরত্ব অমান্য করে প্রাইভেট পড়ানো হচ্ছে। এসময় শিক্ষার্থীদের মুখে মাস্কও দেখা যায়নি।
[৫] সাংবাদিক দেখে নিপা আক্তার ও আরিফ নামের দুই শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পড়ানো বাদ দিয়ে কৌশলে স্কুল থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এসব শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোচিং ও প্রাইভেট পড়ানোর নাম করে জন প্রতি এক থেকে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত নিচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
[৬] এমনকি স্কুল বন্ধ থাকার পরও এক হাজার করে বেতন নিচ্ছে এসব স্কুল কর্তৃপক্ষ। এসব ক্যাডেট স্কুলের শিক্ষার মান নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন। এসব স্কুলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জন্য নেই কোন খেলার মাঠ,নেই কোন খেলার সরঞ্জাম। শুধু অর্থের লোভেই এসব ক্যাডেট স্কুলের নাম করে শিক্ষা বানিজ্য করছে এসব প্রতিষ্ঠানের মালিকরা।
[৭] ৬ষ্ঠ শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর বাবা মজিবুর রহমান জানান, স্কুল কলেজ বন্ধ থাকার কারণে বাড়িতে ছেলে মেয়ে পড়াশোনা বাদ দিয়ে দিছে। স্কুলের স্যাররা কোচিং করাচ্ছে এর জন্য প্রতি মাসে ৬০০ করে টাকা দিচ্ছি। কিন্তু স্কুল কলেজ তো বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। তার পরও কাটাবই বি- এস ক্যাডেট স্কুল সব ছাত্র- ছত্রীদের কাছ থেকে বেতন নিচ্ছে। আমরাও কোনো উপায় না পেয়ে সন্তানের শিক্ষার কথা ভেবে টাকা দিয়ে যাচ্ছি।
[৮] অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার জানান, আমি অন্য একটি স্কুলে পড়াশোনা করি। তাই আমার কোচিং ফি এক হাজার টাকা। যদি এই স্কুলে পড়াশোনা করতাম তা হলে ৬০০ টাকা এবং ১ হাজার করে স্কুলের বেতন দিতে হতো।
[৯] স্থানীয় আরো অনেকে জানান, করোনার কারণে স্কুল কলেজ সব বন্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। কিন্তু তার পরও এই স্কুলের শ্রেণিকক্ষে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ায়। কোন সামাজিক দূরত্ব মানে না। কোন ছাত্র-ছাত্রীর মুখে মাস্কও থাকে না। এমন কি স্কুলের শিক্ষকের মুখেও মাস্ক থাকে না। এ স্কুলের পড়াশোনার মানও তেমন ভালো না।
[১০] এবিষয়ে কাটাবই বি- এস ক্যাডেট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান শিক্ষক মনির হোসেন সাংবাদিক কে বলেন, আমার স্কুলে আমার শিক্ষার্থীদের ক্লাস করাচ্ছি আপনার এতে সমস্যা কি?
[১১] ধামরাই উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার তাজমুননাহার জানান, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে যদি কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্লাসে পড়াশোনা চালিয়ে থাকেন তা হলে সেই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ
আপনার মতামত লিখুন :