গোলাম সারোয়ার: [২] চলতি বছর ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় হাওর থেকে দেশের বহত্তম ধান-চাউলের মোকাম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ মোকামে নতুন ধান ইতোমধ্যে আসতে শুরু করেছে। দেশের বৃহৎ ধানের মোকাম আশুগঞ্জে প্রচুর পরিমাণ নতুন ধান আমদানী হলেও নতুন প্রতি মণ ধান ৮’শ থেতে সাড়ে ৮’শ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
[৩] এদিকে, আশুগঞ্জে নতুন ধানের প্রতিমণ মৃল্য ৮’শ থেতে সাড়ে ৮’শ টাকায় বিক্রি হওয়ায় ধান কিনে চাউল উৎপাদন করে চাতাল ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেণ বলে হতাশা ব্যক্ত করেন।
[৪] দেশের অন্যতম বন্দরনগরী আশুগঞ্জ ধানের বাজার প্রাচীনকাল থেকেই দেশের অন্যতম বৃহৎ ধানের মোকাম হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। দেশের চাউলে চাহিদার একটা বিশাল অংশ আশুগঞ্জে উৎপাদিত চাউল দিয়ে পুরন করা হয় বলে এখানকার চাতাল ব্যবসায়ীরা দাবী করেন। ধানের এ মোকামটি মূলত হাওর অঞ্চল নির্ভর। প্রতি বছর এ সময়ে প্রতিদিন হাওর অঞ্চলের কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, সিলেট মৌলভী বাজার, হবিগঞ্জ ও ব্রাক্ষণবাড়িয়া থেকে নদী পথে এ মোকামে হাজার হাজার মণ ধান আমদানি হয়।
[৫] আশুগঞ্জে চাতাল ব্যবসায়ীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকার ও ব্যাপারীরা এ মোকামে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার ধান কেনা-বেচা করে থাকে। হাওর থেকে ধান কিনে এনে এখন বিক্রি করতে কৃষক,ব্যবসায়ীরা নতুন ধানের ন্যায্য মূল্য পেয়ে খুশি।
[৬] কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলার কৃষক হোসেন আলী বলেন, কৃষকরা অনেক দিন পর ধানের ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে এইবার। ধানের ন্যায্য মূল্য পেয়ে কৃষকরা খুশি। তিনি আরো বলেন, সরকার কৃষকের উৎপাদিত পন্যের মূল্য সব সময় কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পায় সরকার যেন এই ব্যাপারে একটা নীতিমালা করে দেয়। যাতে কৃষকদের ক্ষতি না হয়। মূলত কৃষক হচ্ছে দেশের প্রাণ।এই কৃষক যদি তাদের উৎপাদিত পন্যের ন্যায্য মূল্য পায় তবে কৃষক উৎসাহিত হবে।
[৭] এ বিষয়ে আশুগঞ্জে আজ চাতালকল মালিক কামরুল হাসান রবিন বলেন, বর্তমানে আশুগঞ্জের মোকামে ৮’শ থেকে ৯’শ টাকায় প্রতি মণ নতুন ধান বিক্রি হচ্ছে। এই অবস্থায় চাতাল মিল মালিকরা ধান কিনে চাউল উৎপাদন করে লোকসান দিতে হচ্ছে।
[৮] এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ ধান ব্যবসায়ী মালিক সমিতির নেতা হাজী মাহবুবুর রহমান বলেন, আশুগঞ্জ মোকামে নতুন প্রতি মণ ধান ৮’শ থেকে ৯’শ টাকায় প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে।এদামে ধান কিনে মিল মালিকদের লোকসান দিতে হচ্ছে। কারণ নতুন ধান বাজারে আসায় প্রতি মণ চাউলের মূল্য প্রতিদিন ১’শ টাকা কমে আসছে। কখন এই চাউলের মূল্য স্থিতিশীল হবে আমরা তা জানি না। কাজেই সরকারের উচিত হবে ধানের একট মূল্য বেধে দেওয়া।
[৯] শিপন মিয়া নামে একজন মিল মালিক বলেন, নতুন ধানের দাম বেশি হওয়ার অন্যতম কারণ কৃষকরা নতুন ধান এখন বিক্রি করতে চাচ্ছে না।ফলে অন্যান্য বছর এই সময়ে প্রতিদিন ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ মণ ধন আশুগঞ্জ মোকামে আসত। সেখানে এই বছর ৫০ থেকে ৬০ হাজার মণ ধান এসেছে। এই অবস্থায় আশুগঞ্জে ধানের মোকামের চাতাল কল মালিকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই সরকার যেন দ্রুত ধানের একটা গ্রহণযোগ্য মূল্য বেধে দেয়। সম্পাদনা: হ্যাপি