টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: [২] টাঙ্গাইলের বাসাইলে এক নিরীহ পরিবারের ভিটেবাড়ি কেটে জোরপূর্বক রাস্তা তৈরি ও ঘরে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মামলার এক সপ্তাহ পার হলেও এখনও অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার হাবলা ইউনিয়নের ঘোষাখালী গ্রামে।
[৩] মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাসাইল থানার এসআই নজরুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘রাস্তা তৈরি ও ঘরে আগুন দেওযার বিষয়ে ৬জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’
[৪] পেশি শক্তির জোরে গত ২৬ মার্চ বিশু মিয়ার ভিটেবাড়ি ভেকু দিয়ে কেটে অভিযুক্তরা জোরপূর্বক রাস্তা তৈরি করে।
[৫] এসময় বিশুর স্ত্রী সাজেদা বেগম বাধা দিতে গেলে তাকে মারধরের হুমকি দেয় তারা। এক পর্যায়ে সেখানে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ওইদিন গভীর রাতে বিশুর দোচালা টিনের ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয় অভিযুক্তরা। আগুন নেভানোর আগেই ঘরটিতে থাকা মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
[৬] এঘটনায় গত ২ এপ্রিল বিশুর স্ত্রী সাজেদা বেগম বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেন। এদিকে মামলা তুলে নিতে নিরীহ এই পরিবারটিকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে পরিবারটির দাবি। বিষয়টি নিয়ে নিরীহ পরিবারটি চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
[৭] সম্প্রতি সরেজমিনে গেলে সেখানে কথা হয় বিশুর স্ত্রী সাজেদা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমার বাড়ির পশ্চিমপাশে কোনও রাস্তা নেই। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে শাহিন মিয়া, খাইরুল আলম, রাসেল, শহিদ, শফি ও সেলিসহ কয়েকজনে মিলে জোরপূর্বক রাস্তা তৈরির পায়তারা করে আসছিল। আমার স্বামী বিশু মিয়া কাতার প্রবাসী। বাড়িতে আমার বৃদ্ধা শাশুড়ি, মানসিক ভারসাম্যহীন এক ভাসুর ও দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে বসবাস করে আসছি।।
[৮] এ সুযোগে এক পর্যায়ে গত ২৬ মার্চ রাতের আধারে জোরপূর্বক আমার ভিটেবাড়ি ভেকু দিয়ে কেটে রাস্তা তৈরি করেছে। ৫-৬ফিট পাশে প্রায় ৭০ ফিটের মতো লম্বা করে ভিটেবাড়ির পশ্চিমপাশ দিয়ে কেটে ফেলা হয়েছে। পরে ওইদিন রাতে তারা আমার দোচালা টিনের ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয় এসময় আমার ঘরে থাকা অনেক মালামাল পুড়ে যায়। এ ঘটনায় ৬জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার করে শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
[৯] অভিযুক্ত শাহিন মিয়া বলেন, ‘বিশুদের বাড়ির পাশ দিয়ে পুরনো রাস্তা রয়েছে। রাস্তাটি বর্ষায় ভেঙে গেছে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় মেম্বার রাস্তাটি পরিদর্শন করেছেন। পরে ভেকু দিয়ে কেটে রাস্তা বের করা হয়েছে। রাস্তা বের করার সময় তাদেরও জমি পড়েছে এটা অস্বীকারের কিছু নেই। এসময় কয়েকটি গাছ কাটা হয়। তবে তাদের ঘরে আগুন লাগানো হয়নি।’
[১০] হাবলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম বলেন, ‘এলাকাটি বাসাইল ও মির্জাপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী। এক সময় ঘোষাখালী এলাকায় বিশুর বাড়ির পাশদিয়ে গ্রামবাসীর পায়ে হাঁটার রাস্তা ছিল। পরে দুই বছর আগে ৪০ দিনের কর্মসূচির মাধ্যমে মির্জাপুরের মহেড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সমন্বয়ে রাস্তাটি সংস্কার করা হয়। ওই সময় এলাকার মানুষের স্বার্থে কাজটি করা হয়। বন্যায় রাস্তাটি ভেঙে যাওয়ায় এলাকার লোকজন সম্প্রতি আবার ভরাট করছে।সম্পাদনা:অনন্যা আফরিন