ডা. মহসীন কবির: চায়ের বিভিন্ন ওষুধি গুনতো রয়েছেই। চায়ে পাওয়া যায় ফ্ল্যাভোনয়েড নামক উপাদান। এই ফ্ল্যাভোনয়েডের ভেতর থাকে বিপুল মাত্রায় এন্টি অক্সিডেন্ট এছাড়াও চায়ে রয়েছে পর্যাপ্ত পটাশিয়াম ও ক্যাফেইন। ক্লান্ত শরীরের অলসতা দুর করে শরীর ও মনকে চাঙা রাখতে এই পটাশিয়াম ও ক্যাফেইন এর তুলনা হয় না। অন্যদিকে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আমাদের হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। হেলথবিডি২৪
চায়ে রয়েছে প্রচুর পরিমান ক্যাফেইন,পটাশিয়াম ও এন্টি অক্সিডেন্ট। এগুলো সবই শরীরকে চাঙা রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও মজার তথ্য হলো ভারত উপমহাদেশে ব্রিটিস আমলে জনবহুল জায়গাগুলোতে ব্রিটিস সরকার চায়ের ওষুধি গুনের নানা বিজ্ঞাপন লিখে আমাদের চা খাওয়ার জন্য প্রচারনা চালাতো।
সকালে ঘুম থেকে উঠে শহুরে বেশীর ভাগ মানুষের প্রয়োজন পড়ে এক কাপ চা। সারাদিনে আমাদের অনেকেরই কয়েক কাপ চা পানের তৃষ্ণা জাগে মনে। বাইরে কাজের ফাকে অথবা অবসরে আমারা বেশী যে পানিয়টি খাই তা হলো চা। অনেকে আবার রুটিন মাফিক দিনে কয়েক কাপ চা খান। কাজে, মিটিংয়ে, আড্ডায় কিম্বা অপেক্ষায় চায়ের কাপে চুমুক দেয়া রীতিমত নেশার মতো।
ইংরেজরা ভারতীয়দের চা পান করার জন্য বিনা পয়সায় চা পান করাতো ও চায়ের বিজ্ঞাপন করতো। সেই সময়কার চায়ের বিজ্ঞাপনগুলোতে লিখা থাকতো চা পান করলে টাইফয়েড, কলেরা, বসন্ত আমাশয়সহ নানা রোগের প্রতিকার হয়। পরবর্তিতে গবেষণায় দেখা গেছে, চা পান করলে কলেরা-টাইফয়েড ভাল না হলেও এতে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায় ও দেহের কোষের ক্ষয় রোধ হয়। তবে আমরা যারা নিয়মিত চা খাই তাদের অবশ্যই জানা প্রয়োজন দুধ চায়ের চেয়ে লাল চা শরীরের জন্য বেশী কার্যকরী।
সম্প্রতি ইউরোপিয়ান হার্ট জার্নালে বলা হয়েছে- লাল চা পান করলে মানুষের রক্ত নালী ও ধমনির কার্যক্রম তাৎপর্যপূর্ণভাবে বৃদ্ধি পায় কিন্তু চায়ে দুধ মেশালে চায়ের সুফল অনেক কমে যায়। কারন রক্ত পরিবহনতন্ত্রের জন্য চায়ের উপকারিতার বিপরীতে কাজ করে এই দুধ।
অন্যদিকে দুধ চায়ে দুধের প্রোটিন চায়ের অ্যান্টি অক্সিডেন্টের সাথে মিশে যায় বলে চায়ের বেশীরভাগ ওষুধি গুন নষ্ট হয়ে যায়। তাই বলা যায় দুধ চা পান করার চেয়ে লাল চা পান করাই শরীরের জন্য বেশী ভালো। তাই যারা চা পান করে শরীরে ওষুধি উপকার পেতে চান তারা অবশ্যই দুধবিহীন চা বা লাল চা পান করুন সেইসাথে চাঙা শরীর ও মন নিয়ে সুস্থ থাকুন।
জনস্বাস্থ্য বিষয়ক লেখক ও গবেষক