নাঈমুল ইসলাম খান: [১] ইসলামী ঐক্যজোটের প্রয়াত নেতা ফজলুল হক আমিনী ২০০৪ সালে সাংবাদিক জুলহাস আলমকে বলেছিলেন যে, তাদের এক কোটি সৈন্য বড় হচ্ছে। তিনি জুলহাসকে বলেছিলেন অপেক্ষা করতে, ভবিষ্যৎ দেখার জন্য।
[২] ফজলুর হক আমীনীর এক কোটি সৈন্যের বয়স এখন ২৫-৩০ এর কোটায়। সেই ভবিষ্যৎ দেখার সময় এখন এসে গেছে।
[৩] এর অন্তর্বর্তী সময়ে আরও এক কোটি শিশু বা কিশোর সৈনিক নিশ্চয় বড় হচ্ছেন। তৈরি হচ্ছেন।
[৪] বাংলাদেশে কওমি মাদরাসার সংখ্যা ২২ হাজার। যেকোনো দিন এর মোট ছাত্র সংখ্যা ৩০ লাখ।
[৫] দেশে আলিয়া মাদরাসার সংখ্যা ৯ হাজার। এতে শিক্ষার্থী প্রায় ২১ লাখ ৪০ হাজার।
[৬] মাদরাসা শিক্ষিত এই বিপুল সংখ্যক নাগরিক অনেকখানি ক্যাডার সংগঠনের নেতাকর্মীর মতো নিবেদিত।
[৭] যথাযথ নেতৃত্বের কাছ থেকে ডাক আসলে তাদের একটা বড় অংশ নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়েও কর্মসূচিতে ঝাঁপিয়ে পড়তে সবসময় তৈরি। সারা দেশে প্রভাব সৃষ্টির সক্ষমতা তাদের রয়েছে। এই সক্ষমতা ক্রমাগত বাড়ছে।
[৮] বাংলাদেশে নামাজি ও ধর্ম পালনকারীর সংখ্যা দৃশ্যতই ব্যাপকভাবে বাড়ছে। বাড়ছে মুসল্লীদের সমবেত ও সংগঠিত হওয়ার কেন্দ্র, মসজিদের সংখ্যা।
[৯] দেশে নারী এবং শিক্ষিত নারীদের মধ্যেও নামাজ এবং হিজাবের আগ্রহ বাড়ছে, সেটাও দৃশ্যমান। তরুণদের মধ্যে ধর্মপ্রাণ এবং ধর্মপালনে আগ্রহ উল্লেখযোগ্যভাবে দৃশ্যমান হচ্ছে।
[১০] উপরোক্ত বাস্তবতার আলোকে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতি, গণতন্ত্র এবং সামাজিক বিকাশ কেমন হতে পারে সেটা গভীর বিচার বিশ্লেষণ ও গবেষণার দাবি রাখে।
[১১] আমাদের আবেগতাড়িত হয়ে পক্ষে বিপক্ষে অবস্থান এবং যেকোনো সাধারণ বিরোধ কখন যে অসাধারণ, অচিন্তনীয় পরিস্থিতিতে রূপান্তরিত হতে পারে আমরা তার স্পষ্ট ধারণা রাখি না।
[১২] ভারতে উগ্র সাম্পদায়িক শক্তির রাজত্ব এবং মিয়ানমার থেকে উদ্ভূত রোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে কী প্রভাব, তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে সেটা আমাদের স্পষ্ট জানা না থাকলেও, সেটা ধারণাতীত নয়।
[১৩] বাংলাদেশে জাতীয়ভাবে এই বিষয়ে পর্যাপ্ত বৈজ্ঞানিক তথ্যানুসন্ধান, ব্যাপক গবেষণা এবং সঙ্গে সঙ্গে জাতীয়ভিত্তিক আলোচনা ও সংলাপের প্রয়োজন।
অনুলেখক: ফাহমিদা তিশা
রচনার তারিখ: ১ এপ্রিল ২০২১