শিরোনাম
◈ সরকারি দপ্তরগুলোতে গাড়ি কেনা ও বিদেশ সফরে কড়াকড়ি: কৃচ্ছ্রনীতির অংশ হিসেবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা ◈ ২১ বছর বয়স হলেই স্টার্ট-আপ লোনের সুযোগ, সুদ মাত্র ৪%: বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা ◈ ঢাকায় একটি চায়না টাউন প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে: আশিক চৌধুরী ◈ তিন বোর্ডে বৃহস্পতিবারের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত ◈ এসএসসির ফল নিয়ে যে বার্তা দিলেন শিক্ষা উপদেষ্টা ◈ সৈক‌তের কা‌ছে দু:খ প্রকাশ ক‌রে‌ছেন ‌বি‌সি‌বির প্রধান নির্বাচক  ◈ ভারত সরকারকে আম উপহার পাঠাল বাংলাদেশ ◈ পুলিশের ঊর্ধ্বতন ১৬ কর্মকর্তা বদলি ◈ কল রেকর্ড ট্রেলার মাত্র, অনেক কিছু এখনো বাকি, অপেক্ষায় থাকুন: তাজুল ইসলাম ◈ জাতীয় নির্বাচনের সব প্রস্তুতি ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা : প্রেস সচিব

প্রকাশিত : ২৬ মার্চ, ২০২১, ০৯:২৩ সকাল
আপডেট : ২৬ মার্চ, ২০২১, ০৯:২৪ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] কানাডার রিয়েল এস্টেট খাতে ‘অস্বস্তিকর’ পরিস্থিতি, বিনিয়োগে বাংলাদেশিদের সতর্ক থাকার পরামর্শ

সালেহ্ বিপ্লব: [২] করোনা মহামারীতে অর্থনীতির মন্দাবস্থার মধ্যেও কানাডায় বাড়ীর বাজারের উর্ধ্বগতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন  অর্থনীতিবিদ, সাংবাদিক এবং এই খাতের ব্যবসায়ীরাও। তারা বলছেন, বাড়তি সঞ্চয় এবং ব্যাংক ঋণের সুদের হার হ্রাস করে ঋণের ব্যয় কমিয়ে আনার কারণে মানুষ বাড়ী কেনায় আগ্রহী হচ্ছে। কিন্তু চাহিদার তূলনায় সরবরাহের ঘাটতি বাড়ীর দর বাড়িয়ে দিচ্ছে।

[৩] কানাডার বাংলা পত্রিকা ‘নতুনদেশ’ এর প্রধান সম্পাদক শওগাত আলী সাগরের সঞ্চালনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ‘শওগাত আলী সাগর লাইভে’ কানাডার বাড়ীর বাজারের (রিয়েল এস্টেট মার্কেট) বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় তাঁরা এই মতামত দেন।

[৪] স্থানীয় সময় বুধবার রাতে অনুষ্ঠিত এই আলোচনায় বক্তব্য রাখেন অ্যাডমন্টনের ম্যাকইউয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রাফাত আলম, রিয়েল্টর ও বাংলা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী সাজ্জাদ আলী এবং সাংবাদিক মনজুর মাহমুদ।

[৫] আলোচকরা রিয়েল এস্টেট মার্কেটে বিনিয়োগে আগ্রহীদের নিজেদের আর্থিক সক্ষমতা এবং আগামী পাঁচ বছরে নিজের আয় ব্যয়ের সম্ভাব্য গতি প্রকৃতি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়ার পরামর্শ দেন।

[৬] অর্থনীতিবিদ ড. রাফাত আলম কানাডার সামগ্রিক অর্থনীতির হাল হকিকত তুলে ধরে বলেন, কোভিডের কারনে অর্থনীতিতে প্রবল চাপ তৈরি হলেও দেশ এখন অর্থনীতিকে পুনরুদ্ধারের প্রস্তুতি নিচ্ছে।ভ্যাকসিন দেয়া শেষ হলেই অর্থনৈতিক কর্মকান্ড শুরু হয়ে যাবে এবং বর্ধিত প্রবৃদ্ধি নিয়ে অর্থনীতি এগিয়ে যাবে।

[৭] কানাডার রিয়েল এস্টেট মার্কেটের বর্তমান অবস্থাকে স্বাভাবিক হিসেবে আখ্যায়িত করে ড. রাফাত আলম বলেন, কানাডীয়ানরা এখন নগদ ডলারের উপর বসে আছে। পরিসংখ্যান বলছে, কানাডীয়ানদের হাতে ১০০ বিলিয়ন ডলার বাড়তি সঞ্চয় অলস পরে আছে, যেগুলো বিনিয়োগের পথ খুঁজছেন। তিনি বলেন, কোভিডের সময় সরকারের দেয়া প্রণোদনার অর্থ নাগরিকদের অর্থ প্রবাহকে বাড়িয়ে দিয়েছে।এই সময়ে মানুষের অন্যান্য বয় কমে গেছে। ফলে তাদের সঞ্চয় বেড়েছে, মানুষের হাতে নগদ অর্থ জমা হয়েছে। এই অর্থ তারা রিয়েল এস্টেট এবং শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করছেন।

[৮] তিনি বাংলাদেশি কানাডীয়ানদের রিয়েল এস্টেট মার্কেটে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নিজের আয়ের সাথে সম্ভাব্য ঋণের আনুপাতিক হার পর্যালোচনার পরামর্শ দিয়ে বলেন কোনো অবস্থাতেই যাতে ঋণের পরিমান মোট আয়ের এক তৃতীয়াংশের বেশি না হয়।

[৯] রিয়েল্টর সাজ্জাদ আলী, রিয়েল এস্টেট বাজারের বর্তমান পরিস্থিতিকে ’অস্বস্তিকর’’ আখ্যা দিয়ে বলেন, গত ২০ বছরের পেশাগত জীবনে বাড়ীর দাম নিম্নমুখী হতে কখনো দেখিনি। আবার এমন লাফিয়ে বাড়তেও দেখিনি।সব সময় একটা ভদ্রজোনোচিত গতিতে বাড়ীর দাম উপরের দিকে গেছে।

[১০] বর্তমানের বাজারে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী ক্রেতার আধিক্যের কথা উল্লেখ করে বলেন,অর্থিকভাবে মানুষে সক্ষমতা বেড়ে গেছে, তাদের হাতে নগদ অর্থও বেড়েছে।বিশ বছর আগে টরন্টোর বাংলাদেশি কমিউনিটিতে বছরে ৩০ হাজার ডলার আয় করেন এমন লোক খুঁজে পাওয়া কঠিন হতো। এখন একশত বা দেড়শত হাজার ডলারের বেশি আয় করেন এমন বাংলাদেশির সংখ্যা অনেক। তিনি বলেন,বাংলাদেশিদের চেয়ে আয়তনে বড় এবং ধনী অন্যান্য কমিউনিটিতেও এভাবে বিত্তশালীর সংখ্যা বেড়েছে।

[১১] তিনি যাদের সক্ষমতা আছে তাদের এখনি বাড়ীর বাজারে বিনিয়োগের পরামর্শ দিয়ে বলেন, বিনিয়োগের আগে অবশ্যই নিজের আর্থিক শক্তি, আগামী দিনে ব্যক্তিগত আয়ের প্রবাহের ধারাবাহিকতা বিবেচনায় নেয়ার পরামর্শ দেন।

[১২] সাংবাদিক মনজুর মাহমুদ বর্তমান বাড়ীর বাজারকে সম্পূর্ণ অস্বাভাবিক হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, একটি বাড়ী বিক্রির জন্য তালিকাভূক্ত সেটি নিয়ে বিডিং এর নামে দরের যুদ্ধ (প্রাইস ওয়ার) শুরু হয়ে যায়। এর মাধ্যমে বাড়ীর দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে ফেলা হয়। বাড়ী কেনার ক্ষেত্রে ব্যক্তির নিজস্ব সক্ষতাকে প্রাধান্য দেয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, পাঁচ বছর পর নিজের আর্থিক সক্ষমতা কোন পর্যায়ে যাবে.সেটি বিবেচনায় নিয়েই বাড়ীর বাজারে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া উচিৎ।

[১৩]  কানাডার বাড়ীর বাজারে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে পাঁচার হয়ে আসা অর্থের প্রবাহসহ নানা ধরনের কালেঅ বিনিয়োগের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সাধারন নাগরিকরা নিজের থাকার জন্য কিংবা বিনিয়োগ হিসেবে রিয়েল এস্টেট মার্কেটের দিকে ঝুঁকলেও কানাডার কালো অর্থনীতির একটা নিরাপদ আশ্রয়স্থল এই রিয়েল এস্টেট খাত।

[১৪] নতুনদেশ এর প্রধান সম্পাদক শওগাত আলী সাগর বাড়ীর বাজারে বিনিয়োগকারীদের নিজস্ব হোমওয়ার্ক এবং রিসার্চ করে বিনিয়োগে এগিয়ে যাবার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, যে কোনো বিনিয়োগই সাধারন মানুষের জন্য জটিল এবং দুর্বোধ্য। কাজেই সংশ্লিষ্ট পেশাজীবীদের উচিৎ ক্রেতাদের শিক্ষিত করে তোলার পদক্ষেপ নেয়া।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়