সুপ্রীতি ধর : অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, ‘শহীদ মিনার’ শব্দে বা ‘দুনিয়ার মজদুর এক হও’ স্লোগানে আমার আপত্তি আছে কিনা! আমার উত্তর হলো, কোন আপত্তি নেই। এসব শব্দ বাংলা ভাষায় প্রবেশ করে ‘বাঙালি আকার’ নিয়ে নিয়েছে অনেক আগেই। আমি এখানে ভাষাতত্ত্ব নিয়ে পড়তে বসিনি, পড়াতেও আসিনি। কেবল আমার আপত্তির কথাটা বলেছি। কিন্তু যখন আপনারা অতি সন্তর্পণে ‘শ্রেণিসংগ্রাম’কে ‘জিহাদ’ বলে চালিয়ে দিতে চাইবেন, ভিপি নুরকে আপনাদের ভবিষ্যত নেতা বলে মনে করবেন, নুরের ভাষাকে আপনার বাংলাদেশকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করার অস্ত্র বলে মনে হবে, তখনই আমার ভেতরে ‘গণ্ডগোল’ শুরু হয়ে যায়। এই ‘গণ্ডগোল’ কিন্তু আপনাদের অনেকের ভাষায় একাত্তরের সেই ‘গণ্ডগোল’ না, মনে রাখবেন। আরেকটা কথা, আমি মানুষটা একটু ঝামেলাপূর্ণই আছি। এটা নিজেও স্বীকার করি। যখন আপনাদের কোনো প্রশ্ন থাকে না, সেখানে আমি প্রশ্ন করে বসি। যেমন ২০১২ সালে যখন ভাষাসৈনিক অলি আহাদের ‘নামাজে জানাজা’ পড়ানো হয়েছিলো শহীদ মিনারে, কারও মনে মুহূর্তের জন্যও প্রশ্ন ওঠেনি, শহীদ মিনার কি জানাজা পড়ানোর স্থান? সবাই নিউজ করে যাচ্ছিলো আপন মনে, একবারও তাদের মনে প্রশ্নটি দেখা দেয়নি। যেন এটাই স্বাভাবিক, একজন মুসলমানের জানাজা হয়েছে শহীদ মিনারে, এতে নাকি মিনারের সম্মান আরও বেড়ে গিয়েছিলো! যেমন পতাকার ওপর দাঁড়িয়ে নামাজ পড়লেও আপনাদের কোনো আপত্তি থাকে না। আমার দিনরাতের ঘুম চলে যায় ওইসব ঘটনায়। কিন্তু আমার ঝামেলা হয়েছিলো সেই জানাজার ঘটনাতেও। আমি সামান্য একটু তোলপাড় করেছিলাম সেইদিন। ফলে একাত্তর টিভিতে সেইরাতে নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু ভাই আর ভিসিকে প্রশ্ন করা হয়েছিলো এ নিয়ে, দুজনই তখন তাদের আপত্তির কথা বলেছিলেন! কিন্তু প্রশ্নটা আমি তুলেছিলাম, একা আমি। আজও মনের খটকার জায়গাটার কথা লিখলাম বলে আপনারা যেভাবে আমাকে ‘র’ এর এজেন্ট, হিন্দু মৌলবাদী, সংঘের সদস্য, অসভ্য, নোংরা বলে আখ্যায়িত করছেন, ‘জবানের দুশমন’ বলে প্রায় চিহ্নিতই করে ফেলেছেন, তাতে আমার কিছুই হবে না। আপনাদের ভিতরের থকথকে কদাকার কুৎসিত সাম্প্রদায়িক, পিতৃতান্ত্রিক চেহারাটা বেরিয়ে এলো। আর কিছু না। ফেসবুক থেকে