ম. ইনামুল হক: পূর্বদেশি রাজা অশোক তার সাম্রাজ্যের পশ্চিম অঞ্চলে অরামাইক লিপিতে তার অনুশাসনগুলো খোদিত করেছিলেন। রোহতাসগড়ে প্রাপ্ত শশাঙ্কের সীলমোহর মাগধী লিপিতে লেখা ছিল। কিন্তু উত্তরদেশী রাজা হর্ষবর্ধন গৌড়ীয় রাজা শশাঙ্কের প্রতি শত্রুতার জেরে গৌড়ীয় লিপির উপরে ব্রাহ্মী লিপি থেকে উদ্ভূত নাগরী লিপি চাপিয়ে দেন। তখন থেকে উত্তরদেশীরা পূর্বদেশ অঞ্চলের সমৃদ্ধশালী বাংলাকে দখলে রাখতে চায়। একই সাথে হর্ষবর্ধন আমল থেকেই তারা বাংলার মানুষদের ভাষাকে ছোট করা, ঘৃণা করা চালিয়ে আসছে।
পরবর্তী পালেরা পাটলিপুত্রে রাজধানী করে নাগরী লিপিকে প্রাধান্য দেন। কিন্তু গৌড়ীয় লিপি আপন মহিমায় সারা পূর্বদেশ অঞ্চলে নানা ভাষায় গৃহীত হতে থাকে। আর্যদের উত্তরসূরী ব্রাহ্মণরা নিজেদের স্বকীয়তা বজায় রাখতে পারলেও ক্ষত্রিয়রা বৌদ্ধধর্ম গ্রহণ করে স্থানীয়দের সাথে বিলীন হয়ে যায়। গুপ্তপূর্ব শকদের উত্তরসূরী কায়স্থরা এই সুযোগে সমাজে দ্বিতীয় স্থান নিয়ে নেয়। কর্ণাটকী সেনরা ব্রাহ্মণ্যবাদী ছিলেন, কিন্তু ব্রাহ্মণ ছিলেন বলে কোনো সূত্র পাওয়া যায় না। তারা কনৌজ থেকে উত্তরদেশী ব্রাহ্মণ এনে বাংলার মানুষদেরকে স্থায়ীভাবে হীন করে গেছেন। পরবর্তী দিল্লি কেন্দ্রিক মুসলমান শাসকরা পার্সি তারপর উর্দু ভাষাকে গ্রহণ করেছেন। ব্রিটিশরা পূর্বদেশ কেন্দ্রিক হওয়ায় তারা বাংলা সহ সকল আঞ্চলিক ভাষার মর্যাদা দিয়েছে। কিন্তু দিল্লিকেন্দ্রিক বর্তমান হিন্দুস্তানি শাসকরা হিন্দি আর উর্দু ছাড়া আর কিছুই বোঝে না। ফেসবুক থেকে