শিরোনাম
◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলার নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো ◈ মুজিবনগর সরকারের ৪০০ টাকা মাসিক বেতনের কর্মচারি ছিলেন জিয়াউর রহমান: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ রেকর্ড বন্যায় প্লাবিত দুবাই, ওমানে ১৮ জনের প্রাণহানি ◈ টাইমের প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির তালিকায় বাংলাদেশের মেরিনা (ভিডিও) ◈ দেশের মানুষকে ডাল-ভাত খাওয়াতে ব্যর্থ হয়েছিল বিএনপি : প্রধানমন্ত্রী ◈ দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলের ফসফরাস বোমা হামলা

প্রকাশিত : ০১ মার্চ, ২০২১, ০৭:১০ সকাল
আপডেট : ০১ মার্চ, ২০২১, ০৭:১০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অন্যের বউ চুরি করে বিয়ের অদ্ভুত রীতি যেসব দেশে

অনলাইন ডেস্ক : অন্যের স্ত্রীকে চুরি করে পালানো অতপর বিয়ে। এমন সব অদ্ভুত রীতি পালিত হয়েছে আসছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। এমন বিয়ের রীতিকে উৎসব মনে করা হয়। শুধুমাত্র বউ চুরিই নয় অপহরণ এমনকি ধর্ষণের মাধ্যমে বিয়েতে রাজি করানোর মতো নানান প্রথাও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রচলন রয়েছে।

বিশ্বজুড়ে প্রাগৈতিহাসিক সময়কাল থেকেই চলে আসছে ব্রাইড কিডন্যাপিং বা বধূ অপহরণ। বিশেষ করে দক্ষিণপূর্ব এশিয়া, মেক্সিকো, ইউরোপ এবং আমাজন জঙ্গলের উপজাতিদের মধ্যে অতীতকাল থেকেই প্রচলিত ব্রাইড কিডন্যাপিং। বর্তমানে ককেশাস এবং মধ্য এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি দেখা যায় এ ধরনের রীতি।

বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে কনে অপহরণের মাধ্যমে বিবাহের বৈধতা দেওয়া হয়। যা যৌন অপরাধ হিসেবে বিবেচিত। এসব রীতি-নীতি আইনবিরোধী হলেও সামাজিক রীতি হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে তা পালিত হয়ে আসছে।

চলুন জেনে নিই কোন দেশে বা অঞ্চলে অদ্ভুতসব বিয়ের প্রচলন রয়েছে:

আফ্রিকার তিনটি দেশে পালিত হয় এমন উৎসব। প্রায়ই কনে অপহরণের নামে সেখানে ঘটে ধর্ষণের মতো ঘটনা। পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারের এ রীতি মেনে আসছে যুগ যুগ ধরে যাযাবর উপজাতি ওডাবে। প্রতিবছর সেপ্টেম্বর মাসে অন্যের বউকে চুরি করে পালায় সেখানকার পুরুষরা।

টানা ৭ দিন ধরে চলে অন্যের বউকে চুরির উৎসব। যে পুরুষ অন্যের বউকে চুরি করবেন সে উৎসবে যোগ দেন তাদের স্ত্রীরাও। ওই উৎসবে চলে খাওয়া-দাওয়া ও নাচ-গান। যেখানে নিজেদের পছন্দমতো পুরুষ সঙ্গীও বাছাই করে নিতে পারেন নাইজারের নারীরা। নিজেদের শারীরিকভাবে যোগ্য প্রমাণ করতেই এমন উৎসবে অংশ নেয় সেখানকার পুরুষরা।

রুয়ান্ডার বিভিন্ন অঞ্চলেও প্রচলিত নববধূ-অপহরণের ঘটনা। এক্ষেত্রে অপহরণকারীরা তাদের পছন্দসই নারীকে নিজ বাড়ি থেকে বা রাস্তা থেকে কিডন্যাপ করে। জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং পরে ওই নারীকেই বিয়ে করে। অনেক সময় কনের পরিবার ধনী হলে এমন বিয়ে হয় না। আবার কনে গরীব হলে ধর্ষকের সঙ্গেই দেওয়া হয় ওই নারীর বিয়ে।

রুয়ান্ডার প্রচলিত রীতি অনুসারে, অপহরণ হওয়া নারী যদি ধর্ষণের পর গর্ভধারণ করেন সেক্ষেত্রে ওই নারীর কদর আরও বেড়ে যায়। তখন ঘটা করে বিবাহের অনুষ্ঠান করে থাকেন বরের পরিবার। এরপর কনের মা-বাবার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন অপহরণকারী ও তার পরিবার। এমন সময় বরের পরিবার একটি গাভি, নগদ অর্থ ও দামি উপহার ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিয়ে থাকে কনের পরিবারকে।

রুয়ান্ডায় কনে-অপহরণ বিবাহের কারণে অনেক নারীকেই পরবর্তীতে পড়তে হয় বিপদে। সেখানকার মানবাধিকার কর্মীদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, যেসব পুরুষ এমন বিয়ে করেন তাদের মধ্যে এক তৃতীয়াংশই স্ত্রীদের ছেড়ে দেন। এমনকি অপহরণের পর ধর্ষিত নারীদের গর্ভ থেকে বেশিরভাগই জন্ম হয় প্রতিবন্ধী সন্তানের।

এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই পিরামিড আর নীলনদের মিশর। মিশরে খ্রিস্টান বিবাহিত বা অবিবাহিত সব নারীকেই ইসলামে দীক্ষিত করতে পুরুষরা কনে অপহরণ করেন। তারপর তাদের বিয়ে করেন মুসলিম পুরুষরা। এক্ষেত্রে নারীদের ধর্ষণ করা হয়। এমন রীতির প্রচলন ঘটে রাষ্ট্রপতি আবদেল ফাত্তাহ সাঈদ হুসেন খলিল এল-সিসি’র সালাফিস্ট নেটওয়ার্কের মাধ্যমে।

নববধূ অপহরণের ঘটনা প্রচলিত ইথিওপিয়ার অনেক অঞ্চলে। সেখানে প্রায় ৬৯ শতাংশ নববধূ অপহরণর ঘটনা ঘটে বলছে দেশটির ২০০৩ সালের এক সমীক্ষা। ইথিওপিয়ায় কোনও পুরুষ যদি অন্যের বউকে অপহণ করতে চান তাহলে তিনি কাজটি করেন বন্ধুদের সমন্বয়ে। এক্ষেত্রে ঘোড়া ব্যবহার করে থাকেন অপহরণের কাজে।

সেখানকার এ রীতি পালন করা হয় প্রকাশ্যে। নারীকে অপহরণ করে নিজ বাড়িতেই নিয়ে যেতে পারবেন ওই পুরুষ। গর্ভবতী না হওয়া পর্যন্ত পুরুষটি পরিবারের সামনেই ধর্ষণ করেন ওই নারীকে। এরপর তাদের বিয়ে দেওয়া হয়। আর যদি কোনও কারণে ওই নারী গর্ভবতী না হন তাহলে স্ত্রীর মর্যাদা দেন না ধর্ষণকারী পুরুষ।

ইথিওপিয়ার অন্তত ১০ থেকে ১৩ শতাংশ বিবাহ এমন অপহরণের মাধ্যমে ঘটে বলে উঠেছে এসেছে ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে। সেখানে কেবল বিবাহিত নারীকেই নয়, অপহরণের পর দীর্ঘদিন আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয় নাবালিকাদেরকেও।

মধ্য এশিয়ার কিরগিস্তান, কাজাখস্তান, তুর্কমেনিস্তান এবং উজবেকিস্তানের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল কারাকালাপাকস্তানে কনে অপহরণের ঘটনা নিত্যদিনের ঘটনা। তবে ২০১৩ সালে এমন রীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কিরগিস্তানে। সেখানে কনে অপহরণে দোষীর সাজা নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ বছেরের কারাদণ্ড।

কিরগিস্তানে কনে অপহরণ ‘আলা কচু’ নামে পরিচিত। স্ত্রী গ্রহণের একটি স্বীকৃত এবং সাধারণ নিয়ম আলা কচু । ২০১৫ সালে কিরগিস্তানের এক সমীক্ষায় উঠে আসে, সেখানকার অপহরণের শিকার হয়ে বিবাহে আবদ্ধ হন প্রায় ১৪ শতাংশ নারী। সেখানে বউ চুরির ঘটনা ৭৫-৮০ শতাংশেরও বেশি বলছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থাগুলো।

যদিও বর্তমানে এ ধরণের কর্মকাণ্ড অনেকটাই কমে গেছে। তবুও একেবারেই যে ঘটে না, তা কিন্তু নয়। আবার খুব কমই বিচার হয় অবৈধ এমন কর্মকাণ্ডে জড়িত অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে।

শুধু এ কয়েকটি দেশ নয় বরং কেনিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, দাগেস্তান, চেচনিয়া এবং ইঙ্গুশেটিয়াসহ এমন ঘটনা ঘটে আজারবাইজানেও। ব্রাইড কিডন্যাপিংয়ের প্রচলন রয়েছে জর্জিয়া, পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়া, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়ার হামং সংস্কৃতিতেও।

এমনকি বউ চুরির মতো নিকৃষ্ট ঘটনা ঘটে আসছে চীন, জাপান, আমেরিকা, যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো, দক্ষিণ আমেরিকা, ইউরোপের রোমা (রোমানি) সম্প্রদায়, ভূমধ্যসাগরীয়, ইতালি, আয়ারল্যান্ড, মাল্টার স্লাভিক উপজাতিদের মধ্যেও। সময়নিউজ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়