আরিফুর রহমান :[২] সহায় সম্পদ নেই। থাকেন অন্যের জমিতে খুপরি ঘরে। তবে এক দুই দিন নয়, টানা ২৪ বছর। মাদারীপুর সদর উপজেলার ডিসি ব্রিজ ২ নম্বর শকুনি এলাকায় এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
[৩] সরেজমিনে দেখা গেছে, খুপরি ঘরের দরজার সামনে মাটির চুলা। সেখানে রান্না হচ্ছে কুড়িয়ে আনা শাক।
[৪] এক কক্ষ বিশিষ্ট একটি খুপরি ঘরে কহিনুর বেগম (৮০) ও তার প্রতিবন্ধী মেয়ে পারুল বেগমের (৫০) বসবাস। মা বৃদ্ধ ও মেয়ে প্রতিবন্ধী হওয়ায় দুজনই কর্মক্ষমতা হারিয়েছে।
[৫] কহিনুর বেগমের স্বামী মারা গেছেন অনেক বছর আগে। বয়স্কভাতা ও প্রতিবন্ধী ভাতা পেলেও তাতে চলছে না ছোট সংসার। কেউ দুকেজি চাল, দুমুঠো ডাল, অন্যের দেওয়া খাবারের বাড়তি অংশ দিয়ে চলছে তাদের জীবন। জমির মালিক রেহানারও আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। ফলে এখন বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে পরিবারটি।
[৬] কহিনুর বেগম বলেন, স্বামী নেই ছেলে নেই, আমার একটা মাইয়া। আমারে ইকটু সাহায্য করতে হইবো, ইকটু দয়া করতে হইবে। আমি থাহার (থাকার) ইকটু জাগা (জায়গা) চাই। আল্লাহ বিনে দুনিয়ায় আমার আর কেউ নেই। আমি ও আমার মাইয়া (মেয়ে) এই হানে থাকি। স্বামী মারা গেছে বহু দিন হইয়া গেছে। জাগা জমি নেই, ঘরও নেই। এইডাই (এটাই) আছে। খুব কষ্ট করে থাকি এই ঘরে। ছোড (ছোট) ঘরতো! আমাগো একটা ঘর দিলে খুব ভালো হয়। সরকারের কাছে অনুরোধ আমাগো জানি একটা ঘর দেয়।
[৭] জমির মালিক রেহানা বেগম বলেন, আমার স্বামী হালিম ব্যাপারি একজন প্রতিবন্ধী । তিনি আয় রোজগার করতে পারেন না। বাড়ি ভাড়া দিয়ে কোনো মতে সংসার চলে। আমি কহিনুরের কাছ থেকে কোনো ভাড়া নিইনা। তিনি অসহায় বিধায় থাকতে দিছি।
[৮] স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এরা খুবই অসহায়। এদের মতো অসহায় খুব একটা চোখে পড়ে না।আশপাশের মানুষ তাদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করে। এদের নিজস্ব কোনো জমিজমা নেই। রয়েছে ছোট একটি খুপরি ঘর। সেটার অবস্থাও ভালো না। মানবেতর জীবনযাপন করছে তারা।
[৯] মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুদ্দিন গিয়াস বলেন, গূহহীনদের মাঝে সরকারিভাবে ঘর দেওয়া হচ্ছে। কহিনুর বেগমের ব্যাপারে এর আগে কোনো তথ্য পাইনি। কহিনুর বেগমের সঙ্গে দেখা করব। যদি সত্যিই তিনি অসহায় হন তাহলে সরকারিভাবে ঘরের ব্যবস্থা করা হবে। সম্পাদনা : মুরাদ হাসান