নিজস্ব প্রতিবেদক : [২] রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে নিখোঁজ নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষার্থী সাদমান সাকিব রাফির সন্ধানের নামে প্রতারণার শিকার হয়েছেন তার পরিবার।
[৩] প্রতারক চক্রটি সাদমানের মায়ের কাছে মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশ পরিচয় দিয়ে উদ্ধারের তথ্য জানায়। সাদমান ফেনী সদর হাসপাতালে রাফি অচেতন অবস্থায় ভর্তি আছে। তাকে রক্ত দিতে হবে। এজন্য ৮ হাজার টাকা লাগবে। সাদমান নিখোঁজের ঘটনায় দায়ের করা জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই হাফিজুর রহমানের পরিচয় দিয়ে ওই প্রতারক চক্র ফোন দেয় মনোয়ারা হোসেনের কাছে। ফোন পেয়ে মনোয়ারা হোসেন ৮ হাজার টাকা বিকাশ করেন। এরপর বিষয়টি ভাটারা থানার ওসি মোক্তারুজ্জামানের কাছে জানালে, পুলিশ বুঝতে পারে যে মনোয়ারা হোসেন প্রতারকের খপ্পড়ে পড়েছেন।
[৪] গত ১৩ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সি ব্লকের ৫/এ নম্বর রোডের ২০ নম্বর বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান সাদমান সাকিব রাফি। সঙ্গে নিয়ে যান তার ল্যাবটপ ও মোবাইল ফোন সেট। বাসা থেকে বের হয়েই সাদমান তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ করে দেন। নিখোঁজ সাদমান মালয়েশিয়ার এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটির (এপিইউ) ত্রিপল ই বিভাগের ছাত্র। গত ১৯ সেপ্টেম্বর লকডাউনের মধ্যে তিনি মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরেন। সেখান থেকে দ্বিতীয় সেমিস্টার শেষ করার পর নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে ত্রিপল ই বিভাগের প্রথম সেমিস্টারে ভর্তি হন। নিখোঁজের ঘটনায় তার মা মনোয়ারা হোসেন ভাটারা থানায় একটি জিডি করেন।
[৫] সাদমানের মা মনোয়ারা হোসেন বলেন, ‘আমার ৮ হাজার টাকা গিয়েছে, যাক। কিন্তু আমার ছেলেকে তো ফিরে পেলাম না। ওরা আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। বিকাশে টাকাটা নেওয়ার পরই নম্বরটি বন্ধ করে দেয়।’
[৬] তিনি বলেন, মঙ্গলবার বিকাল ৫ টার দিকে একজন ব্যক্তি ফোন করে জানায়, ‘পত্রিকায় সাদমান নামে নিখোঁজ যুবকের ছবি ছাপা হয়েছে, ওই যুবক ফেনী সদর হাসপাতালে অসুস্থ অবস্থায় ভর্তি রয়েছে। তিনি স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ। ওই যুবককের চিকিৎসার জন্য রক্ত দিতে হবে। এজন্য ৮ হাজার টাকা লাগবে। আপনি এই নম্বরে ৮ হাজার টাকা বিকাশ করুন।’ মনোয়ারা হোসেন এই কথা শুনেই জিডির তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই হাফিজুর রহমানের কাছে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানায়। এরপর বিকাশে ৮ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেন। পরে পুলিশ তদন্ত করে বুঝতে পায় যে এটি প্রতারক চক্র। নিখোঁজ সাদমান সাকিব রাফি উদ্ধার হয়নি।
[৭] পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার সুদীপ চক্রবর্তী বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত নই যে নিখোঁজ ছেলেটি উদ্ধার হয়েছে। বিষয়টি ওই ছেলের মা আমাদের কাছে ফোন করে জানিয়েছেন। তবে এর সঙ্গে খুব সম্ভবত প্রতারক চক্র জড়িত আছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি।’
[৮] ভাটারা থানার ওসি মোক্তারুজ্জামান বলেন, নিখোঁজ ওই ছেলে উদ্ধার হয়নি। উদ্ধারের নামে ছেলের মায়ের কাছে যে ফোনটি দেওয়া হয়েছিল, সেটি প্রতারক চক্রের। সম্পাদনা: ফরহাদ বিন নূর