সুজন কৈরী : [২] রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশানের দি মিরাজ রেস্টুরেন্ট কাম সিসা বারের বিরুদ্ধে ২ কোটি ৫৪ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকির তথ্য উদঘাটন করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর। ভ্যাট ফাঁকির দায়ে এনবিআরের নিয়ন্ত্রণাধীন সংস্থাটির পক্ষ থেকে সিসা বারটির বিরুদ্ধে সোমবার মামলা করা হয়েছে।
[৩] ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর বলছে, সংস্থার অনুসন্ধান অনুযায়ী, দি মিরাজ ৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকার বিক্রয় তথ্য গোপন করেছে। যার মাধ্যমে ১ কোটি ৩৯ লাখ টাকার মূসক ফাঁকি সংঘটিত হয়েছে। এই অভিযোগে ঢাকা উত্তর কমিশনারেটের অধীন নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে মামলা দায়ের করা হয়।
[৪] এর আগে ভ্যাট ফাঁকির সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ভ্যাট গোয়েন্দার উপ-পরিচালক তানভীর আহমেদ এবং সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মহি উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি দল গত ১২ নভেম্বর গুলশানের ৩ নম্বর সড়কের ৯/এ নম্বরস্থ বাড়িতে অবস্থিত দি মিরাজ সিসা বারে অভিযান চালায়। অভিযানকালে গোয়েন্দারা দেখতে পান, রেস্টুরেন্টের আড়ালে তারা সিসা বার পরিচালনা করছে। কোনো বৈধ কাগজ দেখাতে না পারায় সিসা বারের প্রাঙ্গন থেকে ১৫ কেজি সিসা এবং সিসা পরিবেশনের নানা সামগ্রী জব্দ করে আভিযানিক দলটি। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটির বাণিজ্যিক দলিলাদিও জব্দ করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির মূসক নিবন্ধন অনুযায়ী ব্যবসায়িক নাম ‘দি ফ্রেন্ডস হাউস লিমিটেড’। ভ্যাট নিবন্ধন নম্বর- ০০৩২৬৯০৪৭-০১০১।
[৫] ভ্যাট গোয়েন্দা আরও জানায়, জব্দকৃত এবং অনুসন্ধানের মাধ্যমে সংগৃহীত তথ্য ও দলিলাদির ভিত্তিতে ২০১৩ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত শুধুমাত্র বিক্রির উপর ১ কোটি ৪০ টাকার ভ্যাট ফাঁকির রহস্য উৎঘাটন করা হয়। ভ্যাট আইন অনুযায়ী, ফাঁকিকৃত ভ্যাটের উপর মাসভিত্তিক ২ শতাংশ হারে ৯৮ লাখ টাকা সুদ প্রযোজ্য। তথ্য অনুসন্ধানে আরও দেখা যায়, সিসা বারটি বিভিন্ন সেবা ক্রয়ের উপর ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা উৎসে ভ্যাট ফাঁকির সাথে জগিত। এর উপর মাসভিত্তিক ২ শতাংশ হারে সুদ ৭ লাখ ৮৮ হাজার টাকা প্রযোজ্য হবে।
[৬] সংস্থাটি জানিয়েছে, দি মিরাজ প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে বিক্রয় এবং উৎসে কর্তন বাবদ মোট ১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা মূসক ফাঁকি উদঘাটন করা হয়। ফাঁকিকৃত মূসকের উপর সুদ বাবদ মোট ১ কোটি ৬ লাখ টাকা প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানটি মোট ২ কোটি ৫৪ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকির সাথে জড়িত।
[৭] অভিযানকালে জব্দ সিসা ও সিসা সামগ্রী ক্রয়ের বৈধ উৎস দেখাতে পারেনি সিসাবার কর্তৃপক্ষ। আইন অনুযায়ী এগুলো রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া অনুসন্ধান শেষে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদপ্তর দি মিরাজের বিরুদ্ধে ২ কোটি ৫৪ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকির মামলা করেছে।
আপনার মতামত লিখুন :