হাসান মোরশেদ : দুজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মানুষের দুটো বক্তব্য তেমন আলোড়ন না তুললেও ভীষণ জরুরি বলে মনে হয়েছে আমার কাছে। [১] সম্প্রতি জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাকশাল নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন।
বাকশাল হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর পূর্ণতা, বাকশাল বাদ দিয়ে বঙ্গবন্ধু খন্ডিত। কিন্তু ’৭৫ এর পর পূনরুত্থিত আওয়ামী লীগ বাকশাল বিরোধী প্রবল প্রচারনাকে পাশ কাটিয়ে গিয়েছিলো কৌশল হিসেবে হয়তো। কিন্তু পরবর্তী এই পাশ কাটিয়ে যাওয়া এতোটাই স্থায়ী হয়ে গেছে, যেন বাকশাল নিষিদ্ধ কিছু। যেন আওয়ামী লীগ বাকশালকে ধারণ করে না, আওয়ামী লীগের কর্মীরা তো বাকশাল বুঝেই না।
নেতারাও যেন বাকশাল প্রসঙ্গ এলেই এড়িয়ে গেলে বাঁচেন। প্রধানমন্ত্রীর এই স্পষ্টতা প্রশংসনীয়। এবার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা একটু বাকশাল বুঝেন দয়া করে।
বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র, প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় তরুণদের সাথে এক আলাপে স্পষ্টভাবে বলেছেন, ধর্মনিরপেক্ষতা বাংলাদেশের মূল নীতি হিসেবে থাকবে। তিনি জোর দিয়ে বলেছেনÑ হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্ট্রান, নাস্তিকদের জন্যও বাংলাদেশ।
ধর্মীয় মৌলবাদের চাপ যখন বাড়ছে, সরকার ও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠছে আপোসের তখন সজীব ওয়াজেদ জয়ের এই সুস্পষ্ট সাহসী উচ্চারণ প্রণিধানযোগ্য। একটা সমন্বিত, সহনশীল ও আধুনিক রাষ্ট্র ও সমাজ গঠন করতে হলে আস্তিক-নাস্তিক, নানা ধর্মের সকল মানুষের পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে হবে।
আচরণ ও মতপ্রকাশে দায়িত্বশীল হতে হবে। বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকার হিসেবে সজীব ওয়াজেদ জয় আগামীতে এমন আরও সাহসের উদাহরণ হয়ে উঠুন। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশের জন্য এটা জরুরি।