রাশিদ রিয়াজ : গত দুই মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে এধরনের লেনদেন ছিল সবচেয়ে খারাপ। এমনিতেই কোভিড মন্দার প্রভাব কাটিয়ে উঠতে পারছে না শেয়ারবাজারগুলো, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ৮ দিন আগে সোমবার ফের ধস নামে বাজারে। জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুসারে যুক্তরাষ্ট্রে ফের করোনাভাইরাস সংক্রমণে জুলাইয়ের আগের রেকর্ডটি ছাড়িয়ে গেছে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে শেয়ারবাজারগুলোতে। এছাড়া বিনিয়োগকারীরা ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে আরেকটি সহায়তা প্যাকেজের আশা করলেও তা পাওয়া যায়নি। উপরন্তু এধরনের সহায়তা প্যাকেজ নিয়ে রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটদের মধ্যে একমত হওয়া সম্ভব হয়নি। ফলে শত শত মার্কিন কোম্পানি, শীর্ষ প্রযুক্তি কোম্পানি অ্যামাজন, গুগলের প্যারেন্ট কোম্পানি অ্যালফাবেটও তাদের ত্রৈমাসিক আয়ের রিপোর্টে বলছে পুঁজিবাজারে যে অর্থনৈতিক নিশ্চয়তা বিরাজ করছে তা কাটিয়ে ওঠা যায়নি। সোমবার ডাও জোন্স শিল্পসূচকে সাড়ে ৬’শ পয়েন্ট পতন ঘটে। যা শতাংশে ২.৩ শতাংশ। একই সঙ্গে এসএন্ডপি ৫০০ সূচক ১.৯ ও নাসডাক কম্পোজিট ১.৬ শতাংশ হ্রাস পায়। যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ ধনী বিল গেটস, মার্ক জাকারবার্গ, এলন মাস্কসহ ১০ জন ১৪.৭ বিলিয়ন ডলার লোকসান দেন এদিন। সিএনএন/আরটি
সবচেয়ে বেশি লোকসান দিয়েছেন ফেসবুকের সিইও মার্ক জাকারবার্গ। ফেসবুকের শেয়ার মূল্যে পতন ঘটে ২.৭ শতাংশ। এতে জাকারবার্গের মূলধন কমে যায় ২.৮ বিলিয়ন ডলার। এতে তার সম্পদের পরিমান কমে দাঁড়ায় ১০১.৮ বিলিয়ন ডলার। ২০০৪ সালে ফেসবুক যাত্রা শুরুর পর এখনো জাকারবার্গের এতে মালিকানা রয়েছে ১৫ শতাংশ।
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের মোট সম্পদ ১৮৮.৮ বিলিয়ন ডলার। অ্যামাজনের ১১ শতাংশ মালিকানা তার। সোমবার শেয়ারবাজারে তার কোম্পানির শেয়ারমূল্য সামান্য বৃদ্ধি পায়। এতেই তিনি ১৫৯ মিলিয়ন ডলার পান। তবে বিশে^র তৃতীয় ধনী বিল গেটস এদিন লোকসান দেন ১.৭ বিলিয়ন ডলার। এতে তার সম্পদের পরিমান কমে দাঁড়ায় ১১৫.২ বিলিয়ন ডলার। বিল গেটসের বিনিয়োগ রয়েছে কানাডার ন্যাশনাল রেলওয়ে, জন ডিরি ও রিপাবলিক সার্ভিসে। যেগুলোর শেয়ার সূচকও ২ শতাংশ কমে যায়। মাইক্রোসফটের আরেক নির্বাহি স্টিভ বলমারের পুঁজি খোয়া যায় এদিন ১.৭ বিলিয়ন ডলার। মোট সম্পদ কমে দাঁড়ায় ৭১.৮ বিলিয়ন ডলার। মাইক্রোসফটের সাড়ে ৩ শতাংশ মালিকানা স্টিভের।
আরেক মার্কিন শীর্ষ ধনী টেসলা মালিক এলন মাস্ক সোমবার শেয়ার বাজার পতনে ক্ষতি দেন ৬৬ মিলিয়ন ডলার। তার সম্পদ কমে দাঁড়ায় ৯৩ বিলিয়ন ডলার। বিদ্যুৎ চালিত গাড়ি টেসলার ২১ শতাংশের মালিক তিনি। এদিন টেসলার শেয়ার মূল্য কমে যায় আড়াই শতাংশ। বিখ্যাত মার্কিন ধনী ওয়ারেন বাফেটের কোম্পানির সংখ্যা ৬০টি। এদিন তার কোম্পানিগুলো পুঁজি বাজারে শেয়ারমূল্য হারায় ২.১ শতাংশ। এতে তার ক্ষতি হয় দেড় বিলিয়ন ডলার। তার সম্পদের পরিমান ৭৮.৯ বিলিয়ন ডলার। আরেক ধনী ল্যারি এলিসন সফটওয়্যার জায়ান্ট ওরাকলের প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা। ওরাকলের ৩৫ শতাংশের মালিকানা তার। তার কোম্পানির শেয়ারমূল্য হ্রাস পায় ৪ শতাংশ। এতে তার ২.৬ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়ে সম্পদ কমে দাঁড়ায় ৭৬.১ বিলিয়ন।
গুগলের সহ প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজ ও সের্গেই ব্রিনের ক্ষতি হয়েছে যথাক্রমে ২ ও ১.৯ বিলিয়ন ডলার। তাদের শেয়ারমূল্য কমেছে ৩ শতাংশ। গুগলের প্যারেন্ট কোম্পানি অ্যালফেবেটের অংশীদার তারা। ল্যারির মোট সম্পদ হচ্ছে ৭০.৬ ও ব্রিনের সম্পদ হচ্ছে ৬৮.৭ বিলিয়ন ডলার। ওয়ালমার্টে বাজার লেনদেনে এ্যালিচ ওয়ালটন সোমবার ক্ষতি করেছেন ৬৩৫ মিলিয়ন ডলার। তার কোম্পানির শেয়ারমূল্য হ্রাস পায় ১.২ শতাংশ। সম্পদ কমে দাঁড়ায় ৬৬.৭ বিলিয়ন ডলার।
আপনার মতামত লিখুন :