অমি রহমান পিয়াল: মুরুব্বি বার্তা
অমি রহমান পিয়াল: একটা কথা বলি পিয়াল। আমি তখন আন্দোলনের পাশাপাশি দ্বিতীয় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমাদের ওখানে তো ডাক্তারি পরীক্ষার মত প্রতি বছরের ফলাফল যোগ করে প্রথম দ্বিতীয় ইত্যাদি স্থান নির্ধারণ হতো। আমি এই প্রথম দিকে থাকার প্রয়োজনে এতো আন্দোলন মিছিলের মধ্যে রাত জেগে লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছিলাম। আবার ওদিকে molotov cocktail বানাচ্ছিলাম কয়েক বন্ধুতে মিলে। তো হঠাৎই পাকি বাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়ল ২৫শে মার্চ রাতে। সম্ভবত সেপ্টেম্বর মাসের দিকে আমার গ্রামের বাড়ির ঠিকানায় চিঠি আসল, স্থগিত থাকা পরীক্ষা সহসা শুরু হবে, যেন হলে ফিরে যাই। স্বাভাবিক কারণে যাওয়া হয় নাই। দেশ স্বাধীন হতে বহু বছর লাগবে বলে ভেবেছিলাম, সে কারণে এমনিতেই ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার আশা বাদ দিয়েছিলাম।
সে যাই হোক, ৭২ সালের জানুয়ারিতে ঢাকায় আসলাম। কিসের কি! ছাত্ররা জোর করে দাবি আদায় করল, বিনা পরীক্ষায় আমাদের প্রমোশন হয়ে গেল। তখন অবশ্য আমি মুষড়ে পড়েছিলাম, কারণ বিদেশে উচ্চ শিক্ষার জন্য দরখাস্ত করতে গেলে পুরো চার বছরের ট্রান্সক্রিপ্ট জমা দিতে হয়। অবশ্য পরে আমাদের ট্রান্সক্রিপ্ট-এর সাথে অটো প্রমোশনের কারণ বর্ননা করে পত্র থাকায় বরং আমাদের সুবিধা হয়েছিল বলে ধারনা করি। আমি এবং আমার সহপাঠী কেউ কোন অসুবিধা সম্মুখীন হই নাই।
এতো কথা বললাম, কারণ বিএনপি এবং ডঃ জাফরুল্লাহ বলছে, অটো প্রমোশনের ব্যবস্থা করে সরকার নাকি শিক্ষা ব্যবস্থা নবীন প্রজন্মের সর্বনাশ করে দিয়েছে। অথচ সারা বিশ্বে কোন পরীক্ষা না নিয়েই এ লেবেল কিংবা ব্যাচেলরেট ডিপ্লোমা পাশ করে ছেলে মেয়েরা দিব্যি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছে। দুনিয়ার খবরাখবর না জেনে থাকা একেবারে অসম্ভব। এই সব জাফরুল্লাহ জেনেও কেন একটা বাড়তি কথা বলে বুঝতে পারি না।... (মুরুব্বি বার্তা) ফেসবুক থেকে