আশরাফুল আলম খোকন: চোরকে চোর বলতে নেই, ডাকাতকে ডাকাত বলতে নেই। তাহলে তারা নাকি ক্ষেপে যায়। ষড়যন্ত্রকারীরা ভেবেছিলো ২০-২১ বছর হয়ে গেছে কেউ প্রশ্ন তোলেনি, আর তুলবেও না। যেমনটা যুদ্ধাপরাধীরা এই দেশে মন্ত্রী হয়ে ভেবেছিলো তারা সময়ের পরীক্ষায় উৎরে গেছেন। তাদের কিছুই হবে না। ‘ধর্ষণের সেঞ্চুরি, একটি গুজবের আত্মকাহিনি’Ñ লেখার পর অনেক গালিগালাজ খেয়েছি। আগে জানতাম বাম ছাত্রসংগঠন যারা করেন তারা অনেক পড়াশোনা জানা এবং যুক্তি দিয়ে কথা বলেন। এইবার জানলাম তারা গালিগালাজও ভালো জানেন। জানার পরিধি আরেকটু বাড়লো। আমি কখনোই অসভ্যদের কথা গায়ে লাগাই না। আমারে যে গালি উপহার দিয়েছেন আমি সেই উপহারটা নিইনি। নোংরা উপহারগুলো আপনাদের কাছেই রয়ে গেছে। যা আপনাদের নোংরা মানসিকতাকে আরো নোংরা করবে। এটা আপনাদের প্রতি আমার উপহার। আবার কিছু বিজ্ঞজন বলেছেন, দায়িত্বশীল পদে থেকে এতোদিন পর আমার নাকি এই লেখা উচিত হয়নি। বিজ্ঞজনরা কি আমারে বলবেন, কোন কিতাবে লেখা আছে যে দায়িত্বশীল পদে থেকে গুজবের বিরুদ্ধে সত্য কথা বলা যাবে না কিংবা স্বাধীন মতপ্রকাশ করা যাবে না? কোনো কোনো সাংবাদিক ভাই বলেছেন, (যারা ধর্ষণের সেঞ্চুরি নাটকের রূপকার) আমি নাকি ক্ষমতান্ধ হয়ে লিখেছি। তাদের কে বোঝাবে ক্ষমতান্ধ হইলে কেউ কষ্ট করে লাইনের পর লাইন লিখে অসত্যের প্রতিবাদ করে না। যুক্তিতর্কে লিপ্ত হয় না। শুধু আমি কেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক সাবেক শিক্ষার্থীই মুখ খুলতে শুরু করেছেন।
তখনকার শিক্ষার্থী কবি ও অধ্যাপক শেখ হাবিবুর রহমান বাবু (https://www.facebook.com/skhabib.babu.73) বিস্তারিত একটা লেখা লিখেছেন। ওই লেখাটি পড়লে পুরো বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে। তিনিও তখন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি এটাও লিখেছেন, মানবজমিনের যে সাংবাদিক প্রথম রিপোর্টটি করেছিল, তাকে মানিক রাজনৈতিক কারণে একবার মেরেছিলো। মানবজমিনের রিপোর্টের পরদিন বিএনপির মুখপাত্র দিনকাল জসিম উদ্দিন মানিকের নাম জড়িয়ে নিউজ প্রকাশ করে। এরপর আর পত্রিকাকে কিছু করতে হয়নি। বাকিটা অতি বিপ্লবীরা করেছেন। তখনকার জাহাঙ্গীরনগরের সবাই জানতো বোটানিকেল গার্ডেনের ওই ধর্ষণের সাথে কারা জড়িত ছিল। সেখানে মানিকের নাম ছিল না। যারা বহিষ্কারের কথা বলছেন, তাদের জেনে রাখা ভালো ওই বহিষ্কার হয়েছিল একজন স্বঘোষিত বিপ্লবী শিক্ষককে লাঞ্ছনার জন্য এবং সেই তদন্ত যাতে ব্যাহত না হয় সেই জন্য। জাহাঙ্গীরনগরের তৎকালীন শিক্ষার্থী লায়লা মান্নান ( https://www.facebook.com/lailamannanmimi) একটা কমেন্ট করেছেন আমার আগের স্ট্যাটাসে। যা হুবুহু তুলে ধরা হলো ‘আমি তৎকালীন সময়ে নৃবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ছিলাম। অনেক শখ করে নৃবিজ্ঞান পড়তে গিয়েছিলাম। প্রতিনিয়ত আমাকে আন্দোলনে নেওয়ার জন্য রেহেনুমা অনু আর মানসের গ্যাং টানাটানি করছে। আমি ঠিক এই কথাটাই বলেছিলাম যে কে রেপ হয়েছে যেকোনো একজন মেয়ের নাম আমি জানতে চাই। আমি আজ পর্যন্ত কারো নাম পাই নাই। এই লেখাটির জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।’
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যখন বিচার করার জন্য কোনো অভিযোগকারিণী ভিকটিম পাচ্ছিল না। কার বিচার করবে, কীভাবে বিচার করবে তাই নিয়ে আন্দোলনের মুখে দিশেহারা তখন হঠাৎ করেই অনেক ধর্ষিতা পেয়ে যায়। আন্দোলনকারী মেয়েরা সমস্বরে বলতে থাকে, তারা সবাই ধর্ষিত। আর মিথ্যা বানোয়াট কথাগুলো বলেছিলো, মানিকের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ক্ষোভ থেকে এবং ঐতিহ্যবাহী সংগঠন ছাত্রলীগকে কলঙ্কিত করতে। তাদের এই বেপরোয়া কর্মকাণ্ডে কলঙ্কিত হয়েছে জাহাঙ্গীরনগরের মতো একটু স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়। যে বিশ্ববিদ্যালয়কে সবাই চিনে প্রাকৃতিক সবুজে ঘেরা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার সাংস্কৃতিক বিপ্লবের চারণ ভূমি হিসেবে। ফেসবুক থেকে