আতিক খান: ২০২০ সালের এইচএসসি পরীক্ষা বাতিল হয়েছে। এসব শিক্ষার্থীর জেএসসি আর এসএসসির ফলাফলের উপর মূল্যায়ন করে এইচএসসির ফলাফল নির্ধারিত হবে৷ এই সিদ্ধান্তে অনেকের মন খারাপ হতে পারে। বিশেষ করে যাদের জেএসসি কিংবা এসএসসির ফলাফল প্রত্যাশিত হয়নি কিংবা বেশি ভালো হয়নি অথচ এবার খুব ভালো প্রস্তুতি ছিলো৷ হয়তো এইচএসসিতে ভালো ফল করে, এদের দেশসেরা সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উচ্চশিক্ষার জন্য সুযোগ পাবার সম্ভাবনা থাকতো। তবে আমার ধারণা পরিস্থিতির বিচারে খুবই ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি ভারত, আমেরিকা কিংবা অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় কিছুটা ভালো আছে। এই পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটানোর মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া খুব বুদ্ধিদীপ্ত কিছু হতো না। প্রায় ১৪ লাখ এইচএসসি পরীক্ষার্থী, ২৮ লাখ বাবা-মা এবং কয়েক লাখ শিক্ষক কর্মকর্তা আর কর্মচারী নিয়ে একটা পাবলিক পরীক্ষার আয়োজন নিঃসন্দেহে এই মুহূর্তে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। উন্নত দেশের মতো অনলাইনেও এই পরীক্ষা বাংলাদেশে নেওয়া সম্ভব না।
এতো লাখ মানুষের আসা-যাওয়ার জন্য পাবলিক ট্রান্সপোর্টও প্রয়োজন হতো। আর এতোসব কর্মকাণ্ডের মধ্যে সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং মেনে চলা প্রায় দুঃসাধ্য। একমাস ব্যাপী এই পরীক্ষা হলে, পরীক্ষার মধ্যেই যারা করোনা আক্রান্ত হতেন তাদের আর এ বছর পরীক্ষা দেওয়া হতো না। আবার দেখা যেতো, অনেক করোনা রোগীর সেরকম সিম্পটম না থাকায় নীরবে অন্যদের মধ্যে করোনা সংক্রামিত করছে। এই পরীক্ষার্থীদের প্রায় সবাই পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত ছিলো। অর্থ্যাৎ জ্ঞানার্জনের কাজটা অনেকটুকুই হয়েছে, শুধু মূল্যায়ন বাকি ছিলো। এর ভিত্তিতে ভার্সিটিগুলোতে ভর্তি পরীক্ষা নিতে পারে। এই সিদ্ধান্তে অবশ্য অনেকে খুশিও হবে। যাদের জেএসসি আর এসএসসির ফলাফল ভালে ছিলো, তাদের খুশি হওয়া স্বাভাবিক। আবার যাদের পরীক্ষার প্রস্তুতি ভালো ছিলো না, তারাও খুশি হবে। কিছু করার নেই, বৃহত্তর স্বার্থের জন্য কখনো কখনো ক্ষুদ্রতর স্বার্থ বিসর্জন দিতে হয়। ফেসবুক থেকে