রাশিদ রিয়াজ : ভারতে কোভিডভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ানোর মাঝে ইতিমধ্যে দু’বার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছে মোদী সরকার। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন তা পর্যাপ্ত নয়। তাই আগামী উৎসব মৌসুমের আগে ফের আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণায় যাচ্ছে মোদী সরকার। ভারতে এর আগে লকডাউন ঘোষণা হতেই প্রথমে ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি রুপির প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তার পর আত্মনির্ভর ভারত প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। এখন ফের ভারতের অর্থমন্ত্রণালয় শহরে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে ৩৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প ঘোষণা করতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই সঙ্গে বড় মাপের পরিকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের ঘোষণা হতে পারে। তা ছাড়া চলতি আর্থিক বছরের মধ্যে অন্তত ২০ থেকে ২৫টি বড় প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করতে পারে মোদী সরকার। দি ওয়াল
এ ছাড়া ভারতের গ্রামাঞ্চলে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি, কৃষি পণ্য বিপণনের নতুন ব্যবস্থা, রেশনের মাধ্যমে বিনামূল্যে খাদ্য সরবরাহ, সরাসরি নগদ হস্তান্তর তথা ডাইরেক্ট ক্যাশ ট্রান্সফার সংক্রান্ত কিছু যোজনাও ঘোষণা করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। ভারতে এ বছর দুর্গাপুজো শুরু হচ্ছে অক্টোবর মাসের তৃতীয় সপ্তাহে। সূত্রের মতে, সম্ভবত তার আগেই এই সব প্রকল্প ঘোষণা করবে কেন্দ্রীয় সরকার। গ্রামীণ কর্মসংস্থানের জন্য বর্তমানে যে একশ দিনের প্রকল্প রয়েছে, সেই ধাঁচে শহরে কর্মসংস্থানের জন্য একটি প্রকল্প চালুর দাবি বহুদিন ধরেই রয়েছে সর্বভারতীয় স্তরে অর্থনীতিবিদদের পক্ষ থেকে। এক সময়ে মনমোহন সিং সরকারও তা বিবেচনা করেছিল। একশ দিনের কাজের মতোই শহরে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি জন্য প্রকল্পের কথা এ বার ঘোষণা করা হতে পারে। তবে গ্রামীণ কর্মসংস্থান প্রকল্পে যেমন স্থায়ী সম্পদ তৈরির কথা বলা ছিল না, এ ক্ষেত্রে তেমন হবে না।
ভারতে সরকার স্থায়ী পরিকাঠামো তথা সম্পদ তৈরি লক্ষ্যে এই প্রকল্প ঘোষণা করতে পারে। এ ব্যাপারে আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।এনআরইজিএ-র সঙ্গে প্রস্তাবিত এই প্রকল্পের মৌলিক আরও একটি ফারাক থাকতে পারে। তা হল, একশ দিনের কাজের প্রকল্প আইন করে বাস্তবায়িত করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, কাজ পাওয়া গ্রামের মানুষের আইনি অধিকার। প্রস্তাবিত নতুন প্রকল্পের ক্ষেত্রে তা হবে না। প্রশাসনিক নির্দেশের মাধ্যমে এই প্রকল্প শুরু হবে। ভারতে মোদী সরকারের মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কৃষ্ণমূর্তি সুব্রহ্মণ্যম আগেই বলেছেন, কোভিড ভ্যাকসিন বাজারে আসার সময়ে যদি একটি আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করা যায় তা হলে কার্যকরী হতে পারে। উৎসবের মৌসুমে মোদী সরকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করলে বাস্তবে পরিকাঠামো নির্মাণের কাজ শুরু হতে অন্তত জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মাস গড়াবে।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন ততদিনে ভ্যাকসিন চলে আসার আশা রয়েছে। অর্থাৎ সবদিক ভেবেচিন্তে মোদী সরকার এই পদক্ষেপ নিচ্ছে। তবে মোদী সরকারের এই সব বিগ টিকিট ঘোষণার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে বিরোধীরা আগেই প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের মতে, এগুলো শুনতে যতটা ভাল লাগে বাস্তবে দেখা যায় তা আকারে বহুগুণে ছোট। একেবারে লোক দেখানো। গত ৬ বছরে সরকার এমন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি যাতে আম আদমির সুরাহা হয়। বরং লাভের লাভ হয়েছে পুঁজিপতিদেরই।