রাশিদুল ইসলাম : [২] মার্কিন সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) জানিয়েছে, অক্টোবরের আগে থেকেই এই ফ্লু-এর প্রকোপ আরও বাড়বে। শীতের সময় কোভিডের সংক্রমণ বাড়বে। মারণ ভাইরাসের সঙ্গেই এবার সংক্রামক ফ্লুয়ের আতঙ্কও প্রবল হচ্ছে। এমনিতেই শীতের আগে এই ফ্লু বা ভাইরাল ফিভার জাঁকিয়ে বসে মার্কিন মুলুকে। সেই সঙ্গে ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রকোপ বাড়ে। নিউমোনিয়ায় প্রতিবছর ৩৭ হাজার মার্কিন নাগরিক মারা যায়। কোভিডকালে আরও দুই ভাইরাসজনিত রোগের উপদ্রবে এখন ‘টুইনডেমিক’ পরিস্থিতিতে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
[৩] মার্কিন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা, এপিডেমোলজিস্ট অ্যান্থনি ফাউচি বলেছেন, অক্টোবর থেকেই ‘ফ্লু সিজন’ শুরু হয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্রে। আর ফ্লু ও কোভিড সংক্রমণের উপসর্গ প্রায় একই। জ্বর, সর্দি-কাশি, শ্বাসের সমস্যা, পেশীতে ব্যথা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে শুরু করে।
[৪] জন হপকিনস ইউনিভার্সিটির রিপোর্ট বলছে, প্রতিদিন নতুন সংক্রমণ ধরা পড়ছে ৪০ হাজারের কাছাকাছি। নিউ ইয়র্ক, নিউ জার্সি করোনা সংক্রমণের এপিসেন্টার হয়ে উঠেছে। হাসপাতাল-নার্সিংহোমগুলিতে রোগীদের ঠাসাঠাসি ভিড়। নর্থ ডাকোটা, উইসকনসিনে গত ৬ মাস ধরেই পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। দক্ষিণ ক্যারোলিনা ও উটাহ’তে জুলাই মাস থেকে কোভিড সংক্রমণ ফের বৃদ্ধি পেয়েছে। একেই কোভিডের দ্বিতীয় ধাক্কা বলা হচ্ছে।
[৫] সিডিসি-র ডিরেক্টর রবার্ট রেডফিল্ড বলেছেন, কোভিড-১৯ ও মৌসুমি ভাইরাল জ্বর এই দুইয়ের প্রকোপই ফের মহামারীর চেহারা নিতে পারে যুক্তরাষ্ট্রে।
[৬] সিডিসি জানিয়েছে, ইউনিভার্সিটির ছাত্রছাত্রী ও শিশুদের মধ্যেও ভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েছে। ‘আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ পেডিয়াট্রিক্স’ সংস্থার তথ্য বলছে, গত এক মাসে প্রায় চার লাখ শিশু কোভিডে আক্রান্ত হয়। গত জুলাইতে যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড সংক্রমণ ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। ইতিমধ্যে কোভিডে মারা গেছে ২ লাখ মার্কিন নাগরিক।
[৭] সিডিসির ভাইস চেয়ারম্যান সিয়ান ও’ল্যারি জানিয়েছেন, এই সংখ্যাটি যথেষ্ট উদ্বেগের। তিন মাসে ৯০টি শিশু করোনায় মারা গেছে। শতাংশের হিসেবে এই সংখ্যা হয়তো খুব কম, তবে বিপদ মোটেও কম নয়। ল্যারি জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী শিশুদের পক্ষে সবচেয়ে বিপজ্জনক অসুখ ইনফ্লুয়েঞ্জা। এই অসুখের প্রভাবে প্রতি বছর গড়ে ১০০ শিশুর মৃত্যু হয়। সেখানে কোভিডে তিনমাসে ৯০টি শিশুর মৃত্যু রীতিমতো দুশ্চিন্তার।
[৮] গত কয়েক মাসে যুক্তরাষ্ট্রে কোভিডের পরীক্ষা অনেক পরিমাণে বেড়েছে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই সংক্রমিতের সংখ্যাও অনেকটা বেশি। তাদের মধ্যেই পড়ছে শিশুরা। সংক্রমণ যত বেশি ছড়াবে, স্বাভাবিকভাবেই তত বেশি শিশু করোনায় সংক্রমিত হবে। যদিও এখনও পর্যন্ত গুরুতর উপসর্গ দেখা গিয়েছে খুবই কম শিশুর মধ্যে, হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে মাত্র ৫ শতাংশ আক্রান্ত শিশুকে। কিন্তু যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আপনার মতামত লিখুন :