ডেস্ক রিপোর্ট: মাথার চুল দিয়ে প্রাইভেটকার টানছেন এক যুবক, এমন দৃশ্য দেখে অবাক হয়েছিল পুরো দেশ। নব্বইয়ের দশকে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে প্রচারিত হয়েছিল সেই দৃশ্য। এরপরই দেশব্যাপী পরিচিতি লাভ করেন তৎকালীন জগন্নাথ কলেজের ছাত্র আব্দুস সবুর। কিন্তু সেই সবুর এখন কেমন আছেন?
ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস! আব্দুস সবুর তার কৃতিত্ব দিয়ে সকলের মন জয় করলেও জীবনের বাস্তবতার কাছে হার মেনে তিনি এখন পাগল। মেধাবী ছাত্র সবুর বিশেষ কৃতিত্ব ও অতীত ভুলে বর্তমানে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন। চিকিৎসার অভাবে পাগল হয়ে ঘুরছেন রাস্তায় রাস্তায়।
১৯৯৬ সালে জগন্নাথ কলেজের ইতিহাস বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র থাকাবস্থায় তার বিশেষ কর্মের জন্য ডাকা হয় ইত্যাদির অনুষ্ঠানে। ইত্যাদি অনুষ্ঠানে সে মাথার চুল দিয়ে অনায়াসে একসঙ্গে ৪টি মাইক্রো টেনে নিয়ে সকলের মন জয় করেছিলেন। কিন্তু ৩য় বর্ষের পরীক্ষা দেয়ার কিছুদিন পরেই সবুরের মাথায় সমস্যা দেখা দেয়। সেই থেকে আব্দুস সবুর বর্তমানে ৪৫ বছর বয়সে পাগল হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
আব্দুস সবুরের বোন সেলিনা আক্তার বলেন, আর্থিক সমস্যার কারণে আমার ভাইকে চিকিৎসা করাতে পারিনি। পরে ২০০১ সালে আমার চাচারা সবুরকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসা করার জন্য নিয়ে যায়। সেখানে ডাক্তাররা বলে, মাথার চুল দিয়ে গাড়ি টানার ফলে সবুরের ঘাড়ের একটা শিরা পাম্পের মতো হয়ে গেছে। ওই শিরা ছিঁড়ে গেলে হয়তো বাঁচানো যেত না। শিরাটা ফাঁকা হওয়ার ফলে তার মস্তিস্কে এই সমস্যা হয়েছে।
সেলিনা আক্তার আরো বলেন, নিয়মিত চিকিৎসা করালে আবার সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে সবুর। সেই সময় সবুরকে একটা ইঞ্জেকশন দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয় চিকিৎসকরা। বাড়ি আসার পর কিছুদিন সবুর সুস্থ থাকে। পরবর্তীতে আর্থিক সমস্যার কারণে সবুরকে আর পাবনায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। তার কিছুদিন পরে সবুর পাগল হয়ে যায়।
আব্দুস সবুর সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বল্লী ইউনিয়নের বল্লী গ্রামের মৃত আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে। আব্দুস সবুর বল্লী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন। এরপর বল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি। সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে জগন্নাথ কলেজের ইতিহাস বিভাগে চান্স পেয়ে ভর্তি হয়।
আপনার মতামত লিখুন :