শারফিন শাহ: রবীন্দ্রনাথ তার তিন কন্যারই বাল্য বিবাহ দিয়েছিলেন। বড় কন্যা মাধুরীলতা ওরফে বেলার বিয়ে দেন ১৪ বছর বয়সে, মেজো মেয়ে রেণুকা ওরফে রাণীর বিয়ে দেন ১০ বছর বয়সে, ছোট মেয়ে অতসীলতা ওরফে মীরার বিয়ে দেন বয়স ১৪ পার হতেই। তিনি তার কোনো মেয়েকেই উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করার আগ্রহবোধ করেন নি। অথচ কবির ভাইবোনের মেয়েরা উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে বিয়ের পিড়িতে বসেন। কবির ভাতিজি ইন্দিরা দেবীর বিয়ে হয় ২৬ বছর বয়সে; তিনি সুশিক্ষিতা ছিলেন। কবির ভাগনী সরলা দেবীর বিয়ে হয় ৩৩ বছর বয়সে, তিনি ইংরেজি সাহিত্যে গোল্ড মেডেলিস্ট। আরও অনেকেই উচ্চশিক্ষার বিজয়মাল্য পরতে সমর্থ হয়েছিলেন। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ তার কন্যাদের দুঃখের অকূল পাথারে নিক্ষেপ করেন। মূলত তার জন্যেই তার কন্যারা সারাজীবন দুঃখকষ্ট ভোগ করেছেন। অথচ এই রবীন্দ্রনাথের গানে, কবিতায়, প্রবন্ধে, নাটকে, গল্পে, উপন্যাসে এসেছে নারীর ক্ষমতায়ন, অধিকার ও সাম্যের কথা। নিজের মেয়েদের বেলায়ই তার হদিস নেই। রবীন্দ্রজীবনীকার প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায় বলেন, যিনি লেখায় নারীকে এমন মর্যাদা দিলেন তিনি নিজের কন্যাদের ওপর কেন এমন আচরণ করলেন তা বিস্ময়কর। রবীন্দ্রনাথের এমন স্ববিরোধিতায় বিস্মিত হওয়ার কারণ থাকতে পারে, তবে তিনি লেখক হিসেবে যা বলার সেই সত্যটুকু বলে গেছেন। বলা যায়, নিজে ত্যাগ স্বীকার করে অন্যদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার হয়েছেন। এটাই লেখকের জীবনচক্র। শেক্সপিয়ার, টলস্টয়ও এমন স্ববিরোধী ছিলেন, নিজেরা অভিজাততন্ত্র সমর্থন করলেও লেখায় অভিজাত সম্প্রদায়ের মুণ্ডুপাত করেছেন। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :