শিরোনাম
◈ সাতক্ষীরায় এমপি দোলনের গাড়িতে হামলা ◈ চুয়াডাঙ্গার পরিস্থিতি এখন মরুভূমির মতো, তাপমাত্রা ৪১ দশমিক  ৫ ডিগ্রি ◈ ফরিদপুরে পঞ্চপল্লীতে গণপিটুনিতে ২ ভাই নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১ ◈ মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ ভারতে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোট পড়েছে ৫৯.৭ শতাংশ  ◈ ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী: ওয়াশিংটনে অর্থমন্ত্রী ◈ দাম বেড়েছে আলু, ডিম, আদা ও রসুনের, কমেছে মুরগির  ◈ প্রার্থী নির্যাতনের বিষয়ে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, হস্তক্ষেপ করবো না: পলক ◈ ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি কূপ খনন শেষ করতে চায় পেট্রোবাংলা ◈ বিনা কারণে কারাগার এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের স্থায়ী ঠিকানা: রিজভী

প্রকাশিত : ২৯ আগস্ট, ২০২০, ০৫:২১ সকাল
আপডেট : ২৯ আগস্ট, ২০২০, ০৫:২১ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দীপক চৌধুরী : মানবাধিকার না থাকলে সভ্যতা থাকে না

দীপক চৌধুরী : সরকার কী বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সমর্থন করে নাকি করে না- এ বিতর্ক দীর্ঘদিন থেকেই চলছে। আর এখন এটা ভীষণভাবে চলে এসেছে সামনে। মেজর অব. সিনহার মৃত্যুর পর কিন্তু এ ‘ইস্যুটি’ উত্তপ্ত। আগেও বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারকে প্রশ্নবানে জর্জরিত করা হয়েছে। কিন্তু যারা অপকর্মগুলো করে থাকে তাদের ধরা হতো কি হতো না এই প্রশ্নও এখন জোরালো। এটা তো পরিষ্কার যে, বিবেকবান কারো পক্ষে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সমর্থন করার প্রশ্নই ওঠে না। শেখ হাসিনা তো সমর্থন করতে পারেনই না করেননি কখনো, কোনোদিন, কোনোকালে। যারা আইন করে হত্যাকাণ্ডের বিচার বন্ধ করতে পারে তাদের মুখে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বা গণতন্ত্রেও কথা শোভা পায় না। যে অপরাধী বা যে সন্ত্রাসী অথবা যে দলেরই নেতাকর্মীরা ক্রসফায়ারের শিকার হোক না কেন, আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে জবাবদিহি করতে হবে। নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনার পর অনেকেই বলেছিলেন বিচার হবে না। পত্রিকাগুলো খুলুন, দেখুন না? সেই দাম্ভিকতা কিন্তু চূর্ণ হয়েছে। তিন সেনা কর্মকর্তার মৃত্যুদণ্ডের রায় হয়েছে। বিডিআরকে নিয়ে অনেক শক্তি দেখানোর চেষ্টা হয়েছিল। বিশ্বকাঁপানো ঘটনা এটি। আমাদের মানসিকভাবে পীড়িত করার চেষ্টা করা হয়েছে। অবিশ্বাসস্য ও অনেক বড় ঘটনা। এটা ছিল পিচাশের কাণ্ড। কিন্তু তার বিচার হয়েছে। অপরাধী যে দলেরই হোক তাদের প্রশ্রয় দেওয়া হবে না এটা বঙ্গবন্ধুকন্যার সরকারের সিদ্ধান্ত।

কে না জানে, এদেশে রাজনীতি আর নির্বাচনকে কারা হিংসাত্মক করেছিল। রাষ্ট্রীয়ভাবে এই দুটোকে নিয়ে ইচ্ছামতো ‘সাপলুডু’ খেলা হয়েছিল! ১৯৭৫-এ কিন্তু বঙ্গবন্ধুর নাম-গন্ধ এদশ থেকে নির্বাসনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। ঘাতকদের আশা পূর্ণ হয়নি।

এখন আমাদের দেশ কেমন আছে! আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত না হলে গণতন্ত্র থাকে না, গণতন্ত্র না থাকলে মানবাধিকার থাকে না, মানবাধিকার না থাকলে সভ্যতা থাকে না। সভ্যতা না থাকলে আমরা থাকি না। পদ্মা সেতু হয় না, মেট্রোপলিটন রেল হয় না, ৬৮ বছর পর ছিটমহল সমস্যার ঐতিহাসিক সুন্দর সমাধান হয় না। আরো অনেক কিছু । আমাদের রিজার্ভ এখন নাকি ৩৮ দশমিক ৯০ বিলিয়ন ডলার। এককথায় অবিশ্বাস্য। বিএনপি নামের দলটির নেতারা সবসময়ই বলে বেড়াচ্ছেন, এদেশে ভোট চুরি আর ভোট ডাকাতি করা এই সরকারের অভ্যাস। প্রশ্ন জাগে, তারা তা যদি নিশ্চিতই হন তাহলে উপনির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন কেন? জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলেন কেন? নানান বিতর্ক। নানান ‘পেনিক’ সৃষ্টি করা হয়। কোভিড-১৯-এও গুজব তো আছে। বিচার বিভাগ স্বাধীন এবং শক্তিশালী না হলে, দেশের গণতন্ত্র এবং সুশাসন অর্থবহ হয় না। বিচার বিভাগকে কার্যকরভাবে স্বাধীন এবং শক্তিশালী করার ভেতর থেকেই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। আর সভ্যতা না থাকলে আমাদের যা কিছু অর্জন সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে। সরকার বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে কী করে না তা বিচার করতে হলে প্রথমেই বলবো, মানসিকতা পরিবর্তন করা জরুরি। আমার পক্ষে ‘রায়’ আসলে ঠিক আছে, নইলে ঠিক নেই, বিচার বিভাগ নিয়ে এই প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। কিন্তু এখান থেকে বিএনপি বেরিয়ে আসতে পেরেছে? আসলে ষড়যন্ত্রীরা বসে নেই।

এই শোকের মাসে বিএনপির বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে কথা বলে কীভাবে? এদেশের রাজনীতি আর নির্বাচনকে হিংসাত্মক করা হয় ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে। বিতাড়িত করা হয় গণতন্ত্র। শান্ত রাজনৈতিক পরিবেশকে অশান্ত আর অস্থিতিশীল করে তোলা হয়। সেই কালোরাতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানা বিদেশে ছিলেন বলেই প্রাণে রক্ষা পান। ১৯৮১ এর ১৭ মে দেশে ফেরার পর আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হিসেবে রাজনীতিতে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা, মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য বাস্তব বুদ্ধিবোধ ও জ্ঞানের প্রখরতায় গড়ে তোলেন জনতার গণআন্দোলন। তিনি প্রথমে সংসদের বিরোধীদলীয় নেত্রী হন। ১৯৯৬ সালে সরকার গঠন করেন। এরপর ২০০৯ থেকে নির্বাচনে টানা তৃতীয়বার দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। মোট চারবার। পিতা-মাতা ও ভাইহারা শেখ হাসিনা সবরকম কষ্ট ও সুখ-আনন্দ-ভোগ-বিলাস ত্যাগ করে এদেশের মানুষের কাতারে দাঁড়িয়েছেন। ১৯৭৫ থেকে ২০২০ এই সুদীর্ঘ সময় এদেশের নানা প্রতিকূল পরিবেশেও কোনো ভয় বা অপশক্তি তাঁর মাথা নোয়াতে পারেনি। পিতার পর তাঁকেও হত্যার অপচেষ্টা চালানো হয়। হত্যার টার্গেট করা হয় ১৯ বার। সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, যুদ্ধাপরাধীর বিচার, নারকীয় বিডিআর হত্যাযজ্ঞের বিচার করতে সক্ষম হয়েছে তাঁর সরকার। যুদ্ধাপরাধী-রাজাকারদেও বিচার হয়েছে ও হচ্ছে। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিচার হয়েছে। জনগণের সকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ জননেত্রী শেখ হাসিনাকে টার্গেট করার মূল কারণ, কোনো লোভ বা ভয় দেখিয়ে তাঁকে কোনোভাবেই দেশপ্রেম থেকে দমানো যায় না। পৃথিবীর ইতিহাসে যে কয়জন সৎ, মানবতাবাদী, গণতন্ত্রপ্রেমী, মহান রাষ্ট্রনায়ক বা সরকারপ্রধান জন্মগ্রহণ করেছেন তিনি তাঁদের অন্যতম। মানব কল্যাণের অগ্রদূত, বাঙালির সভ্যতা-সংস্কৃতিতে জাগ্রত তিনি। রাজনৈতিক দূরদর্শিতায় অসাধারণ দক্ষ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকৃত অর্থেই দেশরত্ন।

লেখক : উপসম্পাদক, আমাদের অর্থনীতি ও কথাসাহিত্যিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়