সুজন কৈরী : [২] ফেসবুক প্রতারণার সাথে জড়িত নাইজেরিয়া ও ঘানার চার নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডির অর্গানাইজভ ক্রাইম ইউনিট। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- যিসম, মৱাে মহাম্মদ, মরিসন ও এহুনী। তাদের মধ্যে এহুনী স্টুডেন্ট ভিসায় বাংলাদেশে এসেছেন।
[৩] বুধবার সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি জানিয়েছে, রাজধানীর দক্ষিণ খানের কাউলা ও বসুন্ধরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৬টি ল্যাপটপ , বেশ কিছু সিম এবং ৬টি বিভিন্ন মডেলের মােবাইল ফোনসেট উদ্ধার করা হয়েছে । এ বিষয়ে একজন প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগী বাদি হয়ে কাফরুল থানায় মামলা করেছেন।
[৪] সিআইডি জানায়, প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগীর অভিযােগের ভিত্তিতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা অভিনব কায়দায় বিপরীত লিঙ্গের ব্যাক্তিদের সঙ্গে ফেসবুকে বন্ধুত্ব তৈরি করে। বন্ধুত্বের এক পর্যায়ে একটি তথাকথিত মেসেঞ্জার আইডি থেকে শুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্টসহ পার্সেল উপহার দেয়ার প্রস্তাব দেয় এবং মেসেঞ্জারে এসব মূল্যবান সামগ্রির এয়ার লাইনস বুকিং এর ডকুমেন্ট পাঠায় । এরপর এসব গিফট বক্সে কয়েক মিলিয়ন ডলারের মূল্যবান সামগ্রি রয়েছে বলে তারা ভিকটিমকে অবহিত করে এবং তা কাস্টম হতে রিসিভ করতে বলে। পরে সহযােগীদের মাধ্যমে কাস্টমস কমিশনার পরিচয় দিয়ে ভিকটিমকে মূল্যবান গিফটি গ্রহনসহ শুল্ক বাবদ মােটা অংকের টাকা কয়েকটি ব্যাংক একাউন্টে পরিশােধের জন্য চাপ দেয়। গিফটি রিসিভ না করলে আইনি জটিলতার ভয়ও দেখায়। ফলশ্রুতিতে ভিকটিম তাদের দেয়া বিভিন্ন ব্যাংক একাউন্টে মােট ৫৫ হাজার টাকা জমা দেযন। একইভাবে আসামীরা পরস্পর যােগসাজশে প্রতারণার মাধ্যমে সারাদেশে অসংখ্য ভিকটিমের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা গত কয়েক মাসের মধ্যে হাতিয়ে নিয়েছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সিআইডি নিশ্চিত হয়েছে । গ্রেপ্তার বিদেশীরা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে অবস্থান করে এ ধরণের প্রতারণা করে আসলেও এদেশে তাদের অবস্থানের বৈধ কোন কাগজপত্র এবং পাসপাের্ট দেখাতে পারেনি।
[৫] অভিযানের নেতৃত্বদানকারী অর্গানাইজড ক্রাইমের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজিব ফরহান বলেন, প্রথমত তাৱা ট্যুরিস্ট, খেলােয়ার, বিজনেস ও স্টুডেন্ট ভিসায় বাংলাদেশে প্রবেশ করে। পরে পাসপোর্ট ফেলে দিয়ে স্থানীয় কিছু এজেন্টের সহায়তায় অবৈধভাবে এ ধরনের প্রতারণা শুরু করে। প্রাথমিক জ্ঞিাসাব ও তদন্তে জানা গেছে, চক্রটিকে বাংলাদেশি কতিপয় ব্যক্তি সহযোগীতা করছে। তারাই বিদেশি এ প্রতারক চক্রটিকে ব্যাংক একাউন্ট খুলে দেয়া, বাসা ভাড়া করে দেয়া ও কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয় দেয়াসহ নানাভাবে প্রতারণায় সহযোগীতা করছে।
[৬] তিনি বলেন, প্রতারক এ চক্রটির ডাচ বাংলা ও সিটি ব্যাংকসহ বেশ কয়েকটি ব্যাংকে একাউন্ট রয়েছে। ব্যাংক একাউন্টগুলাের বিষয়ে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, তারা প্রতারণার মাধ্যমে এ পর্যন্ত এক থেকে দুই কোটি টাক হাতিয়ে নিয়েছে। তবে বিস্তারিত অনুসন্ধান শেষে এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে। পাশাপাশি তাদের দেশীয় সহযােগীদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।