শিরোনাম
◈ ঈদযাত্রায় ৪১৯ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৩৮: যাত্রী কল্যাণ সমিতি ◈ অনিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল বন্ধে বিটিআরসিতে তালিকা পাঠানো হচ্ছে: তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ◈ পাবনায় হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ জলাবদ্ধতা নিরসনে ৭ কোটি ডলার ঋণ দেবে এডিবি ◈ ক্ষমতা দখল করে আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী আরও হিংস্র হয়ে উঠেছে: মির্জা ফখরুল ◈ বেনজীর আহমেদের চ্যালেঞ্জ: কেউ দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারলে তাকে সব সম্পত্তি দিয়ে দেবো (ভিডিও) ◈ চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি, হিট স্ট্রোকে একজনের মৃত্যু ◈ আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না: সুপ্রিমকোর্ট ◈ তীব্র গরমে স্কুল-কলেজ ও মাদরাসা আরও ৭ দিন বন্ধ ঘোষণা ◈ সিরিয়ায় আইএসের হামলায় ২৮ সেনা নিহত

প্রকাশিত : ২০ আগস্ট, ২০২০, ০৩:১৭ রাত
আপডেট : ২০ আগস্ট, ২০২০, ০৩:১৭ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

জ্বালানি তেলের দাম না কমলেও মান বেড়েছে

ডেস্ক রিপোর্ট : করোনাকালে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম ছিল পড়তির দিকে। তবে দেশে দাম কমেনি। এখন আবার বিভিন্ন দেশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু হওয়ায় ফের বাড়তে শুরু করেছে জ্বালানি তেলের দাম। এই পরিস্থিতিতে তেলের দাম না কমিয়ে এখন মান বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জ্বালানি বিভাগ। এতে মোটর গাড়ির ইঞ্জিন ভালো থাকবে ও পরিবেশ দূষণ কমবে বলে সরকারের তরফ থেকে আশা করা হচ্ছে। আর বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) চেয়ারম্যান বলছেন, অতীতের লোকসান পুষিয়ে নিতে পারলেই কমতে পারে জ্বালানি তেলের দাম। বাংলা ট্রিবিউন

বিপিসি যেসব জ্বালানি তেল বিক্রি করে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ডিজেল। মোট বিক্রিত জ্বালানি তেলের মধ্যে ৭০ দশমিক ১৩ ভাগই ডিজেল। এছাড়া ফার্নেস অয়েল ১০ দশমিক ৪৪ ভাগ, জেট ফুয়েল ৬ দশমিক ৫৭ ভাগ, অকটেন ৪ দশমিক ৮ ভাগ, পেট্রোল ৪ দশমিক ৮৬ ভাগ, কেরোসিন এক দশমিক ৮৬ ভাগ ছাড়াও অন্যান্য সামান্য কিছু পেট্রোলিয়াম পণ্য বিক্রি করে। ফলে মূলত ডিজেলের দাম কমা বা বাড়ার ওপর নির্ভর করে বিপিসির লাভ লোকসান।

এখানে আন্তর্জাতিক বাজার দরের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সময়ে সময়ে দাম নির্ধারণ করা হয় জেট ফুয়েলের। দেশে জেট ফুয়েলের দাম বেশি হলে উড়োজাহাজ কোম্পানিগুলো অন্য দেশ থেকে তেল নেয়। ফলে চাইলেও এটির দাম বেশি রাখা সম্ভব হয় না। অন্যদিকে সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনে কোম্পানিগুলোকে সরাসারি ফার্নেস অয়েল আমদানির সুযোগ দিয়েছে। ফলে চাইলেও এখানে নিজেদের ইচ্ছে মতো দাম হাঁকতে পারে না বিপিসি।

এর বাইরে ডিজেল, অকটেন ও পেট্রোল ব্যবহার করে সাধারণ মানুষ। যার পুরো নিয়ন্ত্রণই বিপিসির হাতে রয়েছে। কেউ চাইলেই যেহেতু তেল অন্য কোথাও থেকে কিনতে পারে না ফলে কম হোক আর বেশি হোক বিপিসির বেঁধে দেওয়া দামেই কিনতে হয়। এর মধ্যে ডিজেল বাইরে থেকে আমদানি করা হলেও পেট্রোল-অকটেনের প্রায় পুরোটাই আমাদের নিজস্ব কনডেনসেট প্রক্রিয়ায় উৎপাদন করা হয়।

বিপিসি সারা বছর লোকসানের কথা বললেও করোনাকালে বিশ্ববাজারে অব্যাহত জ্বালানির দরপতনের মধ্যে দেশে দাম কমায়নি সরকার।

বিপিসি সূত্র বলছে, ব্যারেল প্রতি ডিজেলের দাম ৭০ ডলার পর্যন্ত হলে বিপিসি ব্রেক ইভেনে (লাভ লোকসান সমতা বিন্দু) থাকে। আর ডিজেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৭০ ডলারের বেশি হলে লোকসান করে বিপিসি, আর কম হলে লাভ করে।

গত জানুয়ারিতে বিশ্বে জ্বালানি তেলের দাম ছিল ব্যারেল প্রতি ৮০ ডলার। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতেই তা ৬৫ ডলারে নেমে আসে। এই দরপতন অব্যাহত ছিল পরের মাসগুলোতে। বিশ্বে সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কমে ২০ থেকে ২২ ডলারে নেমে আসে এই তেলের দাম।

বুধবার (১৯ আগস্ট) ব্লুমবার্গের হিসাব বলছে, এখনও বিশ্বে জ্বালানি তেল ব্যারেল প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৪২ থেকে ৪৫ ডলারে। এখনও বিপিসি চাইলে তেলের দাম কমাতে পারে। কিন্তু আদৌ এই তেলের দাম কমানোর কোনও সম্ভাবনা নেই বলে জানা গেছে।

জানতে চাইলে বিপিসির চেয়ারম্যান সামছুর রহমান বলেন, ‘তেলের দাম এপ্রিল মে মাসে অনেক কমে যায়। কিন্তু মে মাসের পরে আবার তা বাড়তে শুরু করে। যদিও যে দ্রুততায় কমেছে সে দ্রুততায় বাড়ছে না। বছরের শুরুতে ব্যারেল প্রতি তেলের দাম ছিল ৮৪ থেকে ৮৫ ডলার। এটি কমে ২০ থেকে ২২ হয়ে গেছিল৷ এরপর বেড়ে এখন ব্যারেল প্রতি ৩৮ থেকে ৪৪ এর মধ্যে ওঠানামা করছে।’

তিনি বলেন, ‘দেশে তেলের দাম না কমালেও মানগতভাবে তেলের মান আমরা বাড়িয়েছে। সেসব তেল আমরা বেশি দামে এনে কম দাম বিক্রি করছি। আগে যে মানের ডিজেল আমদানি করা হতো এখন আমরা তার চেয়ে অনেক ভালো মানের আনছি। আগে আনা হতো ৫০০ পিপিএম (পার্টস পার মিলিয়ন) মাত্রার, যাতে সালফারের পরিমাণ অনেক বেশি থাকতো, যা পরিবেশের অনেক ক্ষতি করে। এখন আনা হয় ৫০ পিপিএম এর। যার দামে আন্তর্জাতিক বাজারে অনেক বেশি। কিন্তু আমরা এই ডিজেল বেশি দাম এনে একই দামে বিক্রি করছি। একইভাবে পেট্রোলের ক্ষেত্রে কনডেনসেট বিষয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন আমরা মাত্র দুটি বেসরকারি কোম্পানির মাধ্যমে কনডেনসেট বিক্রি করছি। এতে পেট্রোলের ভেজালও কমে আসবে। যদিও এখন আমরা লাভ করছি। কিন্তু মনে রাখতে হবে আমরা আগের কয়েক বছর তেলের দাম বেশি থাকায় লোকসান দিয়েছি। দামের এই ধারা অব্যাহত থাকলে লোকসান পুষিয়ে গেলে নিশ্চয়ই দাম কমানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।‘

কিছু কিছু তেলের দাম কমানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ফার্নেস অয়েলের দাম ৪২ টাকা থেকে কমিয়ে ৩৪ টাকা ৩ পয়সা করেছি। এলপিজির দাম যেটা ৭০০ টাকা ছিল সেটা কমিয়ে ৬০০ টাকা করেছি। আর বিটুমিনের দাম কিছুটা কমিয়েছি।’

প্রসঙ্গত, বিপিসি প্রতি বছর যে তেল আমদানি করে এর মধ্যে ১৫ লাখ মেট্রিক টন অপরিশোধিত। আর বাকিটা পরিশোধিত। অপরিশোধিত জ্বালানি তেল ইস্টার্ন রিফাইনারিতে পরিশোধন করা হয়। এখন বছর প্রতি ৬৫ লাখ মেট্রিক টনের মতো জ্বালানি তেলের চাহিদা রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়