জোহরুল ইসলাম, নাচোল প্রতিনিধি : [২] চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে গরীব অসহায় ও সংখ্যালঘুর বসত বাড়ি ভাঙ্গার অভিযোগ এনে ক্ষতিপূরণ দাবি চেয়ে নাচোল উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা সুলতানা সহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে এক ভুক্তভোগি। গত ২৮ জুলাই সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালত (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) এ বসতবাড়ি ভাঙ্গা সহ বাড়ির ক্ষতিপূরণ চেয়ে নাচোল উপজেলার গনইর গ্রামের মৃত:গোলাম মোহাম্মদ এর ছেলে মুকুল বাদী হয়ে এ মামলা দ্বায়ের করেন।
[৩] মামলার অন্য অভিযুক্তরা হলেন- (২) নাচোল উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মাহামুদুল হাসান (৩) ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম (৪) গনইর এলাকার মৃত:ইউনুস আলীর ছেলে খালেক (৫) জিল্লুর রহমান (৬) জিল্লুর রহমানের ছেলে ইউসুফ ও (৭) আব্দুস সালাম।
[৪] মামলার এজাহার ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গনইর গ্রামের হাল দাগ ১৬, জমির পরিমাণ ০.০৪শতক । এই জমির উপরে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছে গনইর গ্রামের মৃতঃ গোলাম মোহাম্মদের ছেলে মুকুল। মুকুলের বাড়ির দক্ষিন প্রান্তের সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত জমিতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছে মৃতঃকষ্টধর এর ছেলে রঞ্জিত বর্মন। একই এলাকার খালেক নামের (অবঃপুলিশ সদস্য) এক ব্যক্তির অভিযোগ মুকুল ও রঞ্জিত খাসজমিতে রাস্তার উপর বাড়ি করে বসবাস করছে। ওদের কারনে আমার যাতায়াতাতের ব্যাঘাত ঘটছে।
এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ২০ জুলাই সোমবার বেলা আনুমানিক এগারটার দিকে নাচোল উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা সুলতানার নির্দেশে নাচোল ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মাহামুদুল হাসান ও তহশীলদার রফিকুল ইসলাম অজ্ঞাতনামা ২৫-৩০জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে মুকুল ও রঞ্জিত বর্মনের তফশীল বর্নিত জমির উপর নির্মিত ৮০ বছরের পুরাতন বাড়িতে হামলা চালিয়ে অর্ধেক বাড়ি ঘর ভেঙ্গে ফেলে।
[৫] অন্যদিকে রঞ্জিত বর্মণের নতুন টিনের চালা ঘর ও দেওয়ালের প্রাচীর ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয় তহসিলদার রফিকুল ইসলাম। কোন নোটিশ ছাড়া এত বছরের পুরাতন বাড়ি ভেঙ্গে ফেলা ক্ষমতার চরম অপব্যবহার ও সীমাহীন দুর্নীতি বলে বাড়ি ভাঙ্গার সময় ভুক্তভোগি মুকুল ও রঞ্জিত বর্মন বাঁধা দিতে গেলে সার্ভেয়ার মাহামুদুল হাসান ও তহশলিদার রফিকুল ইসলাম একলক্ষ টাকা দাবি করে বলে, এ মুহুর্তে টাকাটা দিলেই বাড়িভাঙ্গা রোধ হবে। এটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা সুলতানার নির্দেশ।তোরা জানিস না উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা সুলতানা যেদিকে তাকায় সেদিক মরুভূমি হয়ে যাই। বাড়ির বাকি অংশ রেখে গেলাম টাকা না পেলে বাড়ির বাকি অংশ আবার ভেঙ্গে যাবে।
[৬] ঘটনার কয়েকদিন পর সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালত (চাঁপাইনবাবগঞ্জ) এ বসতবাড়ি ভাঙ্গা সহ বাড়ির ক্ষতিপূরণ ২ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা দাবি করে নাচোল উপজেলার গনইর গ্রামের মৃত. গোলাম মোহাম্মদের ছেলে মুকুল বাদী হয়ে ৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে এ মামলা দ্বায়ের করেন।
[৭] এ বিষয়ে ভুক্তভোগি মুকুল জানান,আমরা গরীব মানুষ। বাড়ির জায়গাটুকই আমাদের শেষ সম্বল। নাচোল উপজেলা নির্বাহী অফিসার গনইর গ্রামের অবঃপুলিশ সদস্য খালেকের ইশারায় এসব তান্ডব চালিয়েছে। কোন রকম নোটিশ এবং কোটের উচ্ছেদ অভিযানের আদেশ ছাড়াই এমন হীন তান্ড চালিয়েছে ইউএনও। মাননীয় প্রধান মন্ত্রী যেখানে গৃহহীনদের ও ভূূূমিহীনদের পূর্নবাসনের জন্য কাজ করছেন সেখানে কোন ধরনের সরকারি নিয়ম না মেনেই অসহায় লোকজনের বাড়ি ভাঙ্গাটা কতটুকু যুক্তিসঙ্গত! সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই কি এমন হীন তান্ডব! আমরা আদালতে নায্য বিচার পাবো বলে এ মামলা দ্বায়ের করেছি।