সালেহ্ বিপ্লব: [২] নিজেদের উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ বাংলাদেশ ও ভারতের কাছে বিক্রি করবে নেপাল। সেদেশের সরকার তাদের বিদ্যুৎ বিভাগকে এ অনুমতি দিয়েছে, এ খবর জানিয়েছে নেপালের শীর্ষ গণমাধ্যম হিমালয় টাইমস। বিবিসি বাংলা
[৩] এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গণমাধ্যমকে বলেন, বাংলাদেশও নেপাল থেকে বিদ্যুৎ কেনার ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছে। এ বিষয়ে একটি প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
[৪] তবে নেপাল থেকে এই বিদ্যুৎ সরাসরি বাংলাদেশে আসবে না। প্রতিমন্ত্রী জানান, নেপাল থেকে বিদ্যুৎ কিনে বাংলাদেশের কাছে বিক্রি করবে ভারতীয় কোম্পানি জিএমআর। আমি গত বছর নেপালে গিয়েছিলাম, তখনই আমাদের মধ্যে একটা চুক্তি সই হয়েছে।
[৫] তিনি বলেন, সরাসরি চুক্তি হচ্ছে জিএমআরের সঙ্গে। তারা সঞ্চালন লাইন তৈরি করবে, আমরা সেখান থেকে বিদ্যুৎ নেবো।
[৬] তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে বিদ্যুৎ কেনার ব্যাপারে ভোক্তা অধিকার সংগঠন ক্যাবের জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. শামসুল আলম বলেন, ‘ভারতের একটি ক্লজের কারণে বাংলাদেশ সেটা পারছে না। বিদ্যুতের আমদানি ব্যবসা ভারত তার একটি পলিসি দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করে রেখেছে। তাদের ক্লজ অনুযায়ী দ্বিপাক্ষিক চুক্তির আওতাতেই শুধু বিদ্যুৎ ব্যবসা হতে পারবে। সেই কারণে নেপাল থেকে সরাসরি বিদ্যুৎ নিতে পারার সুবিধাটা বাংলাদেশ পায়নি।’
[৭] তিনি বলেন, মাত্র দুদিন আগেই ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বন্দর ব্যবহারের সুবিধা দেয়ার ট্রান্সশিপমেন্ট চুক্তির প্রথম ভারতীয় পণ্যের জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই জায়গাটায় দর কষাকষির সুযোগ ছিলো। আমরা যেসব সুবিধা ভারতকে দিয়েছি, সেসব সুবিধার বিনিময়ে ভারত বাংলাদেশের জন্য এই ক্লজ বাতিল করতে পারতো। আমি মনে করি বাংলাদেশের এটা নিয়ে কূটনৈতিক লড়াই করা উচিত।’
[৮] বিদ্যুতের দাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য খরচ হয় ২৯ পয়সা। নেপাল থেকে সরাসরি বিদ্যুৎ আনলেও তা সাশ্রয়ী হবে।
[৯] ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, ‘বিদ্যুৎ একটা পাবলিক গুডস। বাংলাদেশে এর দাম নিয়ন্ত্রিত হয় পাবলিক রেগুলেটরি কমিশন দ্বারা। এর জন্য গণশুনানি হয়। নেপালের ইলেক্ট্রিসিটি কোম্পানি পণ্যটি বিক্রি করবে ভারতীয় একটি কোম্পানির কাছে। সেই ভারতীয় ইলেক্ট্রিসিটি কোম্পানি আবার সেই পণ্যটি বিক্রি করবে আমাদের কাছে। সেখানে নিশ্চয়ই মুনাফার বিষয় থাকবে।’
[১০] তিনি বলেন, ‘খুব স্বভাবতই এখানে দামের লজিকটা কাজ করবে নেপালের কোম্পানি যে দামে ভারতের কোম্পানির কাছে বিক্রি করবে তারা নিশ্চয়ই আমাদের কাছে আরও বেশি দামে বিক্রি করবে তা না হলে মুনাফা কীভাবে হবে?’
[১১] তার মতে, বিদ্যুতের দামের সঙ্গে ট্যাক্স ও টোল দিতে হবে। সব মিলিয়ে সরাসরি নেপাল থেকে বিদ্যুৎ না আনতে পারার বিষয়টি বাংলাদেশের জন্য কতটা লাভজনক হবে, প্রশ্ন করেন অধ্যাপক আকাশ।