অজয় দাশগুপ্ত: ডা. সাবরিনা আরিফকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নিঃসন্দেহে সু-সংবাদ। পরে কী হবে কেউ জানে না। এমন বহু কেইস আগেও দেখেছি আমরা। তাতে একথা বলা যায় না যে অচিরেই কোনো ফলাফল দেখা যাবে। এই নারীকে মার্জনা করা বা মাফ করার প্রশ্নই ওঠে না। করোনায় যখন মানব সভ্যতা এমনকি মানব জাতি থাকবে কী থাকবে নাÑ সে প্রশ্ন বিশ্ব তোলপাড় তখন মানুষকে ভুয়া সার্টিফিকেট দিয়ে এই ডাক্তার যে অপরাধ করেছে তার চেয়ে বড় পাপ আর কিছু হতে পারে না। তাকে কঠিন শাস্তি দেয়া হোক সেটা আমাদের সবার চাওয়া। কিন্তু এটা ও মানতে হবে এসব কাজ কেউ একা করতে পারে না। আজ দায় অস্বীকারের চেষ্টা করলেও এটা সবাই জানে কারা মদদ দিয়েছিল, কারা পেছনে থাকলে এ ধরনের অপরাধ করা করে পার পাওয়া সম্ভব। কিন্তু আমার লেখার কারণ ভিন্ন।
সামাজিক মিডিয়ায় যেসব মন্তব্য আর ছবি দেখছি তাতে সত্যি মনে হচ্ছে, আমাদের বিকৃতি আজ চরমে। অপরাধীদের নিয়ে ট্রল করা এক বিষয় আর তাকে পুঁজি করে যৌনতা আর কুৎসিত মন্তব্য করা কি এক বিষয়? ডাক্তার সাবরিনার অপরাধ যতো দাগ কেটেছে তারচেয়ে বেশি মনে দোলা দিয়েছে তার ফিগার। মানুষের রুচি ও বিকৃতি যে কোন পর্যায়ে তার নমুনা হলো সব ট্রলের বিষয় একটাই, সেটা সাবরিনার বুক। কোন নারীর বুক উন্নত বা উঁচু বা কার বুক সমান্তরাল কিংবা নীচু সেটা কি এখানে বিবেচ্য বিষয়? যতোগুলো ছবি আমি সামাজিক মিডিয়ায় দেখেছি তার বেশীরভাগ সাবরিনার ব্যক্তিগত এ্যলবাম থেকে নেয়া। সেখানে তার খোলামেলা বা নিবিড় ছবিগুলো আপনারা যে ভাইরাল করলেন সেটাও কি অপরাধ না? তার শরীর ও আবেদনকে যৌনতার উস্কানী হিসেবে ব্যবহার করা ও অপরাধতুল্য।
সমাজে ন্যায় আর বিচার প্রতিষ্ঠা করার জন্য লড়াই করার নামে আপনারা যে বিকৃত রুচি আর অপরাধের চিহ্ন রাখলেন তাও কি নির্দোষ কিছু? জানি কারো কিছু হবে না। বরং সাবরিনার উন্নত বুকের ছবি ডাউনলোড করে অনেকে রাতের ঘুম হারাম করবেন। কারোকারো মৈথুনের কাজেও লাগতে পারে এসব ছবি। যে সমাজে এমন বিকৃত মানসিকতা সে সমাজে সাবরিনা জন্মাবে নাতো কি গোলাপ জন্মাবে? ডাক্তার সাবরিনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির পাশাপাশি এমন জঘন্য প্রতিক্রিয়ার ও বিচার হওয়া ও প্রয়োজন মনে করি। ফেসবুক থেকে