জেরিন আহমেদ: [২] করোনা প্রতিরোধে অন্যান্য দেশের ন্যায় ফিলিপাইনেও লকডাউন জারি করা হয়েছে। কিন্তু এর প্রভাবে দেশটির প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে বলে সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান। করোনা প্রতিরোধে অন্যান্য দেশের ন্যায় ফিলিপাইনেও লকডাউন জারি করা হয়েছে।
[৩] ফিলিপাইনের স্বাস্থ্যকর্মীদের বরাতে গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে জানানো হয়, করোনা প্রতিরোধে দেশটিতে গত মার্চ মাসে কঠোর লকডাউন জারি করা হয়। এতে যোগাযোগব্যবস্থা প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। রোগী বা স্বাস্থ্যকর্মীরাও অনেকে হাসপাতালে যেতে পারেননি। যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে দেশটির নানা এলাকায় জন্মনিরোধক ওষুধের সংকট দেখা দিয়েছে। সূত্র: বিডি জার্নাল, গার্ডিয়ান, দ্য টাইমস
[৪] প্রতিবেদনে বলা হয়, ফিলিপাইনে এখন পর্যন্ত ৩৫ হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষ করোনায় সংক্রমিত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ হয়েছে দেশটির রাজধানী ম্যানিলায়। করোনায় সংক্রমিত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ২৪৪ জনের। এই ভাইরাস প্রতিরোধে দেশটিতে কঠোর লকডাউন জারি করা হয়। এতে গণপরিবহন বন্ধ হয়ে যায়। সীমিত পরিসরে জন্মনিয়ন্ত্রণ সেবা চালু থাকলেও তা খুব একটা কার্যকর হয়নি। এ ছাড়া যোগাযোগব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ার কারণে জন্মনিরোধক সংকটে পড়ে দেশটি। বিশেষ করে রাজধানী থেকে দূরের দ্বীপপ্রদেশ প্রত্যন্ত গ্রামে এই সংকট চরম আকার ধারণ করেছে।
[৫] ইউনিভার্সিটি অব দ্য ফিলিপাইনস পপুলেশন ইনস্টিটিউট ও ইউএনএফপিএ বলছে, করোনা মহামারির কারণে নারীরা অপরিকল্পিতভাবে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছেন। এ কারণে আগামী বছর স্বাভাবিক শিশু জন্মের পাশাপাশি প্রায় ২ লাখ ১৪ হাজার অতিরিক্ত শিশুর জন্ম হবে দেশটিতে। এতে সব মিলিয়ে আগামী বছর দেশটিতে ১৯ লাখ শিশুর জন্ম হবে, যা গত ২০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চসংখ্যা।
[৬] ইউএনএফপিএ বলছে, কোভিড-১৯ মহামারি সারা বিশ্বের প্রজনন স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। এর কারণে বিশ্বে ৭০ লাখেরও বেশি অনাকাঙ্ক্ষিত শিশুর জন্ম হবে।
[৭] প্রতিবেদনে জানানো হয়, করোনার কারণে লকডাউন জারি হওয়ায় বিশ্বে পারিবারিক সহিংসতাও ব্যাপক হারে বাড়ছে। ইন্টারন্যাশনাল প্ল্যান্ড প্যারেন্টহুড ফেডারেশনসের পূর্ব, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও ওশেনিয়া অঞ্চলের পরিচালক তোমোকো ফুকুদা বলেন, দীর্ঘ লকডাউনের কারণে মানুষ এখন ঘরবন্দী হয়ে আছে। মানুষ তাঁদের যৌনস্বাস্থ্যের বিষয়ে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারছেন না। এতে পারিবারিক সহিংসতা বাড়ছে। ঘরবন্দী মানুষ বাইরে বের হতে না পারায় তা অনেক কিছুর ওপর প্রভাব ফেলছে, বিশেষ করে বাড়িতে থাকা নারীদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।