এএইচ রাফি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: [২] পরিবারের সুখের কথা ভেবে দেড়যুগ আগে সৌদি আরবে পাড়ি দিয়েছিলেন মোহাম্মদ আলমগীর (৫১)। যে পরিবারের সুখের কথা ভেবে প্রবাসে দীর্ঘদিন দিন থেকে ঘাম ঝড়িয়েছেন, অথচ সেই স্ত্রী তাকে সম্পত্তির জন্য হত্যা করতে চেয়েছিলেন। মোহাম্মদ আলমগীর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার রামরাইল ইউনিয়নের উলচাপাড়া গ্রামের মৃত সিদ্দিক মোল্লার ছেলে। শনিবার (২৭জুন) সকালে আলমগীরকে নিজ ঘরে তালা মেরে ফুটন্ত গরম পানি ঢেলে দেয় স্ত্রী নাজমা বেগম। পরে খবর পেয়ে প্রতিবেশিরা তাকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
[৩] রোববার দুপুরে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে অসুস্থ অবস্থায় মোহাম্মদ আলমগীর ও তার ভাই-বোনেরা সাংবাদিকদের জানান, গত ১৮বছর আগে তিনি সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়েছিলেন। দেশে স্ত্রী নাজমা বেগম ছাড়াও তার ৫টি কন্যা সন্তান রয়েছে। এদের মধ্যে বড় মেয়েটিকে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। ছুটি পেলে মাঝে দেশে আসতেন। গত ৫ মাস আগে সৌদি আরবে নিজ কর্মস্থলে অসুস্থ হয়ে প্যারালাইজড হয়ে যায় আলমগীর। সেখানেই চিকিৎসা চালিয়ে আসছিলেন। বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের পাদুর্ভাব শুরু হওয়ার আগে অসুস্থ অবস্থায় দেশে ফেরেন আলমগীর। প্যারালাইজড হওয়ায় নিজ ঘরেই কাটছিল তার দিন।
[৪] তারা আরো জানান, মোহাম্মদ আলমগীর প্যারালাইজড হয়ে বিছানায় পড়ে থাকায় স্ত্রী নাজমা ও বড় মেয়ের ধারণা ছিল, যদি আলমগীর মারা যায় তাহলে তার যতটুকু সম্পদ আছে তা অন্যরা নিয়ে যাবে। এই ধারণা থেকে অসুস্থ আলমগীরের উপর চলতে থাকে মানসিক নির্যাতন। তাকে স্ত্রী ও সন্তান চাপ দিতে থাকে সম্পদ লিখে দিতে। এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার সকালে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে আলমগীরের থাকার কক্ষে বাইরে দিয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয় স্ত্রী নাজমা। এরপর চুলা থেকে ফুটন্ত গরম পানি নিয়ে এসে তালা খুলে ঘরে প্রবেশ করে গোসলের বড় মগ দিয়ে প্যারালাইজড আলমগীরের উপর ঢেলে দেয় সেই ফুটন্ত পানি। এতে ঝলসে যায় আলমগীরের শরীর। তার আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। এরই মাঝে পালিয়ে যায় তার স্ত্রী নাজমা বেগম। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া প্রস্তুতি চলছে।
[৫] সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি। কিন্তু এই সংক্রান্ত কোন লিখিত অভিযোগ এখনো পাওয়া যায়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সম্পাদনা: সারোয়ার জাহান
আপনার মতামত লিখুন :