শিরোনাম
◈ পরিচয় জানা গেল পুরান ঢাকায় ভূমিকম্পে নিহত ৩ জনের  ◈ মৃত্যুদণ্ড, নিষেধাজ্ঞা ও পলাতক নেতৃত্ব, নেই অনুশোচনাও—কোন পথে ফিরবে আওয়ামী লীগ? ◈ ঢাকার পুরোনো ভবনগুলোর ৯০ ভাগই বিল্ডিং কোড মানে নাই: রিজওয়ানা হাসান ◈ নরসিংদী কেন ভূমিকম্পের কেন্দ্র? ◈ ১০০ বছর বড় কম্পন নেই—আজকের ভূমিকম্প বড় বিপদের ইঙ্গিত, বলছেন বিশেষজ্ঞরা ◈ বাংলাদেশ ম্যাচের আগে জার্মানিকে উড়িয়ে দিলো থাইল্যান্ড  ◈ আয়ারল‌্যান্ডের বিরু‌দ্ধে বিশাল লিড নেওয়ার পথে বাংলাদেশ  ◈ ওয়াশিংটন ডিসিতে ট্রাম্পের ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন স্থগিত করলেন বিচারক ◈ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপার্সনের সৌজন্য সাক্ষাৎ ◈ বেনাপোল সীমান্তে বিপুল পরিমানে বৈদেশিক মুদ্রাসহ ভারত ফেরত যাত্রী আটক

প্রকাশিত : ২১ নভেম্বর, ২০২৫, ০৭:২১ বিকাল
আপডেট : ২১ নভেম্বর, ২০২৫, ০৮:৪১ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নরসিংদী কেন ভূমিকম্পের কেন্দ্র?

দেশে আজ সকালে যে ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে তার কেন্দ্র ছিল নরসিংদী জেলার মাধবদী এলাকায়। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, রিখটার স্কেলে পাঁচ দশমিক সাত মাত্রার এই ভূমিকম্প গত কয়েক দশকে দেশের ভেতরে উৎপত্তি হওয়া সবচেয়ে শক্তিশালী ছিল।

এর আগে সিলেট, নোয়াখালী অঞ্চলে ভূমিকম্পের উৎপত্তি হয়েছে। তবে ভূমিকম্পের কেন্দ্র ঢাকার আরও কাছে নরসিংদীতে।

ভূমিকম্প নিয়ে গবেষণা করেন এমন অনেকে বলছেন, এর আগে ঢাকার এত কাছে এই মাত্রার ভূমিকম্প উৎপত্তি হওয়ার ঘটনা ঘটেনি।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পূরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও ভূমিকম্প গবেষক মেহেদি আহমেদ আনসারী বলছেন, “বাংলাদেশের মধ্যে টেকটোনিক প্লেটের যে পাঁচটি সোর্স আছে তার মধ্যে নোয়াখালী থেকে শুরু করে কক্সবাজার, নোয়াখালী থেকে সিলেট এবং আরেকটি সিলেট থেকে ভারতের দিকে চলে গেছে”।

নোয়াখালী থেকে সিলেট, এই অংশে যে বড় ফাটল রয়েছে তারই একটি ছোট অংশ নরসিংদী, এর ফলে নরসিংদী এলাকায় ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল হওয়া অস্বাভাবিক নয় বলেও মনে করেন মি. আনসারী।

এটা আমাদের জন্য একটা সতর্কবার্তা: পরিবেশ উপদেষ্টা

“গত পাঁচ বছরে যতবার ভূমিকম্প হয়েছে এত শক্তিশালীভাবে ভূমিকম্প আমরা এর আগে অনুভব করিনি,” বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এটি বাংলাদেশের জন্য একটা সতর্কবার্তা বলেও মনে করেন তিনি।

শুক্রবার রাজধানীর মিরপুরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নতুন ভবনে বিল্ডিং কোড মানা হলেও যে ভবনগুলো আগে তৈরি করা সেগুলোর বেশিরভাগই কোনো নিয়ম না মেনে গড়ে তোলা হয়েছে।

“রাজউকের পরিসংখ্যানে ৯০ শতাংশ ভবন বিল্ডিং কোডের ব্যত্যয় ঘটিয়েছে বলে যে তথ্য দেয় সেগুলো নিয়ে কাজ করা প্রয়োজন,” বলেও মন্তব্য করেন মিজ হাসান।

উপদেষ্টা বলেন, সড়ক বা ভবন তৈরি করতে গিয়ে পরিবেশের যেন ক্ষতি না হয়। জলাশয় এবং পাহাড়ে আর হাত না দেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

‘বড় ভূমিকম্পের আগাম বার্তা’ মত বিশেষজ্ঞের

“বড় ভূমিকম্প আসার আগে ছোট ছোট ভূমিকম্প হয় এটি তার আগাম বার্তা,” এমনটা মনে করছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পূরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও ভূমিকম্প গবেষক মেহেদি আহমেদ আনসারী।

আনসারী বিবিসি বাংলাকে বলছেন, সাধারণত একশ থেকে দেড়শ বছর পরপর একটি অঞ্চলে বড় মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার শঙ্কা থাকে। বাংলাদেশ ও এর আশপাশের কাছাকাছি এলাকায় গত দেড়শ বছরে একটি বড় ও প্রায় পাঁচটি মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে।

বাংলাদেশের আশপাশে সবশেষ বড় ভূমিকম্প সংগঠিত হয়েছিল প্রায় একশ বছর আগে। তাই আরেকটি বড় ভূমিকম্প কাছাকাছি সময়ে হতে পারে এমন শঙ্কা রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

মি. আনসারী বলছেন, “বিল্ডিং কোড না মেনে ভবন তৈরি করলে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হবে এটিই স্বাভাবিক। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।”

বিশেষ করে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বড় শহরগুলোতে অপরিকল্পিতভাবে যে ভবনগুলো গড়ে তোলা হচ্ছে তাতে ক্ষয়ক্ষতির শঙ্কা বেড়েই চলেছে, বলেন তিনি।

ভূমিকম্পে শিশুসহ অন্তত চারজনের মৃত্যু

এ ঘটনায় ঢাকাসহ আশেপাশের এলাকায় অন্তত চারজন নিহত হয়েছেন। এছাড়াও আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ।

নিহতদের মধ্যে তিনজন ঢাকার বংশালের কসাইটুলিতে এবং একজন নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মারা যান।

পুলিশ জানিয়েছে, ভূমিকম্পের সময় আরমানিটোলার কসাইটুলি এলাকার একটি আটতলা তলা ভবনের পাশের দেয়াল এবং কার্নিশ থেকে ইট ও পলেস্তরা নিচে খসে পড়ে। এসময় ভবনের নিচে থাকা একটি গরুর মাংসের দোকানে থাকা ক্রেতা ও পথচারীরা আহত হন। ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই স্থানীয় লোকজন তাদের মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া আরও ১০ জন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

এদিকে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম বিবিসি নিউজ বাংলাকে জানান, ভূমিকম্প শুরু হলে ১০ মাস বয়সী ফাতেমাকে কোলে নিয়ে তার মা বাসা থেকে বেরিয়ে আসার সময় তাদের ওপর দেয়াল ধসে পড়ে। এতে শিশু ফাতেমা ঘটনাস্থলেই মারা যায় এবং তার মা আহত হন।

এছাড়াও খিলগাঁওয়ে নির্মাণাধীন ভবন থেকে পাশের দোতলা একটি বাসায় একটি ইট পড়ে একজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। বারিধারার একটি বাসায় এবংআগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট গেছে। তবে আগুনটি ভূমিকম্পের জন্য ছিল কি না তা জানা যায়নি বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস সূত্র। সূত্র: বিবিসি বাংলা

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়