ড. এমদাদুল হক : প্রিয় আত্মন, রুমি মসনবীতে লিখেছেনÑ লাইলীকে দেখে খলিফা বললেন- ‘তুমিই কি লাইলী? মজনু এমন দেওয়ানা তোমার জন্যই কি? অন্য সুন্দরীদের চেয়ে তুমি তো নও অধিক রূপসী’। লাইলী বললো, ‘খামোশ! যেহেতু তুমি মজনু নও’। রুমির কথা এখানেই শেষ। আর এখানেই তার মুন্সিয়ানা। তিনি কখনো কখনো নিগূঢ়তম ভাব ক্ষুদ্র আকারে প্রকাশ করেন, কখনো বা হালকা ভাব বৃহৎ আকারে প্রকাশ করেন। এখানে ‘খলিফা’ রূপকে বুঝানো হয়েছে রাজনৈতিক ইসলাম। লাইলী রূপকে বুঝানো হয়েছে আল্লাহ, প্রেমাস্পদ তথা প্রেমের ইসলাম। লাইলী (আল্লাহ) বলছেন- খামোশ!
রাজা। তুমি কী করে দেখবে, লাইলীর সৌন্দর্য? তোমার হৃদয়ে তো লাইলীর প্রতি প্রেম নেই। জিডিপি, বাজেট, রাজ্য শাসন, রাজ্য জয়, ক্ষমতার রাজনীতি, প্রাসাদ ষড়যন্ত্র, হেরেম নিয়ে ব্যস্ত তুমি! তুমি প্রেমের কী বুঝবে? খামোশ! রাজা। লাইলীর সৌন্দর্য নিয়ে প্রশ্ন করো না তুমি। লাইলীর সৌন্দর্য মজনুর জন্য সংরক্ষিত। মজনুর প্রয়োজন শুধু লায়লী। তোমার প্রয়োজন রাজত্ব। মজনু লায়লী ছাড়া আর কিছু চায় না। আর তোমার চাওয়া কখনো শেষ হয় না। অতএব, খামোশ। লায়লী বিষয়ে কথা বলো না তুমি। চুপ কর। লাইলীর প্রেম ছাড়া মজনুর প্রাণের তৃষ্ণা মেটানোর কেউ নেই। লাইলীর আশায় মজনু সর্বস্ব জলাঞ্জলি দিয়েছে- নিজেকে হারিয়ে, নিজেকে বিলিয়ে সে খুঁজে মরছে প্রাণের লায়লী। খামোশ রাজা। মজনু নও তুমি। তুমি কখনো দেখতে পাবে না লাইলীর রূপ। মনে রেখো। ‘আসমান ও জমিন আমাকে ধারণ করে না, আমাকে ধারণ করে প্রেমিকের হৃদয়’। প্রেম সকলের অগ্রগামী, আমি তার অনুগামী। অতএব, খামোশ। যেহেতু তুমি মজনু নও। ফেসবুক থেকে