শাহীন খন্দকার:[২] সন্ধ্যায় আসছিলাম ধানমন্ডির শুক্রাবাদ বাজারের পথধরে মেইন রোডে উঠতেই ধানমন্ডি ৩২ নম্বর লেকের দিকে চোখ পড়তেই বিস্ময়ে চোখ ছানাবড়া। ছোট্ট শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের নারী ও পুরুষ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসে আছে। হাত ধরে যুগলেরা হাটছে লাইটপোস্টের আলোতে সেলফি তুলছে, এসময় আনুমানিক ১৮ থেকে ২২ বছর বয়সের কয়েকজন কিশোর-কিশোরীকে গায়ে গা ঘেঁষে পথ চলতে দেখা গেল। তাদের কারও মুখেই মাস্ক নেই।
[৩] সদ্যকয়েক মাস হয়েছে ফুটফুটে শিশুকে কোলে নিয়ে ফুল বিক্রির কাজে ব্যাস্ত দেখাগেল তরুণীকে। সেই তরুণী মায়ের মুখেও মাস্ক নেই। অদূরে মোটরসাইকেলে বসে আড্ডারত দু’জন তরুণের মুখে মাস্ক থাকলেও তাদের অর্ধেকেরও বেশি মাস্ক খুলে কথা বলছিলেন।
[৪] রিক্সা যোগে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের সামনে থেকে শেখেরটেক পর্যন্ত আসতে রাস্তায় মানুষের ঢল দেখে মনে হয়েছে দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমনের কারনে প্রায় দুমাস আমরা কি লকডাউনে ছিলাম ! বিহারীমহল্লার সামনে মোস্তাকিমের কাবাব ঘরসহ কৃষি মার্কেট ,জাপানসিটির সামনে কয়েকজনের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেল, তাদের অধিকাংশই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে ঘুরতে এসেছেন।
[৫] করোনাভাইরাসের বিস্তাররোধে ঘোষিত ছুটি ও কড়াকড়িতে বাসায় বসে বসে ‘ আর তাদের ভালোলাগছে না’ একঘেঁয়েমি কাটাতেই তারা খোলা আকাশে চলে এসেছেন । অনেকে এসেছেন পরিবার-পরিজন নিয়ে, আবার অনেকে এসেছেন বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে দল বেঁধে। করোনাভাইরাসে দীর্ঘতর হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে রাজধানী এমন প্রশ্নে জানালেন, আমাদের কোভিড-১৯ আক্রমন করবে না। দূর্নীতিবাজ অসৎলোকদের এবং অসচেতন লোকদের জন্য করোনা অপেক্ষা করছে বলে জানালেন !
[৬] স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রতিদিনের বুলেটিনে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে মাস্ক পরা, কমপক্ষে তিন ফুট সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ নানা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথা বলা হচ্ছে। দেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরাও গণমাধ্যমে একই বিষয়ে তাগাদা দিচ্ছেন। বলছেন জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে না বেরোতে। প্রয়োজন পড়লে অবশ্যই মুখে মাস্ক ও হাতে গ্লাাভস পরার কথা বলছেন তারা।
[৭] কিন্ত রাজধানীর রাজপথে ও ঘোরাঘুরির স্পটগুলো দেখলে যে কারও মনে হবে, এসব পরামর্শ তোয়াক্কা করছেন না বেশিরভাগ মানুষই। বিশেষ করে উঠতি বয়সীদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারে খামখেয়ালি লক্ষ্য করা যাচ্ছে বেশি। ফলে করোনা ছড়াচ্ছে মারাত্মক হারে।
[৮] এদিকে সরকারের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ৩১ মে থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে সীমিত পরিসরে গণপরিবহন চালু এবং দোকান-পাট খুলে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যারা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন না তারা নিজেরা যেমন সংক্রমণের ঝুঁকিতে পড়তে পারেন, তেমনি ঝুঁকিতে ফেলতে পারেন ঘরের বয়োবৃদ্ধ-শিশুসহ স্বজনদের।