রাজু আলাউদ্দিন : [২] পথের পাশে বন্ধুর কোলে পড়ে রয়েছেন এক অসুস্থ যুবক। অসহায় বন্ধু সাহায্যের জন্য আর্জি জানাচ্ছেন আশপাশে। কিন্তু কেউ শুনছেন না। এমনই এক ছবি ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ভারতের মধ্যপ্রদেশের শিবপুরী জেলায় রাস্তার ধারে এমন এক হৃদয় বিদারক ঘটনা ঘটেছে। ওই যুবক ও তার বন্ধু দুজনেই পরিযায়ী শ্রমিক। তারা দীর্ঘ পথ পেরিয়ে উত্তরপ্রদেশে পৌঁছাতে চেয়েছিলেন। দেশজুড়ে লকডাউনের জেরে পরিযায়ী শ্রমিকদের দুরবস্থার ছবি আরও একবার প্রকট হয়ে উঠেছে এই ঘটনায়।
[৩] তাপপ্রবাহের আঘাতে শেষ পর্যন্ত এক হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ওই অসুস্থ পরিযায়ী শ্রমিকের। নিহত শ্রমিকের নাম অমৃত। তিনি সুরাতে এক বস্ত্র নির্মাণ কারখানায় কাজ করতেন। কাজ হারিয়ে গুজরাত থেকে উত্তরপ্রদেশে ফিরতে এক ট্রাকে উঠেছিলেন পরিযায়ী শ্রমিকদের এক দলের সঙ্গে। অমৃতের বাড়ি উত্তরপ্রদেশের বস্তিতে। ইন্দোরগামী ওই ট্রাকের পিছনে দাঁড়ানোর জায়গার জন্য ৪,০০০ টাকা নেয়া হয় তার কাছ থেকে। কিন্তু পথের মাঝেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর শিবপুরীতে তাকে ট্রাক থেকে নামিয়ে দেয়া হয়। বাকিরা কেউই তার সঙ্গে থাকেননি। কেবল মাত্র বন্ধু ইয়াকুব তার সঙ্গে ট্রাক থেকে নেমে আসেন।
[৪] ওই ছবিতে দেখা যায়, ইয়াকুব পথের ধারে বন্ধু অমৃতকে কোলে নিয়ে বসে আছেন। সকলের কাছে সাহায্যের আর্তি জানাচ্ছেন তিনি। কিন্তু কেউ শুনছেন না। এক স্থানীয় বাসিন্দা এমন মর্মস্পর্শী দৃশ্যের ছবি তুলে রাখেন। শিবপুরীর এক চিকিৎসক পিকে খাড়ে জানান, অমৃতের প্রচণ্ড জ্বর ছিল। সেই সঙ্গে বমি। তাপপ্রবাহের চোটে এ ধরনের সমস্যা হয়। তবে কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফলাফল এলে বিষয়টি পুরোপুরি পরিষ্কার হবে। ইয়াকুবকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে একটি জেলা হাসপাতালে। তার পরীক্ষার ফলাফল এখনও পাওয়া যায়নি বলে জানান এ ডাক্তার।
[৫] লকডাউনের সময়ে চাকরি হারিয়েছেন লাখ লাখ পরিযায়ী শ্রমিক। রাতারাতি রোজগার, বাসস্থান হারিয়ে ফেলার পর দীর্ঘ পথ পেরিয়ে নিজেদের বাড়িতে ফিরতে চেষ্টা করে করেন তারা।
[৬] বাড়ি ফেরার পথে পরিযায়ী শ্রমিকদের যেন খাদ্য, পানি ইত্যাদি সরবরাহ করে সরকার, এই বিষয়ে জমা পড়া পিটিশনকে শুক্রবার নাকচ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। জানিয়ে দেয়, আদালতের পক্ষে এটা পর্যবেক্ষণে রাখা অসম্ভব যে কে হাঁটছে, কে হাঁটছে না। শুনানিতে আদালত জানিয়েছে, রাজ্য সিদ্ধান্ত নিক। আদালত কেন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। ২টার সময় সংবাদ।
আপনার মতামত লিখুন :