শিরোনাম
◈ নির্বাচনী দায়িত্বে অপরাধের সাজা বাড়ছে: অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন ◈ দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত সম্পূর্ণভাবে পৃথক করলো সরকার ◈ অহেতুক চাপ সৃষ্টি করতে জামায়াতের কর্মসূচি: মির্জা ফখরুল ◈ জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে রাজপথে সাত দল ◈ স্ত্রী আসলেই নারী কি না প্রমাণ দেবেন ম্যাখোঁ ◈ আগামী বছরের বইমেলার সময় পরিবর্তন ◈ সৌদি-পাকিস্তান প্রতিরক্ষা চুক্তি, যা জানালো ভারত ◈ সরকারি কর্মচারীদের জন্য বড় সুখবর: অবসরে বাড়ছে সুযোগ-সুবিধা, কমছে অপেক্ষাকাল ◈ আগামীকাল ৮ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায় ◈ সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হামলায় যমুনা টিভির সাংবাদিকসহ আহত ৫

প্রকাশিত : ১৫ মে, ২০২০, ০৩:৩১ রাত
আপডেট : ১৫ মে, ২০২০, ০৩:৩১ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] সামাজিক দূরত্ব সহ স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করতে না পারার অভিযোগ উঠেছে

শাহীন খন্দকার :[২] দফায় দফায় সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়লেও গার্মেন্টস কারখানা এবং অনেক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান চালু করায় মানুষের ভিড়ে সামাজিক দূরত্ব সহ স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করতে না পারার অভিযোগ উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে লকডাউন ভেঙে পড়ায় সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়িয়ে কোন লাভ হচ্ছে কি না-এই প্রশ্নও তুলেছেন সর্বস্তরের মানুষেরা।

[৩] সরকার বলছে, তারা পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করছে। এছাড়া ঈদের সময় মানুষের যানবাহন চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার কথাও সরকার তুলে ধরছে। বাংলাদেশে ঈদে সাধারণত মানুষ ঘরমুখো হয়। দেশের মহাসড়কগুলোতে নামে মানুষের ঢল। ঢাকাসহ বড় শহরগুলো থেকে লক্ষ লক্ষ মানুষ গ্রামে ছুটে যান এবং আত্মীয়স্বজনের সাথে সময়টা কাটান। যুগ যুগ ধরে এই সংস্কৃতি চলে হয়ে আসছে।

[৪] কিন্তু এবার তাতে আঘাত হেনেছে করোনা সংক্রমনভাইরাস মহামারি। এখন ১৬ই মে পর্যন্ত ছুটি ছিল। সেই সাধারণ ছুটির মেয়াদ ঈদের পরে ৩০ শে মে পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হলো। একইসাথে ঈদের আগে এবং পরে সাত দিন সারাদেশে সড়ক এবং নৌপথে যাত্রীবাহী সব ধরণের যানবাহন চলাচলের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা থাকছে। এমনকি ঈদের সময় ব্যক্তিগত যানবাহনও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার কথা বলা হয়েছে। এমন প্রশ্নে কৃষি মার্কেট বিশাল চাউলের মার্কেটের মালিক ও শ্রমিকেরা জানালেন, যারা যে শহরে বা জেলায় আছেন, তারা ঈদের সময় অন্য জেলায় বা গ্রামের বাড়িতে যেতে পারবেন না। সেটাই সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আবার বলছে যে যেখানে আছে, সেখানে থেকেই ঈদ উদযাপন করবে।

[৫] আমরা দেখতে পাচ্ছি, তবে এর আগেই সাধারণ ছুটি অনেক ক্ষেত্রে শিথিল করে গার্মেন্টস কারখানা এবং দোকানসহ নানা ধরণের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান চালু করা হয়েছে। ঢাকাসহ সারাদেশেই দোকান বা মার্কেটে মানুষের ভিড় বাড়ছে। এই কর্মকাণ্ডে স্বাস্থ্যবিধি মানা কতটা সম্ভব হচ্ছে-তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রাজধানীর কৃষি মার্কেট দোকান মালিকদের সমিতির পক্ষ থেকেই বলা হয়েছে, সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করা এবং স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি মানা সম্ভব হচ্ছে না।

[৬] এদিকে বিভিন্ন এনজিওর মালিকেরা বলছেন, বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকির সাথে একইভাবে নিম্ন আয়ের ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবিকা বা পেটের তাগিদকে বিবেচনা করতে হবে। নি¤œ আয়ের বা দরিদ্র মানুষের বসবাসের জায়গায় এবং এমনকি বস্তিগুলোতে ঘরের উপরে ঘরে ঘিঞ্জি পরিবেশ, ফলে তাদের থাকার জায়গাতেই সামাজিক দূরত্ব মানা সম্ভব হয় না। তারা করোনাভাইরাসের ঝুঁকির মধ্যেই আছেন। এরপর তাদের অনাহারে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া ঠিক হবে না। এমন যুক্তি দিয়ে বিশ্লেষকদের অনেকে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সীমিত পরিসরে চালু রাখার পক্ষে অবস্থান তুলে ধরেন।

[৭] অবশ্য বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, সামাজিক দূরত্ব সহ স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয় নিশ্চিত করার পরই পরিকল্পনা করে ধাপে ধাপে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু করা উচিত ছিল। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে, কিন্তু দরিদ্র মানুষকে বাঁচাতে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সীমিত পরিসরে অব্যাহত রাখা ছাড়া বিকল্প নেই।

[৮] এদিকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের এমপি বলেছেন, "দারিদ্রসীমার নিচে এখনও ২০ভাগ মানুষ। অতি দরিদ্র প্রায় নয় ভাগ মানুষ। এই পরিপ্রেক্ষিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ একদিকে বাড়ছে এবং মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হযে পড়েছে। অন্যদিকে বিপুল সংখ্যক মানুষের জীবিকার প্রশ্ন। সরকারের জন্য উভয় সংকট। কতদিন আর এভাবে চালিয়ে নেয়া যাবে।"

[৯] তিনি আরও বলেছেন, "সার্বিক দিক বিবেচনা করে ন্যূনতম পর্যায়ে মানুষের কর্মকাণ্ডকে চলমান রাখা হচ্ছে। এভাবেই সরকার চালানোর চেষ্টা করবে। সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে তাতে কড়াকড়ি করা হবে। একইসাথে তিনি জানিয়েছেন, পরিস্থিতি এবং সংক্রমণের গতি নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বিশ্লেষণ করছেন এবং সেই বিশ্লেষণের ভিত্তিতে প্রয়োজন হলে লকডাউন আবারও কঠোর করার চিন্তাও সরকারের রয়েছে।

[১০] এদিকে, সরকারের রোগতত্ত¡, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড: এস এম আলমগীর বলেছেন, গত তিন চার দিনে করোনাভাইরাস সংক্রমণ হাজার ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এটা বাড়ছেই। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে সংক্রমণ কিন্তু বাড়বেই। এনিয়ে বিশ্লেষণ এবং আমাদের উদ্বেগ আমরা নিয়মিত সরকারের কাছে তুলে ধরছি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়