শিরোনাম
◈ কিছুটা কমেছে পেঁয়াজ ও সবজির দাম, বেড়েছে আলুর ◈ দেশের ৯২ শতাংশ মানুষ দ্বিতীয় কোনো ভাষা জানেন না, সময় এসেছে তৃতীয় ভাষার ◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫

প্রকাশিত : ০২ মে, ২০২০, ০৮:১৫ সকাল
আপডেট : ০২ মে, ২০২০, ০৮:১৫ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

‘হ্যাঁ, আমি আওয়ামী লীগের কবি’

দেশের জনপ্রিয় কবি নির্মলেন্দু গুণ ফেসবুকে একটি নাতিদীর্ঘ স্টেটাস দিয়েছেন। ’হ্যাঁ, আমি আওয়ামী লীগের কবি’ শিরোনামের লেখায় আওয়ামী লীগকে পছন্দ করার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি লিখেছেন, ’আমি তো আওয়ামী লীগের জন্য এসেট, নট লাইবিলিটি।’ লেখাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। পাঠকদের জন্য লেখাটি তুলে ধরা হলো।

’একটা জিনিস স্পষ্ট হওয়া দরকার। যদিও আমি সরাসরি আওয়ামী লীগ বা অন্য কোনো রাজনৈতিক দল করি না- কিন্তু আমি মূলত আওয়ামী লীগেরই কবি। আবার আমি মনে করি একই সঙ্গে আমি জনগণেরও কবি।

১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু যখন বাঙালির বাঁচার দাবি ৬ দফা ঘোষণা করলেন, তার পর থেকে আমি বঙ্গবন্ধু ও তাঁর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের পক্ষে গণজাগরণ সৃষ্টির লক্ষ্য নিয়েই কবিতা লিখিতে শুরু করেছিলাম। ১৯৬৬-২০২০, মানে গত ৫৪ বছর ধরে আমার কবিতা ও গদ্য রচনায় ওই মূল-ধারাটিই অদ্যাবধি অব্যাহত রয়েছে।

অনেক সময় আমি আত্মমগ্ন প্রেমের কবিতা, কামের কবিতা, প্রকৃতির কবিতা এবং সাম্যবাদী ধারার বেশ কিছু কবিতাও লিখেছি। সেই কবিতাগুলোকেও বাংলা কবিতার পাঠক "প্রিয়-কবিতা" হিসেবে গ্রহণ করেছেন এবং আমাকে প্রেমের কবিও বলেন। আমি চুপ করে থাকি।

আমি জানি আমি একইসঙ্গে রাজনৈতিক কবি এবং প্রেমের কবিও।

তবে রাজনৈতিক সংকট চলাকালে আমি বঙ্গবন্ধু ও তাঁর তৈরি করা দল আওয়ামী লীগকেই সমর্থন করে এসেছি। ১৯৯১ ছাড়া প্রতিটি নির্বাচনে আমি আওয়ামী লীগকেই ভোট দিয়েছি। এমনকি প্রার্থী হাজী সেলিম হলেও।

১৯৯১ এর সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ আমাকে নমিনেশন দেয়নি। তাতে কী?

মনের দুঃখে আমি বঙ্গকন্যাকে ত্যাগ করিনি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়েছি। পরাজিত হয়েছি। কিন্তু দলবদল করিনি। বঙ্গকন্যা এবং আওয়ামী লীগও আমাকে কখনও ত্যাগ করেনি। করবেও না। কেনইবা করবে? আমি তো আওয়ামী লীগের জন্য এসেট, নট লাইবিলিটি।

আওয়ামী লীগের বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠানে মূলত আমার কবিতাই পাঠ করা হয়। বঙ্গকন্যার কণ্ঠে আমার কবিতার আবৃত্তি শুনে আমি খুব খুশি হই। সম্মানিত বোধ করি। তিনি যখন জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে ১৯৭৫ পরবর্তী বাংলাদেশে আমার সংগ্রামী ভূমিকার জন্য আমাকে ধন্যবাদ জানান- তখন আমি খুশি হই।

আবার আমাকে স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদানে অহেতুক বিলম্ব করার জন্য বিরক্তি ও ক্ষোভ প্রকাশ করে ফেইসবুকে লিখেছিও। একটু বিলম্ব হলেও বঙ্গবন্ধুকন্যা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার দাবির যৌক্তিকতা অনুধাবন করে আমাকে পুরস্কৃত করেছেন। তাতে আমি খুশি হয়েছি, সম্মানিত বোধ করেছি।

এই বিষয়টি পরিষ্কার হওয়া দরকার, আমি জানি, বিশ্বাস করি- আমার কবিতার ঋণ আওয়ামীলীগ কখনও পরিশোধ করতে পারবে না; আবার আওয়ামী লীগের কাছ থেকে আমি যা পেয়েছি- যেমন বাংলাদেশের স্বাধীনতা, বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান, বঙ্গবন্ধুর খুনি এবং একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার- এইরকমের বিশাল প্রাপ্তির ঋণও আমি কখনও পরিশোধ করতে পারবো না।

আমি মনে করি আওয়ামীলীগ ও আমার সম্পর্কটা হচ্ছে ইতিহাস-নির্ধারিত। অনিবার্য।

আমি যে মাঝে-মাঝে আওয়ামীলীগের সমালোচনা করি- তাতে যারা খুশি হন, তারা কেন খুশি হন, আমি তা জানি। আমি তা বুঝি। তাদের প্রসংশায় পথভ্রষ্ট হওয়ার মতো পথভোলা কবি আমি নই, হে বন্ধুগণ। সরি মাই ফ্রেন্ডস।

আমি মনে করি আওয়ামী লীগ এবং বাংলাদেশের জনগণ দুই শিবিরে বিভক্ত নয়। বাংলাদেশের অধিকাংশ জনগণ আওয়ামীলীগের পক্ষেই আছেন।

আওয়ামী লীগ জনগণেরই প্রতিনিধিত্ব করে। আমিও আওয়ামীলীগের জন্মদাতা জাতির জনকের দলকেই সমর্থন করি।

আমার কাছ থেকে নিরপেক্ষ অবস্থান যারা আশা করে, তারা মতলববাজ। আমাকে আওয়ামীলীগের কবি বলে যারা খুশি হতে চান, আমাকে কোণঠাসা করা গেলো বা যাবে বলে ভাবেন-- তাদের স্বপ্নভঙ্গ করার জন্য আমি না থাকলেও, আমার বহু-বহু কবিতাই বেঁচে থাকবে।

প্রিয় কবি দোয়া করি আপনার জন্য বেঁচে থাকুন হাজার বছর । আমিন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়