মঞ্জুরে খোদা টোরিক : ভ্যানচালক, রিকশাচালক, দিনমজুরদের মাস্ক না পরার জন্য পেটাচ্ছেন। কান ধরে উঠবস করিয়ে অপমান, অসম্মান করছেন। কেন তারা গরিব সে কারণে? ১৯৭১ সালে তাদের বাপ-চাচাদের রক্তেই এ দেশ স্বাধীন হয়েছিলো। কোন আইনে তাদের অপমান করছেন, পেটাচ্ছেন? কোনো আইন অনুযায়ী নয়, বেআইনিভাবে পেটাচ্ছেন। সবাইকে মাস্ক দিয়েছেন, সবাইকে মাস্ক পরতে বলেছেন? তো পেটাচ্ছেন কেন? ‘গুজব’ কী? এই যে বেআইনিভাবে মানুষকে পিটিয়ে সমাজে অস্থিরতা তৈরি করছেন, বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেনÑ এটাই ‘গুজব’। আগের দিন উদ্ভট নোটিশ ইস্যু করে পরের দিন প্রত্যাহার করছেন। ডাক্তারদের বিষয়ে অভিযোগ করতে বলছেন পুলিশের কাছে। এতে ডাক্তাররা আতঙ্কিত হচ্ছেন। এটাই ‘গুজব’। ডাক্তারদের পিপিই পরছেন ইউএনওরা। তা নিয়ে ফেসবুকে লিখলে শিক্ষকদের বরখাস্ত করছেন। এর মাধ্যমে সমাজে অনায্যতা ও বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। এটাই ‘গুজব’। দেশের কোনো গণমাধ্যম করোনা ইস্যুতে গুজব ছড়ায়নি। সত্য জানানোর চেষ্টা করেছে। অথচ টেলিভিশন পর্যবেক্ষণ করাতে চাইলেন উপসচিবদের দিয়ে। তারা জানেন কোনটা গুজব আর কোনটা গুজব নয়? আপনারা-তারা মিলে গুজব তৈরি করছেন। আর যারা গুজবের বিপরীতে সত্য প্রচার করছে তাদের পর্যবেক্ষণে কমিটি করছেন। যারা সমাজে বিভ্রান্তি-গুজব ছড়ায়, তাদের দিয়েই গুজব ঠেকানোর কমিটি করছেন, প্রত্যাহার করছেন।
পাশের দেশ ভারতের দিকে তাকিয়ে দেখেন। ১ লাখ ৭০ হাজার কোটি রুপির করোনা তহবিল করেছেন নরেন্দ্র মোদী। করোনা চিকিৎসার সঙ্গে সম্পৃক্ত ডাক্তার-নার্স-কর্মীদের এক একজনের জন্য ৫০ লাখ রুপির বীমার ব্যবস্থা করা হয়েছে। গরিব মানুষ ৩ রুপি কেজি চাল ২ রুপি কেজি গম পাবে। ৮০ কোটি মানুষ এতে উপকৃত হবে। কৃষক, গরিব মানুষ, স্বল্প আয়ের চাকরিজীবীরা সরাসরি সহায়তা পাবে। আর আপনারা গুজব নিয়ে কমিটি করছেন, গরিব মানুষদের পেটাচ্ছেন। ডাক্তারদের পিপিই নিজেরা নিয়ে, পুলিশ দিয়ে ডাক্তারদের শায়েস্তা করতে চাইছেন। হযবরল অবস্থা। ১৬ কোটি মানুষের দেশ। আক্রান্ত দেশ থেকে কয়েক লাখ প্রবাসী দেশে এসেছেন। কে আক্রান্ত কে আক্রান্ত নয়, জানা-বোঝার উপায় নেই। এ পর্যন্ত ৯০০ জনকে পরীক্ষা করে সংখ্যা নির্ধারণ করছি। কোরিয়া প্রতিদিন পরীক্ষা করেছে ২০ হাজারের বেশি। জার্মানি গত সাত দিনে পরীক্ষা করেছে ৫ লাখের অধিক। দেশে আগে পরীক্ষার জায়গা ছিলো একটি, এখন দুটি বা তিনটি। আরও আট বা দশটি হবে। তা দিয়ে ১৬ কোটি মানুষের দেশে কতোজনকে পরীক্ষা করা সম্ভব? এখনো আমরা ‘হবে’ ‘নির্দেশ’ দেওয়া হয়েছে পর্যায়ে আছি। সাংবাদিক গোলাম মোর্তজার নোট। ফেসবুক থেকে