মাজহারুল ইসলাম : [২] চীনের বেইজিংয়ের পেকিং বিশ্ববিদ্যালয়, সাংহাই বিশ্ববিদ্যালয় এবং চাইনিজ একাডেমি অব সায়েন্সেস-এর গবেষকদের গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে। বেইজিং ও সাংহাইয়ের বিশেষজ্ঞ দল বলছেন, আক্রান্তদের প্রায় ৭০ শতাংশই সংক্রমিত হয়েছেন এই ভাইরাসের আক্রমণাত্মক ধরনটিতে।
[৩] এভাবে ধরন বদলানোর কারণে ভাইরাসটির চিকিৎসা অথবা শনাক্তকরণ কঠিন হতে পারে। একই সঙ্গে আক্রান্ত হওয়ার পর যারা সুস্থ হয়েছেন, তাদের পুনরায় এই ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পেয়েছে। গবেষকরা ১০৩টি নমুনার ওপর গবেষণা চালিয়ে করোনাভাইরাসের রূপান্তরের ধরন নিশ্চিত হয়েছেন। তারা এই জিনের নাম দিয়েছেন সার্স-কোভ-২। এই ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট রোগ কোভিড-১৯ এ গবেষকরা ২টি প্রজাতি পেয়েছেন। যার নাম দেয়া হয়েছে এল এবং এস। তবে এ ব্যাপারে আরও গবেষণা দরকার বলে জানিয়েছেন তারা।
[৪] বিজ্ঞানীদের দাবি, আক্রান্তদের প্রায় ৭০ শতাংশই এল প্রজাতি দ্বারা সংক্রমিত। যা এস-এর চেয়ে আক্রমণাত্মক এবং দ্রæতগতিতে বিস্তার ঘটায়। প্রাদুর্ভাব শুরুর পর করোনার এল প্রজাতিটি বেশি সংক্রমণ ঘটালেও জানুয়ারি থেকে এল প্রজাতির দ্রæত বিস্তার ঘটতে থাকে।
[৫] বিজ্ঞানীরা বলছেন, এস প্রজাতিটি বিবর্তনগত দিক থেকে পুরোনো এবং কম আক্রমণাত্মক। বৈশিষ্টগতভাবে দুর্বল হলেও এই প্রজাতিটি পুনরায় সংক্রমণ বৃদ্ধি করতে পারে। এল প্রজাতিটির সংক্রমণের মাত্রা শুরুর দিকে বেশি ছিলো। অসুস্থরা তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে যান। যে কারণে প্রজাতিটি ব্যাপকমাত্রায় বিস্তার ঘটানোর কম সুযোগ পেয়েছে।
[৬] তবে ভাইরাসটি মানুষকে গুরুতর অসুস্থ করলেও সংক্রমিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একেবারে বিছানায় পড়ে যাওয়া কিংবা তাৎক্ষণিকভাবে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা কম। এটি কাশি ও হাঁচির মাধ্যমে বিস্তার ঘটায়। তাই এমন রোগীর কাছ থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
[৭] চীনা বিজ্ঞানীদের এই গবেষণায় বলা হয়েছে, বেশি সংখ্যক মানুষকে সংক্রমিত করতে না পারলে একটি নির্ধারিত সময়ের পর ভাইরাসটি মারা যায় অথবা বেঁচে থাকার জন্য ধরন পাল্টে ফেলে। আর এই ধরন পাল্টে ফেলার সঙ্গে সঙ্গে এটি আরও শক্তিশালী হয়ে বিস্তার ঘটাতে থাকে। কিন্তু এস প্রজাতিটি দুর্বল ধাঁচের হওয়ায় সংক্রমিত ব্যক্তির শরীরে লক্ষণ প্রকাশ পেতে দীর্ঘ সময় লাগে। এই সুযোগে প্রজাতিটি ব্যাপক সংখ্যক মানুষের মাঝে বিস্তার ঘটানোর ঝুঁকি তৈরি করে।