যুগান্তর : [২] ভারতে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে সমর্থক ও বিরোধীদের সংঘর্ষে অগ্নিগর্ভ রূপ নিয়েছিল দিল্লি। তবে পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। দাঙ্গাকবলিত এলাকাগুলোতে মুসলিম-হিন্দুদের মাঝে আস্থা-বিশ্বাস ও শান্তি ফিরিয়ে আনতে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার। এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।
[৩]মূলত দিল্লির সহিংসতার ঘটনায় ধ্বংস আর মৃত্যুর বিভীষিকার পাশাপাশি কিছু মানবতার গল্পও রয়েছে, যা তেমন একটা মিডিয়ার দৃষ্টি কাড়েনি। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আর মানবিকতার সেই গল্পগুলোই এখন আশার আলো হয়ে দাঁড়িয়েছে। দাঙ্গার সময় অনেক হিন্দু প্রতিবেশী মুসলমানদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। অনেকের জীবন বাঁচিয়েছেন। অনেক মুসলিমও হিন্দুদের জীবন বাঁচিয়েছেন।
[৪]অশান্ত দিল্লিতে একজন হিন্দু মেয়ের বিয়ে হয়েছে মুসলিমদের পাহারায়। মুসলিম ও হিন্দুদের এই সম্প্রীতিই প্রমাণ করে দ্রুতই আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে দিল্লি। দিল্লির সংঘাত কবলিত এলাকাগুলোতে শান্তি ফিরিয়ে আনতে সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য- তদন্তের জন্য দুটি বিশেষ কমিটি গঠন করেছে দিল্লি পুলিশ। উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে পুলিশের পাশাপাশি প্রায় ৭ হাজার প্যারা মিলিটারি বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের মাঝে আস্থা ও বিশ্বাস তৈরির লক্ষ্যে পুলিশ শান্তি কমিটির বৈঠক অব্যাহত রেখেছে।
[৫]এ পর্যন্ত প্রায় ৩৩০টি বৈঠক হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত এ ধরনের বৈঠক চলবে। পূর্ব দিল্লি পৌরসভা কর্পোরেশন দাঙ্গাকবলিত এলাকার সড়ক পরিষ্কার ও ক্ষতিগ্রস্ত জনসম্পদ সংস্কারে কাজ শুরু করেছে। কোথাও কোনো গুজব না ছড়াতেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সহিংসতার ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য নিহত এবং অন্তত ৭০ জন আহত হয়েছেন। আহত পুলিশ সদস্যদের পর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা হয়েছে। সংঘর্ষ, প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনায় ৪৮টির বেশি এফআইআর করা হয়েছে। ৫১৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
[৬]জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বলছেন, আরও বেশি গ্রেফতার করতে গেলে তদন্ত প্রক্রিয়া ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এদিকে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো রকম গুজবে কান না দিতে জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। দিল্লির ২০৩টি থানার মধ্যে মাত্র ১২টি থানায় এ সহিংসতার আঁচ লেগেছে। ফলে অপর থানাগুলোতে স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে।
আপনার মতামত লিখুন :