সালেহ্ বিপ্লব : [২] স্থায়ীভাবে সংরক্ষণ ও গবেষণাসেবার জন্য বহুল আলোচিত পিলখানা হত্যা মামলায় হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো: আবু জাফর সিদ্দিকীর মাতৃভাষা বাংলায় লেখা ১৬,৫৫২ পৃষ্ঠার ঐতিহাসিক রায়ের অনুলিপি এবার জাতীয় আর্কাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তরে হস্তান্তর করেছে দেশের সর্বোচ আদালত সুপ্রীম কোর্ট।
[৩] গবেষনামুলক ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণ, ব্যবস্থাপনা এবং সঠিক তাপমাত্রায় পরিচর্যার মাধ্যমে স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের লক্ষ্যে জাতীয় আরকাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তরের লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে আজ বুধবার দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে ৩৩টি ভলিউমে রায়ের কপি হস্তান্তর করেন সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রীম কোর্ট কর্তৃপক্ষ। সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন এই অধিদপ্তরে তা ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ মামলার নথি হিসাবে সংরক্ষণ, ব্যবস্থাপনা এবং পরিচর্যা ও গবেষণাসেবা প্রদান করে দর্শনার্থীদের জন্য সংরক্ষণ করা হবে।
[৪] প্রসঙ্গত: এর আগে গত ১০ ফেব্রুয়ারি পিলখানা হত্যা মামলার (নম্বর ৫৮/২০১৩) ডেথ রেফারেন্স ও আপীলের পূর্ণাঙ্গ রায়ে বিশেষ বেঞ্চের বিচারপতি মো: আবু জাফর সিদ্দিকীর মাতৃভাষা বাংলায় লেখা ১৬,৫৫২ পৃষ্ঠার রায়ের অনুলিপি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. জীনাত ইমতিয়াজ আলী এবং পরদিন ১১ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী নিকট হস্তান্তর করা হয়।
[৫] বিচারপতি মো: আবু জাফর সিদ্দিকীর মাতৃভাষা বাংলায় লেখা রায়ের পর্যবেক্ষণের অনুলিপি হস্তান্তরকালে সুপ্রীম কোর্টের মুখপাত্র মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, বিচারপতি মো: আবু জাফর সিদ্দিকীর ২৭ লাখ ৯০ হাজার ৪৬৮ শব্দে বাংলায় লিখিত সর্ববৃহৎ ও যুগান্তকারী রায় এটি। গবেষকদের সাহায্য করতে তাৎপর্যপূর্ণ এ রায়ে প্রচুর গবেষণামূলক তথ্য রয়েছে। যা জাতির সঠিক ইতিহাস জানতে চমৎকার সহায়ক হবে। তিনি জানান, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি জাতীয় আরকাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফরিদ আহমদ ভূঁইয়া মাতৃভাষা বাংলায় লেখা পিলখানা হত্যা মামলার রায়ের কপি জাতীয় আরকাইভসে স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের জন্য সুপ্রীম কোর্টের রেজিষ্ট্রার জেনারেল বরাবর একটি চিঠি দেন। সে আলোকে সুপ্রীম কোর্টের মাননীয় প্রধান বিচারপতির অনুমোদনক্রমে আজ বাংলায় লেখা রায়ের পর্যবেক্ষণের অনুলিপি হস্তান্তর করা হল।
[৬] রায়ের ভলিউমগুলি হাতে পেয়ে তার প্রতিক্রিয়ায় জাতীয় আরকাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো: আলী আকবর বলেন, জাতীয় আরকাইভস অধ্যাদেশ ১৯৮৩ এর ৯(২)(ডি) ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশ জাতীয় আরকাইভস দেশের সরকারি, আধাসরকারি এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান সমুহের ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণসম্পন্ন দলিলপত্র, রেকর্ড/নথিপত্র, গুরুত্বপূর্ণ মামলার নথি, প্রকাশনা, ছবি, ম্যাপ, পোষ্টার ইত্যাদি সংগ্রহ, সংরক্ষণ, ব্যবস্থাপনা এবং পরিচর্যা ও গবেষণাসেবা প্রদান করে। জাতীয় আরকাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ফরিদ আহমদ ভূঁইয়া মাননীয় বিচারপতি মো: আবু জাফর সিদ্দিকীর মাতৃভাষা বাংলায় লেখা ১৬,৫৫২ পৃষ্ঠার রায়ের ঐতিহাসিক তাৎপর্য ও গুরুত্ব অনুধাবন করে গবেষণা ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য রায়ের অনুলিপি জাতীয় আরকাইভসে স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের এ উদ্যাগ গ্রহণ করেন।
[৭] ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের অফিসিয়াল ওয়েব সাইট (www.supremecourt.gov.bd)-তে তিন বিচারপতির দেওয়া ২৯,০৫৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ও প্রকাশিত হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :