সাইদ রিপন: নিখুত ও গুণগত মান ঠিক করেই জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। পরিসংখ্যান বিশ্বমানের পর্যায়ে নিয়ে যাবো। আমাদের পরিসংখ্যান নিয়ে এর আগে নানা প্রশ্ন উঠেছে। তবে এবার জনশুমারি ও গৃহগণনা নিয়ে কোন প্রশ্ন থাকবে না চমৎকার ফল আসবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
‘জনশুমারি ও গৃহণনা ২০২১’ প্রকল্প ঢাকা বিভাগে সফল করতে সংশ্লিষ্ট কর্ম কর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) নগরীরর শেরে বাংলানগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপত্বিতে বিবিএস মহাপরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রকল্প পরিচালক মো. জাহিদুল হক সরদারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।।
জনশুমারি প্রসঙ্গে এম এ মান্নান বলেন, আমাদের নিজের প্রয়োজনেই নিখুত শুমারি করতে হবে। জনশুমারি অবশ্যই নিখুত হতে হবে। দেশের উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণে নিখুত পরিকল্পনার কোন বিকল্প নেই। আমার বিশ্বাস এবার চমৎকার একটা শুমারি হবে।চমৎকার একটা ফলও পাবো। ‘
মন্ত্রী আরো বলেন, মুজিব বর্ষে জনশুমারি হবে এটা আমাদের জন্য আনন্দের। অন্যদিকে আমাদের দায়িত্ব অনেক বেড়ে গেছে। মুজিব বর্ষে নিখুত একটা শুমারি আমাদের উপহার দিতে হবে। আমাদের কাজটি ভালো হতে হবে। আমরা এটা নিয়ে অনেক উৎফুল্ল হবে।’
মাঠকর্মী নিয়োগ প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সবার নিজের অবস্থান থেকেই কাজ করতে হবে। যারা মাঠকর্মী আছেন তাদের দ্রুত সময়ে টাকা পরিশোধ করতে হবে। এবার শুনলাম চারগুণ বেশি টাকা দেয়া হবে এতে তরুণ মাঠকর্মীদের জন্য ভালো হবে। ‘
প্রকল্প সঠিকভাবে বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে এম এ মান্নান বলেন, প্রকল্প সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রকল্পের কেনাকাটাও সঠিকভাবে করতে হবে। কোন বিষয়ে যেন প্রশ্নের সম্মুখিন না হই।’
বিবিএস সচিব সৌরেন্দ্রনাথ চক্রবর্ত্তী বলেন, এবার জনশুমারি হবে চমৎকার। বিদেশে কতজন বাংলাদেশী আছে, দেশে কতজন বিদেশি আছি সবই গণনা করা হবে। আমরা শুমারির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যা চেয়েছি তাই পেয়েছি। আশা করি সবার সহযোগিতায় একটা চমৎকার শুমারি উপহার দিতে পারবো।’
মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে প্রকল্প পরিচালক মো. জাহিদুল হক সরদার বলেন, খানা তালিকা প্রস্তুতের জন্য প্রথম বারের মতো এ শুমারিতে মূল শুমারিতে মূল শুমারির পূর্বে লিস্টিং অপারেশন পরিচালনা করা হবে এবং প্রতিটি খানার জন্য একটা ইউনিক হাউজহোল্ড আইডি দেয়া হবে। শুমারির কভারেজ বৃদ্ধির জন্য জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী অর্থাৎহবে ১৬ মার্চ থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে ৬৪টি জেলায় ডিজিটাল ডিসপ্লের মাধ্যমে ক্ষণগণনা শুরু করা হবে। দেশব্যাপী শুমারির মূল গণনা কার্যক্রম ২ থেকে ৮ জানুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত সাতদিন পরিচালিত হবে। ষষ্ঠ জনশুমারিতে কেউ বাদ যাবে না। প্রবাসী ও দেশে অবস্থানরত বিদেশিদের গণনা করা হবে। একইসঙ্গে জনশুমারিতে স্মরণ করা হবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীকে স্মরণীয় করে রাখার উদ্দেশে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ২০২১ সালের ১৭ মার্চ রাত ১২টাকে শুমারি মুহূর্ত ধরে পরবর্তী সাতদিন জনশুমারি ও গৃহগণনা করা হবে। ২০২১ এর মাঠ পর্যায়ে মূল শুমারির তথ্যসংগ্রহ কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ষষ্ঠ জনশুমারি ও গৃহগণনার ৩৬৫ দিনের কাউন্ট ডাউন শুরু করা হবে। প্রকল্পের মোট ব্যয় ১ হাজার ৭৬১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।
‘পপুলেশন অ্যান্ড হাউজিং সেনশাস ২০২১’ প্রকল্পের আওতায় ষষ্ঠ জনশুমারি অনুষ্ঠিত হবে। স্যাটেলাইট ইমেজের মাধ্যমে ২০২১ সালে ষষ্ঠ ডিজিটাল জনশুমারি করা হবে। এ পদ্ধতিতে দেশের একটি থানাও বাদ পড়বে না। স্যাটেলাইট ইমেজ দেখে জনশুমারিতে সারাদেশে চার লাখ গণনাকারী তথ্য সংগ্রহ করবেন। শিক্ষিত বেকারদের জনশুমারি প্রকল্পে কাজ করার সুযোগ দেওয়া হবে। এরআগে প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষকদের জনশুমারির কাজে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তবে এবার তাদের অংশগ্রহণের সুযোগ থাকছে না। সাতদিনে চার কোটি থানায় (পরিবার) তথ্য সংগ্রহ করা হবে। একজন গণনাকারী ১০০টি থানার তথ্য সংগ্রহ করবেন। ফলে তারা এক সপ্তাহে ভালো টাকা আয় করতে পারবেন।
প্রথমবারের মতো মাল্টিমোড পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। মাল্টিমোডের মধ্যে রয়েছে, মোবাইল অ্যাপ, ওয়েব অ্যাপ, ড্রপ অ্যান্ড পিক, পেপার বেইজড, কল সেন্টার ইত্যাদি। এর মাধ্যমে দেশে প্রথমবারের মতো সীমিত আকারে ই-সেন্সাস পরিচালনা করা হবে। ই-সেন্সাসে যারা তথ্য দিতে আগ্রহী তারা হাউজ হোল্ডের আইডি দিয়ে তথ্য দিতে হবে। তবে কেউ যদি ই-সেন্সাসে জনশুমারির তথ্য দিতে না চায় তাহলে বিবিএস’র কর্মীরা প্রশ্নপত্র নিয়ে ফরম পূরণ করে আনবে