পূর্বাভাস বিষয়ক প্রতিবেদন জানুয়ারিতেই প্রকাশ করে আইএমএফ। পূর্বের প্রতিবেদনে বৈশ্বিক জিডিপির সার্বিক উন্নতি ৩ দশমিক ৪ শতাংশের অনুমান করেছিলো সংস্থাটি। সর্বশেষ কয়েকটি উদীয়মান দেশের বাজারে আশানুরূপ বিকাশের গতি দেখা না যাওয়ায় তা কমিয়ে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ করেছে ওয়াশিংটনভিত্তিক সংস্থাটি। উদীয়মান বাজারের ভেতর সবচেয়ে খারাপ ফলাফল অনুমান করা হচ্ছে ভারতে, অন্যদিকে চীনের প্রবৃদ্ধির হার আগের প্রতিবেদনের চাইতেও দশমিক ২ শতাংশ পয়েন্ট বাড়িয়ে ৬ শতাংশ হবে এমন অনুমান করা হয়।
নূর মাজিদ: গত সোমবার ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক’ প্রতিবেদনটির সর্বশেষ সংশোধনী প্রকাশ করা হয়। বিশ্বের সরকারি এবং বেসরকারিখাতের মোট উৎপাদন প্রবৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক বিকাশের পরিবর্তিত অবস্থা অনুমান করার প্রয়াস নেয়া হয় এখানে। সংশোধিত পূর্বাভাসে বিশ্ব অর্থনীতির বেশ কয়েকটি অবস্থান আলোচনায় গুরুত্ব পায়। সিএনবিসি, সিএনএন, ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।
বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির উত্তরণ ও ভারতের পতন : বাণিজ্যযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বিশ্ব অর্থনীতির গতি যেভাবে কমে এসেছিলো বছরের প্রথম প্রতিবেদনে সেটা থামার আশা করা হয়। সেসময় ৩ দশমিক ৪ মাত্রার জিডিপি প্রবৃদ্ধির অনুমান করা হলেও, তা সর্বশেষ নামিয়ে আনা হয়েছে ৩ দশমিক ৩-এ। এর জন্য প্রধানত ভারতীয় বিকাশের নিম্নমুখী প্রবণতাকেই দায়ী করা হয়। এশিয়ার তৃতীয় বৃহৎ অর্থনীতি চলতি বছর ৫ দশমিক ৮ শতাংশ হারে বাড়বে। গত অক্টোবরের আইএমএফ পূর্বাভাস থেকে এর পরিমাণ ১ দশমিক ২ শতাংশ কম। এই অবস্থা তৈরির পেছনে দেশটির আর্থিকখাতের বিদ্যমান দূরাবস্থাকেই চিহ্নিত দায়ী করছে আইএমএফ।
চীনের উন্নতি : চলতি বছর শেষে চীনের সার্বিক প্রবৃদ্ধি দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে মোট ৬ শতাংশে উন্নীত হওয়ার পেছনে প্রধান অবদান যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মাঝে স¤পাদিত প্রথমদফার বাণিজ্যচুক্তি। বাণিজ্যিক আস্থা বাড়ার কারণে এই সময় চীনে নতুন বিনিয়োগের মাত্রা যেমন বাড়বে ঠিক তেমনি নীতিমালা শিথিল করায় বৈদেশিক পুঁজি সঞ্চালনের মাত্রাও বাড়বে চীনা অর্থনীতিতে। সবমিলিয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ অর্থনীতির জন্য চলতি বছর স্থিতিশীল বিকাশের গতি পূর্বানুমান করা হচ্ছে।
মার্কিন বিকাশের সংশোধিত অবস্থান : চলতি বছর বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতি ২ শতাংশ পয়েন্ট হারে বাড়ার অনুমান করা হচ্ছে। এটা পূর্ব ঘোষিত অবস্থানের চাইতে দশমিক ১ শতাংশ কম। ন্যাটওয়েস্ট বিষয়ক বাজার বিষয়ক বিশ্লেষক সংস্থার কৌশলবিদ ম্যাক্স লিন বলেন, মূলত যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদনখাত গতি হারানোর কারণেই আইএমএফ সংশোধনীতে অর্থনীতি স¤প্রসারণের গতি কমিয়েছে। এছাড়াও, আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ঘিরে যে কোনো রাজনৈতিক অচলাবস্থা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে, এমন অনুমানও করা হয়েছে।
বেড়েছে ইউরো জোনের উত্তরণ : ইউরো জোনের সকল অর্থনীতি মিলিয়ে সার্বিক ১ দশমিক ৩ শতাংশ বিকাশের অনুমান করা হচ্ছে। এটা অক্টোবরের চাইতে দশমিক ১ শতাংশ বেশি। ইউরো জোনে জার্মানির জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ১ দশমিক ১ শতাংশ। ফ্রান্স, ইতালি এবং ¯েপনের ক্ষেত্রে যা যথাক্রমে ১ দশমিক ৩, দশমিক ৫ এবং ১ দশমিক ৬ শতাংশ হবে। গত অক্টোবরে ইউরো জোনে ১ দশমিক ২ শতাংশের অনুমান করা হয়। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান