মুনশি জাকির হোসেন : ঘুমন্ত মানুষকে জাগিয়ে তোলা সম্ভব, ঘুমানোর ভাণ করলে আপনি কীভাবে জাগিয়ে তুলবেন? বাউলের মুক্তি চেয়ে লাভ কী? প্রশাসন তার মুক্তি দেবে, সেটি আজ অথবা কাল দেবে, এই সপ্তাহে না দিক আগামী সপ্তাহে দেবে, মাঝখানে প্রশাসন যে সিগনাল দিতে চাচ্ছে সেটি দেয়া হলেই তার মুক্তি মিলবে। প্রশাসন মূলত ইসলামিক হওয়ার অপচেষ্টা করছে, এই অপচেষ্টা যতোদিন জারি থাকবে ততোদিন হয় এই বয়াতি আটক হবে, না হয় চিশতি বয়াতি, না হয় অমুক/তমুক বয়াতির চুল কেটে দেয়া হবে। বয়াতির মুক্তির থেকে প্রশাসনের মাথায় যে ধর্মের ভূত আছে সেটি ঝাঁড়ফুঁক দিয়ে নামা বেশি জরুরি। ব্লগার কোপানো, বাউলের চুল কাটা, বয়াতিকে ধরে জেলে পুরা, এগুলোকে মূলত বলে তাওয়া গরম ছিলো, অমুক এসে পরের তেলে মাছ ভেজে নিয়ে গেছে কিসিমের কর্ম, কার্য, কারণ/করণ/ফলাফল।
পাকিস্তানে কথিত কোরআন অবমাননা/পোড়ানো ধুয়া তুলে নন-মুসলিমকে আগুনে পোড়ানো হয়, বঙ্গদেশে দুই পাতা আরবি লেখা কাগজ যদি কোনো নন-মুসলিম পোড়ায় তাহলে সেটি কোরআন পোড়া বলে চালিয়ে দিয়ে তা-ব চালা একটি রুটিন কাজের মতোই সহজ কাজ। অথচ এই দেশে হেফাজত তা-ব চালিয়ে হাজার হাজার কপি কোরআন/ধর্মীয় গ্রন্থ পেড়ালেও সেখানে ধর্মীয় অনুভূতিতে সুরসুরি লাগে না। ভারতে গরুর মাংস বিক্রির অপরাধে মানুষ হত্যা হয়, মানুষ কোপানোর বিচার হয় না।
যদি সেখানে ধর্মের আবরণ থাকে। এখানেও এই একই অপচেষ্টা, গণমানুষের রাষ্ট্র যেখানে গরু রাষ্ট্র হতে মরিয়া সেখানে মৌলিক সমস্যার উৎপাটনের পরিবর্তে প্রতিদিন রুটিন করে নিত্য নিত্য সমস্যার পয়দা হবে এটিই চিরন্তর সত্য। ধর্মীয় অপরাধ কোনো অপরাধ নয়, সেখানে ৭১’র হত্যা, ধর্ষণ, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, মসজিদ-মন্দিরের নামে জমি দখল, সংখ্যালঘুর সম্পত্তি, সম্পদ দখল, এগুলোকে অপরাধ মনে করতে হলে ধার্মিক হওয়ার থেকে মানুষ হওয়া বেশি জরুরি। অবশ্য মানুষ না হয়ে কীভাবে ধার্মিক হওয়া যায় সেটিও বোধগম্য নয়। ধর্মের প্রয়োজনে মানুষ? নাকি মানুষের প্রয়োজনে ধর্ম? এখানেই বোঝা যাবে কে মানুষ, কে অমানুষ, কে ঊনমানুষ, কে উপমানব। ফেসবুক থেকে