ইমরুল শাহেদ : চলচ্চিত্রের গান সাধারণত লেখা হয়ে থাকে চরিত্র ও ছবির ঘটনাকে অনুসরণ করে। এর ব্যতিক্রম হলেই সে গান আর চলচ্চিত্রের থাকে না। কিন্তু এর ব্যত্যয়ও আছে। গীতিকবি নিজস্ব আবেগতাড়িত হয়ে যে গান লেখেন, যা চরিত্র বা ঘটনা সম্পৃক্ত নয় তেমন গানও চলচ্চিত্রে ব্যবহার হয়েছে। তেমন দুটি গান পরিচালক অশোক ঘোষ নাচের পুতুল ছবিতে ব্যবহার করেছেন, ‘আয়নাতে ওই মুখ দেখবে যখন, কপলেরও কালো টিপ পড়বে চোখে’।
বাবুল চৌধুরী পরিচালিত যে আগুনে পুড়ি ছবির ‘চোখ যে মনের কথা বলে’। নাচের পুতুলের গানটি রমনা পার্কে বাদাম চিবুতে চিবুতে সৃষ্টি হয়েছে। সে সময় সঙ্গীত পরিচালক রবিব ঘোষের প্রেম চলছিল শবনমের সঙ্গে। রবিন ঘোষ এবং গীতিকবি কেজি মোস্তফা ছিলেন অন্তরঙ্গ বন্ধু। তারা দুজন একদিন বাদাম নিয়ে রমনা পার্কের একটি গাছের নিচে বসেন। তাদের গবেষণার বিষয় ছিল শবনম। তিনি এখন কী করছেন? আচ্ছা শবনম যদি কপালে কালো টিপ পরেন, তাহলে তাকে কেমন দেখাবে ইত্যাদি। কিন্তু কবি এই আলোচনাটা নিজের মধ্যে ধারণ করে তাৎক্ষণিকভাবে গানটি লিখে ফেলেন। পরে গানটি নাচের পুতুলে ব্যবহার হয় এবং ছবিটির মহরতও হয় পার্কের সেই গাছ তলাতেই।
অপর গানটি লিখেছেন চিত্রনাট্যকার, কবি ও সহকারী পরিচালক কাজী আজিজ। তাকে বাবুল চৌধুরী বলেছিলেন সুচন্দাকে চিত্রনাট্য অনুসারে চরিত্র বুঝিয়ে দিতে। তারা দুজন আলাদাভাবে বসেন। কথার মাঝখানে হঠাৎ কাজী আজিজের চোখ গিয়ে পড়ে সুচন্দার ড্যাবা ড্যাবা চোখের ওপর। তিনি সুচন্দার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকেন। সুচন্দার কথাতেই তার সম্বিৎ ফিরে আসে। তিনি চরিত্র বুঝানোর পরিবর্তে কাগজে লেখেন চোখ যে মনের কথা বলে, চোখে চোখ রাখা শুধু নয়। ব্যাস - এ পর্যন্তই। পরে সঙ্গীত পরিচালক খোন্দকার নুরুল আলমের অণুপ্রেরণায় গানটি শেষ করা হয় এবং ছবিতে ব্যবহারের জন্য ঘটনা তৈরি করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :