শিরোনাম
◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামে জুতার কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ১২ ইউনিট ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ১২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ০৩:২৩ রাত
আপডেট : ১২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ০৩:২৩ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে উত্তাল আসামে কারফিউ, ত্রিপুরায় ইন্টারনেট ও মোবাইল বন্ধ

আসিফুজ্জামান পৃথিল : মোট ৫ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে উত্তর পূর্বাঞ্চলের এই দুই রাজ্যে। এরমধ্যে ২ হাজার বিক্ষোভ দমনে অভিজ্ঞ সৈনিককে উড়িয়ে আনা হয়েছে কাশ্মীর থেকে। ত্রিপুরার দুটি এলাকা কাঞ্চনপুর ও মনু এবং আসামের বাইঙ্গনে মোতায়েন হয়েছেন এই সেনাসদস্যরা।

মঙ্গলবার ত্রিপুরা সরকার ৪৮ ঘণ্টার জন্য রাজ্যে মোবাইল ইন্টারনেট ও এসএমএস পরিষেবা বন্ধ করে দেয়। সেপাহিজালায় এক দুইমাসের অসুস্থ শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তা অবরোধ করা হলে শিশুটি মারা যায়। এক প্রভাবশালী ছাত্র সংগঠন বনধ ডেকেছিলো এই বিলের প্রতিবাদে। প্রতিবাদকারীদের দাবি, এই বিল পাস হওয়াটা বিপজ্জনক। তাদের মতে, এই বিল পাস হলেই বাংলাদেশ থেকে বহু মানুষ এই রাজ্যে ঢুকে পড়বেন। আসামের গুয়াহাটি সহ উত্তর-প‚র্বের বিভিন্ন জায়গার জনজীবন থমকে যায়, বিলের প্রতিবাদে উত্তর-প‚র্বাঞ্চলের ছাত্র সংগঠনের তরফে বনধ ডাকা হয়। ম‚ল রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদে সামিল হন বিক্ষোভকারীরা, উত্তর-প‚র্ব ফ্রন্টিয়ার রেলের পওক্ষ জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অবরোধ করার কারণে, বহু ট্রেন বাতিল করা হয়েছে।

সোমবার সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিলটি উত্থাপন করেন। ক্ষমতাসীন দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় বিলটি পাসে কোনো বেগ পেতে হয়নি তাদের। আজ বুধবার সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি (সিএবি) পেশ করা হয়। এখানে পাস হলে তা আইনে পরিণত হবে।

আসামের গোহাটিসহ বিভিন্ন স্থানে বিলের প্রতিবাদে উত্তর-পূর্বের ছাত্র সংগঠনের পক্ষে বনধ্ ডাকা হয়। মূল রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবাদে শামিল হন বিক্ষোভকারীর। স্থানীয় রেল কর্তৃপক্ষ বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, অবরোধের কারণে অনেক ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। বন্ধ রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যাংক ও বাজার।

এনডিটিভি জানিয়েছে, আসাম ও ত্রিপুরায় ৫ হাজার সেনা পাঠানো হয়েছে। বিক্ষোভ সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রেখেছে সেনাবাহিনীর সদর দফতর। সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বলেন, ‘ইতোমধ্যে সেনা সদস্যদের পাঠানো হয়েছে। তারা পুলিশ ও প্রশাসনকে সহায়তা করবে। শান্তি বজায় রাখতে সেনাবাহিনী ওইসব এলাকায় ফ্ল্যাগ মার্চ করবে।’

উত্তর ত্রিপুরায় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ১০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছে পুলিশ। ওই এলাকার আতঙ্কিত অন্য জাতির বাসিন্দারা বাড়ি ফিরতে না পেরে থানায় এসে আশ্রয় নেন। স্থানীয় একটি স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে ৭০টি পরিবার। তাদের বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার হুমকি দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা।

বিলের প্রতিবাদে মিছিলে অংশ নেন গোহাটি মেডিকেল কলেজ ও আসাম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজসহ বেশির ভাগ কলেজের শিক্ষার্থীরা। গোহাটি-শিলং সড়ক অবরোধ করেছেন তারা। ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানেগ্যাস ছুড়েছে পুলিশ। এছাড়া পুলিশের লাঠিতে আহত হয়েছেন বেশকিছু শিক্ষার্থী।

বিক্ষোভের কারণে ডিব্রুগড় ও গোহাটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যাবতীয় পরীক্ষা অর্নির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে। উত্তর ত্রিপুরায় বেশকিছু দোকানে অগ্নিসংযোগ করে বিক্ষোভকারীরা। এছাড়া আগরতলা শহরের উত্তর গেট এলাকায় বিক্ষোভকারীরা অবরোধে নামেন। পুলিশ শতাধিক অবরোধকারীকে গ্রেফতার করেছে।

এদিকে ত্রিপুরায় মোবাইল ইন্টারনেট ও এসএমএস পরিষেবা আগামী ৪৮ ঘণ্টার জন্য বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। দক্ষিণ ত্রিপুরার সিপাহিজলায় বিক্ষোভকারীরা রাস্তা অবরোধ করে রাখায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে দুই বছর বয়সী একটি অসুস্থ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

বুধবার সকাল থেকেই আসাম ও ত্রিপুরার বিক্ষোভকারীরা বিভিন্ন রাজ্যের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়ক ও রেললাইন অবরোধ করে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষোভের তেজ বাড়তে থাকে। নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে তারা ইটপাটকেল, পেট্রলবোমা ছুড়তে শুরু করে।

২০১৫ সালের আগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং আফগানিস্তান থেকে আসা অমুসলিম নাগরিকদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে এই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে। দেশের স্বনামধন্য ব্যক্তি, আন্দোলনকারী এবং বিরোধী রাজনৈতিক নেতানেত্রীরা অতি সত্ত্বর এই বিল প্রত্যাহারের দাবি তুলেছেন এবং একে পক্ষপাতদুষ্ট বলে মন্তব্য করেছেন তারা।

তবে বিজেপি সভাপতি ও মোদি সরকারের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘোষণা করেছেন যে, প্রস্তাবিত আইন থেকে উত্তর-পূর্বের অনেকটা অংশই বাদ দেয়া হবে। কিন্তু বিক্ষোভকারীদের দাবি, এর ফলে এসব এলাকায় প্রচুর অবৈধ অনুপ্রবেশকারী ঢুকে পড়বে।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা, এনডিটিভি, দ্য হিন্দু, হিন্দুস্তান টাইমস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়