নুরুল করিম আরমান, লামা : বান্দরবানের লামা উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির সামগ্রিক উন্নতি হয়েছে। উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে চলা মাতামুহুরী নদীর পানি নেমে যাওয়ায় শুক্রবার ভোর রাতে প্লাবিত এলাকা থেকে দ্রুত গতিতে পানি কমে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। সকাল থেকে ঘরে ফিরতে শুরু করেছেন নিরাপদ আশ্রয়ে থাকা মানুষজন। তবে পানি কমার পর রাস্তাঘাট ও ঘরবাড়িগুলোতে জলকাদায় ভরে থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা। এদিকে এক দিন বন্ধ থাকার পর উপজেলা সদরের সঙ্গে ইউনিয়ন ও সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়। তবে বন্যায় ও পাহাড় ধসে ছয় শতাধিক ঘরবাড়ী, দোকানপাঠ, সরকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ফসল ও মাছ চাষের ক্ষতি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছেন।
শুক্রবার সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, যারা বাড়ি-ঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে তারা পানি নেমে যাওয়ার পর পর নিজ ঘর বাসযোগ্য করার জন্য কাজ শুরু করছেন। বাজারের ব্যবসায়ীরা পুনরায় মালামাল দোকানে তুলতে দেখা যায়। তবে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে রয়েছেন নুনারঝিরি দু পাড়ের বাসিন্দারা। ঝিরিটি অপরিকল্পিতভাবে খননের কারণে দু পাড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে, কিছু কিছু এলাকায় ভেঙেও পড়েছে। সেই সাথে এ ঝিরির ওপর স্থাপিত বেশ কয়েকটি ব্রিজ, কালভার্টের নিচ ও পাশ থেকে মাটি সরে দেবে গেছে। ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের বড়ছন খোলা এলাকার ব্রিজটিও স্রোতের টানে দেবে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে ওইসব হাজারো মানুষ দুর্ভোগে পড়েন। এদিকে উপজেলার বেশ কয়েকটি মৎস খামার ও অর্ধশত একর ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানান কৃষি বিভাগ।
বন্যা পরিস্থিতির সামগ্রিক উন্নতির সত্যতা নিশ্চিত করে লামা পৌরসভা মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম জানান, আশ্রিতরা ঘরে ফিরে গেছে। তবে কয়েকদিনের ভারি বর্ষণের কারণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে প্রাথমিকভাবে পৌরসভা এলাকার ৫০০ ঘরবাড়ি, দেড় শতাধিক দোকানপাঠ ও সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়। একই সময় বিভিন্ন স্থানে ৮০টির মত বসতঘরের ওপর পাহাড় ধসে পড়ে সম্পূর্ণ ও আংশিক ক্ষতি হয়েছে।
লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ-জান্নাত রুমি বলেন, শুক্রবার ভোর থেকে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি দেখা দেয়। কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টিপাতে ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে উপজেলায় ঘরবাড়ি, রাস্তা ঘাট, কালভাট ব্রিজ, সব্জি ও মাছ চাষের ক্ষতি হয়েছে। সম্পাদনা : মিঠুন রাকসাম