শাহীন খন্দকার : আত্মবিশ্বাস আর নিজ পরিশ্রমে ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিয়েছেন বরিশালের মেয়ে নাজমা বেগম। তিনি গত ৩০ বছর ধরে রাজধানীতে রিকশা-সাইকেল মেকানিক হিসেবে কাজ করছেন। প্রতিদিন সেবা দিচ্ছে গ্রাহকদের। বতর্মানে আবহনী মাঠের পশ্চিম পাশের ফুটপাতে গেলেই দেখা মেলে এই ব্যস্ত মেকানিকের।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় রাজধানী ঢাকাতে সব থেকে বেশী রিকশা চলাচল করে থাকে। রাজধানীতে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা বেশী রিকশা ব্যবহার করেন। বন্ধের দিনও রিক্সার চলাচল বেশ লক্ষণীয়। আজকাল নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং মধ্যবিত্তদেরওএইবাহন-ই একমাত্র ভরসা। আজ সমাজের প্রতিটিক্ষেত্রে নারীর অবদান সত্যি দৃষ্টান্ত এবং নারীরাই এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে দেশের উন্নয়নে দেশকে। সেখানে একজন দক্ষ রিক্সা মিস্ত্রী হিসেবে কাজ করছেন বরিশালের মেয়ে নাজমা বেগম(৪৫)।
নাজমা বেগম বলেন, রাজধানী জুড়েই আমার অসংখ্য সাগরেদ।শুধু তাই নয় আমার স্বামী আব্দুর রহমানও কিন্ত আমারই সাগরেদ! তিনি নিজের কাজ প্রসঙ্গে জানান, হতদরিদ্র ঘরের মেয়ে নাজমা অন্য-বস্ত্রের সন্ধানে সেই শিশু বয়স থেকেই অন্যের বাসা বাড়ীতে কাজ করে যখন কলাবাগানের বস্তিতে ফিরতেন, সেই সময়ে রাস্তায় দাড়িয়ে পুরুষ রিক্সা সাইকেল মেকারদের কাজ দেখতেন এক কোণে দাড়িয়ে দেখতেন কি করে রিক্সা-সাইকেল মিস্ত্রি কাজ করছে! আর তিনি মনে মনে পরিকল্পনা করতেন অন্যের বাড়ীতে ঝিয়ের কাজ না করে কি করে রিক্সা-সাইকেলের মিস্ত্রী হওয়া যায়! সেই আত্মবিশ্বাস আর পরিশ্রম আজ নাজমা বেগমকে করে তুলেছে একজন সফল সাইকেল-রিক্সা মিস্ত্রী হিসেবে। তিনি অক্লান্ত পরিশ্রমের মধ্যদিয়ে তার অভাবকে করেছেন আজ জয়।
তিনি রিক্সা-সাইকেল মেরামতের কঠিন কাজটি করছেন গত ৩০ বছর ধরে। তিনি পাল্টে দিয়েছেন পুরুষতান্ত্রিক সমাজের পেশাবৃর্ত্তিকে। রিক্সা মেকার নাজমা বেগম তার জীবনের শুরুতে ল্যাবএইড হাসপাতালে সামনে রিক্সা-সাইকেল মেরামতের কাজ শুরু করেন, এক ভাইয়ের কাছথেকে ২০০০ টাকাধার দেনা করে যন্ত্রপাতি ক্রয় করেন।স্বামী এক সময় তাকে সহযোগিতা না করলেও, এখন তার স্বামীও তাকে কাজে সহযোগিতা করছেন। ছেলে মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন এই রিক্সা মেকারের কাজ করেই। বর্তমানে তার প্রতিদিন আয় ২ হাজার টাকা থেকে ৩ হাজার টাকাও ছাড়িয়ে যায় বলে জানান তিনি। সরকারের নিকট তার দাবি দরিদ্র মেয়েদের ট্রেনিং দিয়ে এভাবেই যদি পুনর্বাসন করতেন তাহলে দেশে কেউ গরীব থাকিতো না বলে দাবি করেন নাজমা বেগম। তিনি সরকারের নিকট উদারত্ব আহ্বান জানিয়ে বলেন, হাতের কাজের প্রশিক্ষনের মাধ্যমে হত দরিদ্রদের ভাগ্যের চাকাই ঘুরে যাবে না, ঘুরে যাবে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা এই দেশে-ই ভীনদেশের মানুষেরা কর্মের সন্ধানে আসিবে বাংলাদেশের মাটিতে।