নিউজ ডেস্ক : টানা আট মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে জাল ফেললেও ইলিশ মিলছে না। ৩০ জুন রাত ১২টার পর নদীতে জাল ফেললেও গতকাল সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত শূন্য হাতেই ফেরত আসতে হয়েছে জেলেদের। সাগরে ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা থাকায় এখানকার মোকামে মাছের সংকট প্রকট আকার ধারণ করছে। সাগরের মোহনায় ঝুঁকি নিয়ে যারা জাল ফেলেছেন, তাতে সামান্য ইলিশের দেখা মেলছে। গতকাল সাগরের মোহনা থেকে সাতটি ট্রলার প্রায় ৬০ মণ ইলিশ নিয়ে পোর্ট রোডের মোকামে এসেছে বলে জানা গেছে। বিগত বছরগুলোতে পোর্ট রোডের মোকামের আড়তগুলোতে দিন শেষে ২ হাজার মণ ইলিশ বেচাকেনা হতো। চলতি বছর ভরা ইলিশ মৌসুমে গত এক সপ্তাহ ধরে সাগরের মোহনায় যে ইলিশ মিলছে, তা চাহিদার তুলনায় অতি সামান্য। বরিশাল মত্স্য আড়তদার সমিতির প্রচার সম্পাদক ইলিশ ব্যবসায়ী ইয়ার উদ্দিন সিকদার জানান, তার আড়তে নদী থেকে প্রায় শূন্য হাতে ফেরত আসছেন জেলেরা। তিনি জানান, গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে তারা আশা করেছিলেন ইলিশ মিলবে, কিন্তু নদী থেকে জেলেরা শূন্য ট্রলারে ফিরছেন। অপর আড়তগুলোর মালিকেরা জানান, তাদের আড়তে একশ থেকে দেড়শ মনের স্থলে ইলিশ মিলছে মাত্র ১০ মণ। এতে করে একেকটি আড়তের প্রায় ৩০ জন শ্রমিক বেকার জীবন যাপন করছেন। -ইত্তেফাক
সাগরের মোহনা থেকে ইলিশ নিয়ে আসা জেলেরা জানান, ভরা মৌসুমে সাগরের মোহনায় ইলিশ মিলছে। কিন্তু সাগরের মধ্যে নিষেধাজ্ঞা থাকায় তারা যেতে পারছেন না, তাই মাছও মিলছে না। সরকার সাগরে ইলিশ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দিলেও পাশের দেশ ভারতের জেলেদের কিন্তু সাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকবে না। আমাদের দেশের নিষেধাজ্ঞার সুবিধাটা তারাই ভোগ করবেন। এই নিষেধাজ্ঞার সুযোগে ভারতীয় জেলেরা অত্যাধুনিক ফিশিং ট্রলার দিয়ে আমাদের ইলিশ নিয়ে যাচ্ছেন। এতে করে গত মৌসুমের চেয়ে এই মৌসুমে ইলিশের আহরণ কমবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
ভরা মৌসুমে এখানকার নদীগুলোতে ইলিশ না মেলায় অভাব-অনটন আর অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটছে জেলেদের। দাদনদারদের দেনা তো দূরের কথা, ট্রলার খরচই উঠছে না। এমন অবস্থা চলতে থাকলে জেলেদের ট্রলার-জাল বিক্রি করে অন্য পেশায় ফিরে যেতে হবে বলে একাধিক জেলে জানান। জেলে ইউসুফ জানান, বছরের বেশির ভাগ সময়ই বেকার কাটাতে হয়।
ইলিশ ব্যবসায়ী, দাদনদার ও জেলেরা জানান, ইলিশ নিষেধাজ্ঞা মৌসুমে কঠোর নজরদারি না থাকায় হাজার হাজার মণ মা-ইলিশ ও জাটকা ইলিশ অসাধু জেলে ও ব্যবসায়ীরা পাচার করেছেন। হাজার হাজার মণ ইলিশ প্রশাসন আটক করলেও ইলিশ পাচার রোধ করা সম্ভব হয়নি। তাই ভরা মৌসুমে ইলিশের সংকট দেখা দিয়েছে বলে তাদের মতামত। তারা নিষেধাজ্ঞা মৌসুমে কঠোর নজরদারির দাবি জানিয়েছেন।
মত্স্য অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় উপপরিচালক ড. মো. অলিউর রহমান জানান, বৃষ্টি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নদ-নদীতে ইলিশ পাওয়া যাবে।
এএস/টিই
আপনার মতামত লিখুন :