মাসুদ আলম: বাবা আব্দুল কাইয়ুমের কাছে লেদ মেশিনের দোকানের ভাড়া পাওনা ছিল হারুনের। তা না পেয়ে দোকানের ভেতরেই মারধর করা হয় ১৪ বছরের ছেলে সাইফুর রহমান সাইফকে। এ সময় লেদ মেশিনে পড়ে নিহত হয় ছেলেটি। বাবার কাছে পাওনা মাত্র একমাসের ভাড়ার জন্য মাদ্রাসাছাত্র ছেলেকে হত্যার ঘটনাটি গাজীপুরের টঙ্গী থানার মাছিমপুর এলাকার।
র্যাব-১ এর হাতে হত্যা মামলাটির প্রধান আসামি হারুন অর রশিদকে গ্রেপ্তারের পর তারই স্বীকারোক্তিতে রোহমর্ষক এ খুনের ঘটনার বিস্তারিত জানা গেছে। রোববার রাতে টঙ্গী ঘাপরিয়া মাদ্রাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব-১ জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন সান প্রোপারটিজ নামক একটি ভবন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধিকারী হারুন।
নিহত সাইফ চার ভাই-বোনের মধ্যে সবার বড়। সে উত্তরা ৯নং সেক্টরের এমদাদুল উলুম মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র ছিল।
র্যাব-১ এর সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. কামরুজ্জামান জানান, সাইফের বাবা আব্দুল কাইয়ুমের ‘নিউ মা ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ' নামক লেদ মেশিনের দোকান রয়েছে। ওয়ার্কশপটি স্থানীয় হারুন অর রশিদের কাছ থেকে ভাড়া নেন কাইয়ূম। প্রতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে আগের মাসের ভাড়া পরিশোধ করার কথা ছিল। কিন্তু কাইয়ূম গত মে মাসের ভাড়া সময়মতো দিতে পারেননি। হারুন ভাড়া পরিশোধে তাগাদা দিলেও ব্যর্থ হন কাইয়ূম।
গত শনিবার সকালে আব্দুল কাইয়ুম ছেলে সাইফকে দোকান খুলতে বলে ভাড়ার টাকা যোগাড়ে পরিচিত আত্মীয়দের কাছে যান। বেলা ১১টায় হারুন ৫/৬ জন সহযোগী নিয়ে ভাড়া তুলতে আসেন। এ সময় ভাড়ার টাকা না পেয়ে দোকানের সাটার বন্ধ করে দেন তিনি। হারুন চলে যাওয়ার পর ফের দোকান খোলা হয়। বিষয়টি জানতে পেরে হারুন ও তার সহযোগীরা দোকানে ফিরে গিয়ে কাইয়ূমকে না পেয়ে সাইফকে মারধর করেন। মারধরের সময় চলন্ত লেদ মেশিনে পড়ে গেলে তারা সাইফকে ভেতরে রেখেই বাইরে থেকে দোকানের সাটার বন্ধ করে পালিয়ে যান। পরে শব্দ পেয়ে পাশের দোকানদার ও স্থানীয়রা দোকানের ভেতরে গিয়ে সাইফকে লেদ মেশিনের সঙ্গে প্যাঁচানো অবস্থায় দেখতে পান। সেখান থেকে উদ্ধার করে টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাইফকে মৃত ঘোষণা করেন।
সম্পাদনা: অশোকেশ রায়
আপনার মতামত লিখুন :